দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রাজধানীর বাজারে আসতে শুরু করেছে দেশি ফল। দোকানগুলোতে রাজত্ব এখন এসব মৌসুমি ফলের। সুস্বাদু আম, লিচু, সফেদাসহ বিভিন্ন ধরনের ফলের পসরা সাজিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। দোকানগুলো ম ম করছে সুস্বাদু এসব ফলের ঘ্রাণে। তবে দাম নাগালের বাইরে বলে অভিযোগ ফলপ্রেমীদের। আড়তদারদের কাছ থেকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে বলে খুচরা বাজারেও দাম বেশি বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
রোববার (২৩ মে) রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে দেশি ফলের বাজারের এমন চিত্র দেখা যায়। পর্যাপ্ত রোদের কারণে লিচুর ফলন এবার কম হওয়ায় সরবরাহ নেই। যার ফলে অতিরিক্ত দামেই লিচু বিক্রি করতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। ব্যবসায়ীদের ধারণা, লিচুর দাম আরও বাড়বে। তবে আমের সরবরাহ বাড়লেও পাইকারি বেশি দরে কিনে লাভের আশায় খুচরা আরও বেশি দামে বিক্রি করছেন এসব মৌসুমি ব্যবসায়ীরা।
বাজারে এখন হিমসাগর আম বেশি উঠেছে। এছাড়া গোবিন্দভোগ, পারিভোগসহ কয়েক রকমের আম পাওয়া যাচ্ছে বাজারে। এসব আম ৮০-১২০ টাকা, ১০০ লিচু বিক্রি হচ্ছে ৩৫০-৪০০ টাকা, সফেদা ৭০ টাকা ও জাম ১৬০-১৮০ টাকা কেজি দরে খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে।
খুচরা ব্যবসায়ী রফিক বলেন, পাইকারি বেশি দামে কিনতে হচ্ছে যার কারণে বেশি রাখতে বাধ্য হচ্ছি আমাদেরও তো কিছুটা লাভ করতে হবে। তারা যদি কম রাখে আমরাও ক্রেতাদের কাছে কিছুটা কম দামে বিক্রি করতে পারবো। লিচুর দাম আরও বাড়বো। এখন মানুষ ৩৫০ টাকায় কিনতে চাচ্ছে না। পরে ৫০০-৬০০ দাম হয়ে যাবে।
আম বিক্রেতা বাচ্চু মিয়া বলেন, ভালো জিনিসের দাম তো একটু বেশি হবেই। একটু বেশি দাম না দিলে কী ভালো জিনিস পাওয়া যায়?
এদিকে বাড়তি দামের কারণে দেশি ফল কিনতে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন ফল প্রেমীরা। বাজারে নতুন ওঠা দেশি ফলের দাম বেশ চড়া বলছেন তারা। বাড়তি দাম দিয়ে মধু মাসে ফল কিনে খাওয়া মধ্যবিত্তদের জন্য অনেকটা দুঃসাধ্য। দাম বিবেচনায় কিনতে এসেও খালি হাতেই ফিরছেন অনেক ক্রেতা।
আহমেদ সিদ্দিক নামে এক ক্রেতা বলেন, এত দামে কিভাবে কিনবো তাই ঘুরে দেখছি যদি কিছুটা কমে পাই তাহলে কিনবো।
একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা তুলি শেখ বলেন, বাজারে এসে চোখ কপালে উঠে গেছে। লিচুর দাম এতো বেশি। মধ্যবিত্তরা তো এসব মধু মাসের ফল খেতেই পারবে না, এমন আকাশ ছোঁয়া দাম হলে।
দেশি ফল মানবদেহের জন্য অনেক উপকারী হলেও আম কেনার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন বিষয়ে পুষ্টিবিদ তামান্না চৌধুরী আরটিভি নিউজকে জানান, গ্রীষ্ম মানেই রসালো ফলের মৌসুম। এসব ফল মানবদেহের জন্য অনেক উপকারী। এই রোদ গরমে মানুষের শরীরে পানিস্বল্পতা দেখা দেয়। রসালো এসব ফল সেই ঘাটতি পূরণ করে। তবে ফল কেনার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা উচিত। যেহেতু বিভিন্ন রকম কেমিক্যাল দিয়ে এসব ফল পাকানো হয়। যা দেহের জন্য ক্ষতিকর।