আমার কণ্ঠ রিপোর্ট॥
সবার প্রিয় শিক্ষক, মানুষ গড়ার কারিগর, হাজীগঞ্জ পাইলট হাইস্কুল এন্ড কলেজের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক, ১৯৯৮ সালের দেশের স্বর্ণপদক প্রাপ্ত শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক মরহুম কাজী বজলুল হকের ১৭তম মৃত্যুবাষির্কী আজ ২৬ মে মঙ্গলবার।
২০০৩ সালের ২৪ মে শুক্রবার জুমা নামাজ পড়ার জন্য নিজ বাসা টোরাগড় কাজী ভিলা থেকে বের হয়ে পৌর ভবনের সমনে দিয়ে মসজিদের দিকে যাওয়ার পথে অপর দিকে থেকে আসা একটি মোটর সাইকেল ধাক্কা দিলে ঘটনরার স্থলে গুরুতর আহত হয় কাজী বজুলুল হক। সাথে সাথে দেশের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক মরহুম কাজী বজলুল হককে ঢাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তার অবস্থা আশংঙ্কা জনক দেখে তাকে আইসিউতে রাখা হয়।
২৬ মে সকালে সবার প্রিয় কাজী বজলুল হক সবাইকে কাঁদিয়ে চলে যান না ফেরার দেশে। তাঁর মৃত্যুর সংবাদ হাজীগঞ্জসহ বিভিন্ন জায়গায় পৌছার সাথে সাথে চারদিকে শোকের ছায়া নেমে আসে। তার মরদেহ কর্মস্থল হাজীগঞ্জ পাইলট হাইস্কুল এন্ড কলেজ মাঠে আনা হলে হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক ও কাজী বজলুল হকের প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীরা তাঁকে শেষ বারের মতো দেখতে আসেন।
আজ তাঁর ১৭তম মৃত্যুবাষিকী উপলক্ষে করোনা ভাইসরাসের কারণে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে টোরাগড় কাজীবাড়ী মসজিদে সীমিত আকারে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
কাজী বজলুল হকের জীবনী
১৯৩৮ সালে হাজীগঞ্জ উপজেলার পালিশারা গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন কাজী বজলুল হক। বাবা কাজী আলীমুদ্দিনের হাত ধরে নিজ গ্রাম পালিশারার ‘পালীশারা জুনিয়র মাদ্রসায়’ লেখাপড়া শুরু করেণ। এরপর ১৯৪৮ সালে এ মাদ্রাসা থেকে জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষায় বৃত্তি লাভ করেণ। পরবর্তী সময়ে শাহরাস্তী মাদ্রাসায় ভর্তি হন এবং সেখান থেকেই ১৯৫৩ সালে মাদ্রাসা পরীক্ষায় মেধা তালিকায় ৭ম স্থান দখল করেণ। এরপর লাকসাম নওয়াব ফয়জুন্নেসা কলেজ থেকে ১৯৫৫ সালে আইএ পারীক্ষায় অংশ নিয়ে মেধা তালিকায় তৃতীয় স্থান দখল করেন। ১৯৫৭ সালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে বিএ পরীক্ষায় ২য় বিভাগে উত্তীর্ণ হন এবং ১৯৬২ সালে ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে প্রথম শ্রেণীতে বিএড পাস করেন এবং মেধা তালিকায় পঞ্চম স্থান দখল করেন। আর্থিক অনটনের কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার ইচ্ছা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা আর হয়ে উঠেনি। বিএড কোর্স করার পরপরই তিনি গ্রামে চলে যান এবং নিজ গ্রামের পালীশারা হাইস্কুলে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেণ। পরে ১৯৬৩ সালে চট্রগ্রামের রাঙ্গুনিয়া হাইস্কুলে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৬৪ সালে সেখান থেকে আসেন লাকসাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে। দায়িত্ব নিলেন সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে। লাকসাম হাইস্কুলে প্রায় ৯ বছর শিক্ষাকতা করার পর তিনি ১৯৭৩ সালের ১ জানুয়ারী হাজীগঞ্জ পাইলট হাইস্কুলে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেণ। এই দীর্ঘ সময়ে সম্মান এবং সাফল্যের সঙ্গে শিক্ষাকতার পাশাপাশি দু’দুবার জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কৃত হয়েছেন। প্রথমবার ১৯৮৯ সালে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে পুরস্কৃত হন। পরবর্তী সময়ে ১৯৯৮ সালে অর্জন করেন জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক হওয়া গৌরব। এ দুটি সম্মান তাঁর সারা জীবনের পরিশ্রমের ফসল। তিনি ৫ সন্তানের জনক। বড় ছেলে কাজী আনোয়ারুল হক হেলাল (প্রথম শ্রেণীর ঠিকাদার ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ হাজীগঞ্জ উপজেলা শাখা সহ-সভাপতি, ২য় সন্তান ডা.কাজী মোস্তফা সারোয়ার,অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব (প্রাক্তন মহাপরিচালক, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর, ঢাকা) ৩ সন্তান তানজিনা ফেরদৌস রুনা( উপধ্যক্ষ, সরকারি বিজ্ঞান কলেজ, তেজগাঁও ঢাকা, ৪র্থ সন্তান কাজী মাহবুবুল আলম ( উপ-সচিব, স্বাস্থ্য বিভাগ, ঢাকা) ছোট ছেলে গোহাগ এর অশাল মুত্যু হয়।
আজ,
মঙ্গলবার , ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ৬ ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দবিকাল ৪:০৩
নোটিশ বোর্ড
সর্বশেষ
প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।