নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে সোমবার ভোরে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী। এদিন অং সান সু চি ও ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের আটক করা হয়। এরপর থেকে আর দেখা মিলেনি অং সান সু চির। তিনি কোথায় আছেন, কেমন আছেন? তাও কারও জানা ছিল না। অবশেষে দেখা মিলেছে সু চির।
মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকালে বাড়ির সীমানা প্রাচীরের মধ্যে তাকে শনাক্ত করা গেছে বলে জানিয়েছেন সুচির রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটির লিগ (এনএলডি)-এর প্রেস কর্মকর্তা কিয়াই টোয়ে। খবর এএফপির।
এছাড়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনলডি’র এক আইনপ্রণেতা জানিয়েছেন, রাজধানী নেপিদোর সরকারি বাসভবনে তাকে গৃহবন্দি করা হয়েছে বলে খবরে বলা হয়।
এর আগে আটককৃত সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের খোলা আকাশের নিচে স্থাপিত অস্থায়ী বন্দিশালায় রাখা হয়েছে বলে একাধিক সূত্রের বরাতে জানিয়েছে গণমাধ্যমগুলো।
সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) মিয়ানমারে গণ্ডগোলের পরপরই এক চিঠিতে জনগণকে রাস্তা নেমে সামরিক অভ্যূত্থানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের আহ্বান জানান সু চি। কিন্তু তার আগেই গুরুত্বপূর্ণ সড়কের মোড়ে মোড়ে শক্ত অবস্থানে সেনা সদস্যরা। রাতে কারফিও থাকায় রাস্তায় নামার কোন সুযোগ নেই তার সমর্থকদের।
এদিকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী নেতৃবৃন্দকে গ্রেফতারের পর এক বছরের জন্যে দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি এবং একজন জেনারেলকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে।
সামরিক প্রধান ও অভ্যুত্থানের নেতা মিন উং লাইং দেশ পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন। সাবেক জেনারেল মিয়ন্ট সুই ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
প্রসঙ্গত, গত বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল এনএলডি নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে। তবে ওই নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তোলে দেশটির সেনাবাহিনী। এবার সেই অভিযোগেই অভিযান চালিয়ে সু চিসহ এনএলডির শীর্ষ নেতাদের আটক করা হয়।
ওই নির্বাচনে সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলের ভোটারদের ভোট বঞ্চিত করা হয়েছে বলে বিভিন্ন মানবাধিকার গোষ্ঠী থেকে সমালোচনা করা হয়। আর সেনাবাহিনী সমর্থিত বিরোধী জোট নির্বাচনে দাবি করে নির্বাচনে ৮ দশমিক ৬ মিলিয়ন ভোট জালিয়াতির ঘটনা ঘটে।