নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বক্তাবলী ফেরিঘাট থেকে যাত্রীবাহী একটি মাইক্রোবাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বুড়িগঙ্গা নদীতে পড়ে ডুবে গেছে। এসময় ওই মাইক্রোতে থাকা এক প্রবাসীর শিশু সন্তানসহ স্ত্রী আহত হয়েছেন।
তাৎক্ষণিক আশপাশের লোকজন ডুবে যাওয়া মাইক্রোবাস থেকে আহত মা ও শিশুটিকে দ্রুত উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দিয়েছে। তবে আহতদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।
রোববার (১৬ মে) সকাল দশটায় সদর উপজেলার ফতুল্লা থানাধীন বক্তাবলী ফেরিঘাটে এ দুর্ঘটনাটি ঘটলেও বিকেলে সি সি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে নৌ-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গিয়ে ডুবে যাওয়া মাইক্রোবাসটিকে উদ্ধারের চেষ্টা শুরু করেন।
মাইক্রোবাসের মালিক শাহীন মিয়া জানান, তার বাড়ি বক্তাবলীর প্রসন্ননগর গ্রামে। তার গাড়িটি ভাড়ায় চলে। সকালে প্রসন্ননগরের এক নারী তার বিদেশ ফেরত স্বামীকে এয়ারপোর্ট থেকে আনতে গাড়িটি ভাড়া করেন। সকাল দশটায় গাড়ির চালক সাদেক ওই নারী ও তার শিশু সন্তানকে নিয়ে এয়ারপোর্টের উদ্দেশে প্রসন্ননগর থেকে রওনা করেন। মাইক্রোবাসটি বক্তাবলী ফেরিঘাটে পৌঁছালে থামিয়ে ফেরির জন্য অপেক্ষা করছিলেন চালক। তখন শিশুসহ ওই নারী গাড়ির ভেতরে বসে ছিলেন এবং চালক সাদেক গাড়ির বাহিরে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
মাইক্রোবাসের মালিক শাহীন মিয়া আরো জানান, এক পর্যায়ে মাইক্রোবাসটি ব্রেক ফেল করলে উঁচু সড়ক থেকে দ্রুত ফেরির দিকে চলে যেতে থাকে। এসময় চালক সাদেক গাড়ির পেছনে দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে চিৎকার করতে থাকে। এতে আশপাশের লোকজন বিষয়টি বুঝতে পেরে দ্রুত ফেরিঘাটে ছুটে আসলেও মাইক্রোবাসটি নদীতে পড়ে তলিয়ে যায়। এসময় এলাকাবাসি লাফিয়ে নদীতে নেমে শিশুসহ নারীকে গাড়ির ভেতর থেকে উদ্ধার করে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেন। তবে তারা তেমন গুরুতর আহত হয়নি। নারীর নাম পরিচয় জানা যায়নি বলে জানান গাড়ির মালিক শাহীন মিয়া।
ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রকিবুজ্জামান জানান, গাড়িটি নদীতে ডুবে আছে। তবে এর ভেতর কোনো যাত্রী মানুষ ছিল না এবং কোনো হতাহতের খবর পাইনি। ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল গাড়িটি নদী থেকে উদ্ধারের চেস্টা চালাচ্ছে।
এ ব্যাপারে ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের নারায়ণগঞ্জ জেলা উপ-পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন বলেন, সিসি টিভির ভিডিও ফুটেজ দেখে আমাদের ডুবুরি দল নদীতে তলিয়ে যাওয়া মাইক্রোবাসটি শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। সন্ধ্যায় তারা কয়েকটি রশি দিয়ে গাড়িটি বেঁধে উত্তোলনের পর্যায়ে নিয়ে আসে। এরপর বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ গাড়িটি তোলার জন্য ক্রেন পাঠালে সেটি দিয়ে উত্তোলন কাজ শুরু হয়। তবে গাড়ির ভেতরে কোনো মানুষ না থাকায় এবং কেউ নিখোঁজ নেই বলে আমাদের টিম তাদের কাজ শেষ করে সন্ধ্যার পর ঘটনাস্থল থেকে চলে আসে। রাত সাড়ে আটটায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মাইক্রোবাসটি ক্রেন দিয়ে উদ্ধার কাজ চলছে।