ঢাকা: ঘরের একজন যদি আয় করে সবাই না করলেও কি ঘরের অন্য সদস্যরা না খেয়ে থাকে, উত্তরে আসল না। ঠিক তেমনি আমাদের কেবলা বাবাজান ইবাদত করে আমাদের আর করার দরকার কি? তিনি করলেই তো আমরা পাই। এই কথা গুলো দেয়ানবাগী ভন্ডপীরের একজন মুরীদের কথা। গত সপ্তাহে জুম্মার নামাযের সময় এক মুরিদকে জিজ্ঞেস করা হল নামায পড়বেন কি তার উত্তরে ভন্ডপীরের মুরিদ এ কথা গুলো বলেন। বেশী কিছু না বলে মূল বক্তব্য চলে আসি। ভন্ড পীর দেওয়ানবাগীর ভন্ডামীর কিছু তথ্য প্রমাণাদি সহ উপস্থাপন করব যাতে করে মুসলমানরা তার ভন্ডামী সমপর্কে জানতে পারে, সতেচন হয় এবং তাকে প্রতিহত করে। এই ভন্ড পীর দেওয়ানবাগীর নাম মাহবুব এ খোদা। সর্বস্তরে দেওয়ানবাগী নামে পরিচিত। জন্ম ২৭ শে অগ্রহায়ন ১৩৫৬ বাংলা মোতাবেক ১৪ ই ডিসেম্বর ১৯৪৯ ইংরেজী। জন্মস্থান ব্রাক্ষনবাড়ীয়া জেলার আশুগঞ্জ থানাধীন বাহাদুরপুর গ্রামে। পিতা সৈয়দ আব্দুর রশিদ সরদার। মাতা জোবেদা খাতুন। ছয় ভাই দুই বোন। ভাইদের মধ্যে সর্ব কনিষ্ঠ। নিজ এলাকার তাল শহর কারিমীয়া আলীয়া মাদ্রাসা থেকে ফাজেল পযন্ত পরাশুনা করে ছাত্রজীবনের ইতি টানে। ১৯৭১ সালে দেওয়ানবাগী মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেন। স্বাধীনতার পর তাঁর ৩ নং সেক্টরের কমান্ডার শফিউল্লাহ সাহেবের সুপারিশে সেনাবাহিনীর ১৫ নং বেঙ্গল রেজিমেন্টে ইমামতির চাকুরী নেয়। ফরিদপুরের চন্দ্রপাড়া দরবারের প্রতিষ্ঠাতা আবুল ফজল সুলতান আহমদ চন্দ্রপুরীর হাতে বাইয়াত গ্রহন করেন। পড়ে স্বীয় মুর্শিদের কন্যা হামিদা বেগমকে বিয়ে করেন। এ সুবাদে শশুরের কাছ থেকে খিলাফত লাভ করেন। এর কিছুদিন পর নারায়নগঞ্জের দেওয়ানবাগ নামক স্থানে আস্তানা গঠন করেন এবং নিজেকে “সুফী সম্রাট” হিসেবে পরিচয় দিয়ে শোহরত লাভ করতে থাকেন। এরপর তিনি মতিঝিলের ১৪৭ আরামবাগ ঢাকা-১০০০ তে “বাবে রহমত” নামে আরেকটি দরবান স্থাপন করেন। এখান থেকে তাঁর তত্ত্বাবধানে এবং নির্দেশে বাবে রহমত মূখপত্র “আৱার বাণী” সহ বেশ কয়েকটি মাসিক পত্রিকা ও গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। বর্তমানে ফার্মগেট এলাকায় তার আস্তানা।
দেওয়ানবাগীর কিছু আকিদা ও উক্তি সমূহঃ
“আমার অসংখ্য মুরিদান স্বপ্ন ও কাশফের মাধ্যেমে আল্লাহর দীদার লাভ করেছে। আমার স্ত্রী হামিদা বেগম ও আমার কন্যা তাহমিনা এ খোদা স্বপ্নের মাধ্যেমে আল্লাহকে দাড়ী গোঁফ বিহীন যুবকের ন্যায় দেখতে পায়”। সূত্রঃ আল্লাহ কোন পথেঃ ২৩ । শুধু আমি নই,আমার স্ত্রী কন্যা সহ লক্ষ্য লক্ষ্য মুরিদানও আল্লাহকে দেখেছেন। সূত্রঃ সপ্তাহিক দেওয়ানবাগ। “দেওয়ানবাগে আল্লাহ ও সমস্ত নবী রাসূল, ফেরেস্তারা মিছিল করে এবং আল্লাহ নিজে শ্লোগান দেন” সূত্রঃ সপ্তাহিক দেওয়ানবাগ, মার্চ ১৯৯৯ ইং। “আমি এক