সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের সঙ্গে যা ঘটেছে, তা খুবই দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকারের কিছু লুকানোর নেই।
বৃহস্পতিবার (২০ মে) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় এক অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গুটিকয়েক লোকের আচরণের জন্য আমাদের এখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মুখোমুখি হতে হবে।
ঢাকায় নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জ্যাং কেয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে ড. মোমেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার গণমাধ্যমবান্ধব সরকার। তবে রোজিনা ইসলামের সঙ্গে যা ঘটেছে, তা অনভিপ্রেত। আমরা তার ন্যয়বিচার প্রত্যাশা করছি।
গত সোমবার সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তার কক্ষে পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় রোজিনা ইসলামকে আটকে রাখার পর পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল।
সোমবার রাতেই তার বিরুদ্ধে অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের আওতায় মামলা করা হয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। সেই মামলায় তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় নথি চুরি এবং অনুমতি ছাড়া সেই নথির ছবি তোলার অভিযোগ আনা হয়েছে।
এ ঘটনাটি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে গুরুত্ব সহকারে প্রকাশিত হয়েছে। জাতিসংঘ থেকেও প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতো সংগঠন।
এসব দিকে ইঙ্গিত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এখন এটি নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলবে যা তার মন্ত্রণালয়কেই সামলাতে হবে।
তিনি বলেন, এই সরকার সংবাদপত্র বান্ধব সরকার। আমরা কখনো আপনাদের নিষেধ করিনি। আমাদের গোপন করার কিছু নেই। তবে যেহেতু বিচারাধীন, আমি আর কোন মন্তব্য করতে চাই না। তবে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না হয়। আশা করি রোজিনা ন্যায়বিচার পাবে।
ঘটনাটিকে অপ্রত্যাশিত আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, সংবাদমাধ্যম দেশের জন্য বিরাট কাজ করছে। আপনাদের কারণেই বালিশের কাহিনী, লাখ টাকার সুপারি গাছ কিংবা সাহেদ করিমের তথ্য পেয়েছি এবং সরকারও অ্যাকশন নিয়েছে। আপনারা সরকারকে যথেষ্ট সহায়তা করেছেন।
এদিন সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে নিয়ে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ জানান, সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম যেন ন্যায়বিচার পান সে চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। এ বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে দেখা হবে।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তবে, রোজিনা ইসলামেরও ভুল হতে পারে। বিষয়টি আবেগের সঙ্গে না দেখে বাস্তবতার প্রেক্ষিতে দেখতে হবে। কেউই ভুলের ঊর্ধ্বে নয়।