ভিন্ন ধর্মের লোককে ওজীফা ও আমল বাতলে দিলাম, কয়দিন পর ঐ বিধর্মী স্বপ্ন যোগে মদিনায় গেল। নবীজির হাতে হাত মিলালো। নিজের সর্বাঙ্গে জিকির অনুভব করতে লাগলো। তারপর থেকে ঐ বিধর্মী প্রত্যেক কাজেই অন্তরে আল্লাহর নির্দেশ পেয়ে থাকে। সূত্রঃ মানতের নির্দেশিকাঃ ২৩ সুফী ফাউন্ডেশনঃ ১৪৭ আরামবাগ, ঢাকা। কোন লোক যখন নফসীর মাকামে গিয়ে পৌছেঁ, তখন তার আর কোন ইবাদাৎ লাগেনা। সুত্রঃ আল্লাহ কোন পথে, পৃঃ ৯০। জিব্রাইল বলতে আর কেউ নন, স্বয়ং আল্লাহ-ই জিব্রাইল। সুত্রঃ মাসিক আৱার বানী, ৫ম বর্ষ ১ম সংখ্যাঃ ২১। “সূর্যোদয় পর্যন- সাহরী খাওয়ার সময়, সুভে-সাদেক অর্থ প্রবাতকাল। হুজুরেরা ঘুমানোর জন্য তারাতারী আযান দিয়ে দেয়। আপনি কিন’ খাওয়া বন্ধ করবেন না। আযান দিয়েছে নামাযের জন্য, খাবার বন্ধের জন্য আযান দেওয়া হয় না। সুত্রঃ আৱারবানী,সংখ্যাঃ নভেম্বর ৯৯ পৃঃ ৯। “মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হায়াতে জিন্দেগীকে পুলসিরাত বলা হয়। সুত্রঃ আল্লাহ কোন পথে, তৃতীয় সংস্করনঃ ৬০। “আল্লাহ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার ফলে আৱা এক বিচ্ছেদ যাতনা ভোগ করতে থাকে, প্রভুর পরিচয় নিজের মাঝে না পাওয়া অবস্থায় মৃত্যু হলে সে বেঈমান হয়ে কবরে যাবে। তখন তার আত্তা এমন এক অবস্থায় আটকে পড়ে যে, পূনরায় আল্লাহর সাথে মিলনের পথ খুজেঁ পায়না। আর তা আত্তার জন্য কঠিন যন্ত্রনাদায়ক। আৱার এইরূপ চিরস্থায়ী যন্ত্রনাদায়ক অবস্থাকেই জাহান্নাম বা দোযখ বলা হয়। সুত্রঃ আল্লাহ কোন পথেঃ ৪৪। “দেওয়ানবাগী নিজেকে ইমাম মাহদী দাবী করেন, অতঃপর দরূদে মাহদী রচনা করেন। দরূদে মাহদীঃ “আল্লাহুম্মাহ ছাল্লীআলা সাইয়্যিদিনা মুহাম্মাদিউ ওয়ালা আলা ইমাম মাহদী রাহমাতল্লিল আলামীন ওয়ালিহী ওয়াছাল্লীম। “ময়লার স্তুপে অর্ধমৃত ও বিবস্ত্র অবস্থায় রাসূল(সঃ) কে দেখেছি। দেওয়ানবাগী ১৯৮৯ সালে নাকি একটি ব্যতিক্রম ধর্মী স্বপ্ন দেখে ফেলেন, এ স্বপ্ন সমপর্কে তিনি ২০০৮ সালে বলেন। আমি দেখি ঢাকা ও ফরিদপুরের মধ্যেবর্তী স্থানজুড়ে এক বিশাল বাগান, এই বাগানে আমি একা একা হেঁটে বেড়াচ্ছি। হটাৎ বাগানের এক স্থানে একটি ময়লার স্তুপ আমার চোখে পড়ে, আমি দেখতে পায় এই ময়লার স্তুপে রাসূল(সঃ) এর প্রানহীন দেহ মোবারক পড়ে আছে, তার মাথা মোবারক দক্ষিন দিকে আর পা মোবারক উত্তর দিকে প্রসারিত। বাম পা মোবারক হাঁটুতে ভাজ হয়ে খারা অবস্থায় রয়েছে। আমি তাকে উদ্ধার করার জন্য পেরেশান হয়ে গেলাম। আমি এগিয়ে গিয়ে তার বাম পাঁয়ের হাটুতে আমার ডান হাত দ্ধারা সপর্শ করলাম। সাথে সাথেই তার দেহ মোবারকে প্রান ফিরে এল। তিনি চোখ মেলে আমার দিকে থাকালেন। মূহুর্তের মধ্যেই রাসূল(সঃ) সুন্দর পোশাকে সু-সজ্জিত হয়ে গেলেন। তিনি উঠে বসে হাসি মুখে আমার দিকে থাকিয়ে বললেন, হে ধর্ম পূনর্জীবন দানকারী। ইতি মধ্যেই আমার ধর্ম আরও পাঁচ বার পূনর্জীবন লাভ করেছে। একথা বলে রাসূল(সঃ) উঠে দাড়িয়ে হেঠে হেঠে আমার সাথে চলে এলেন। এরপর আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল। সূত্রঃ দেওয়ানবাগীর স্বরচিত গ্রন’, রাসূল(সঃ) সত্যিই কি গরীব ছিলেন ? ১১-১২ প্রকাশ কালঃ জুন ১৯৯৯ইং। এমনই অসখ্য আলস্নাহ বিরোধী লেখা তার রয়েছে। দেওয়ানবাগী আরো দাবী করেন দেওয়ানবাগী এবং তার মুরীদদের মাহফিলে স্বয়ং আল্লাহ, সমস্ত নবী, রাসূল (সা), ফেরেস্তা, দেওয়ানবাগী ও তার র্মূর্শিদি চন্দ্রপাড়ার মৃত আবুল ফজলসহ সমস- ওলি আওলিয়া, এক বিশাল ময়দানে সমবতে হয়ে র্সবসম্মতিক্রমে দেওয়ানবাগীকে মোহাম্মাদী ইসলামরে প্রচারক নিবাচিত করা হয়। এরপর আল্লাহ সবাইকে নিয়ে এক মিছিল বের করে। মোহাম্মাদী ইসলামরে চারটি পতাকা চারজনের যথাক্রমে আল্লাহ, রাসূল (সা), দেওয়ানবাগী এবং তার পীরের হাতে ছিল। আল্লাহ, দেওয়ানবাগী ও তার পীর প্রথম সারিতে ছিলেন। বাকি সবাই পিছনে ছিল। আল্লাহ নিজেই শোল্গান দিয়েছিলেন ”মোহাম্মাদী ইসলামরে আলো ঘরে ঘরে জ্বালো।” ( সূত্র: সাপ্তাহিক দেওয়ানবাগী পত্রিকা থেকে প্রকাশিত ১২/০৩/৯৯ ) তাকে জিজ্ঞেস করা হল আপনার উপর তো হজ্ব ফরজ আপনি হজ্ব করেন না কেন? সে বলল:- জিবরাঈল (আ) আমার ঘরে কাবা শরীফ নিয়ে আসে এবং আমি ঘরে বসেই হজ্ব করি। চিন্তা করেন কত বড় ভন্ড। এই ভন্ড দেওয়ানবাগীর বিরুদ্ধে জাপা চেয়ারম্যান এরশাদের স্বাক্ষর নকল করারও অভিযোগ রয়েছে। এই ভন্ড দেওয়ানবাগী পবিত্র কুরআনের ৪৩০টি আয়াত অস্বীকার করেছেন। সে একটি বই লিখেছে “আল্লাহ কোন পথে” এ বইয়ের ২১ পৃষ্টায় সে লিখেছে আমি আল্লাকে দেখেছি দাড়িও নাই গোফও নাই ২১ বছরের যুবক (নাউজুবিল্লাহ)। এ বইয়ের ৯৬ পৃষ্টায় এই ভন্ড লিখেছে গন্ধম কোন ফল নয়, মা হাওয়ার গুপ্তঅঙ্গনেই গন্ধম ছিল আদম (আ) এটা বেলাজার মত গ্রহণ করে বেঈমাণ হইছে। সে আরো বলেন আমি ইরাকের যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য আমার ছেলেদের অন্তর চোখ খোলা আছে তাদেরকে নবীজির সাথে যোগাযোগ করতে বললাম। তিনি আরো বলেন, আমি ছেলেদের বললাম ইরাকতো ধ্বংশ হয়ে যাচ্ছে তোমরা নবীজিকে অনুমতি দেয়ার জন্য বল আমি ইরাক যুদ্ধ বন্ধ করতে ব্যবস্থা নেব। তার অন্তর চক্ষু খোলা ছেলেরা নাকি নবীজিকে জিজ্ঞেস করল, আর নবীজি নাকি বলল সে যেন কোন ব্যবস্থা না নেয় ইরাক যুদ্ধ বন্ধ করতে। একবার চিন্তা করেন কত বড় ভন্ড এই দেওয়ানবাগীর পীর তিনি ইরাক যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য নবীজির (সা) অনুমতি নেয় এবং নবীজি (সা)
নাকি না বলেছেন। এই কথিক পীরের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে।