তখন সকাল গড়িয়ে বেলা সাড়ে ১১টা। চাঁদপুরে শহরের প্রাণকেন্দ্র শপথ চত্বর এলাকার চিত্র অন্যান্য দিনেই মতোই জনব্যস্ততা আর কোলাহলময়।
শত শত মানুষ প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে পথ চলছে, কেউবা অযথাই ঘোরাফেরা করছে। রাস্তার দুই পাশে ভ্যানগাড়ির ভ্রাম্যমাণ দোকানে দেদারছে চলছে বেঁচা-বিক্রি। আর মার্কেটের মূল গেইট বন্ধ রেখে অথবা দোকানের স্যাঁটার নামিয়ে ভেতরে ক্রেতা রেখে অভিনব কায়দায় চলছে বিক্রি-বাট্টা। অনেকের মুখে নেই মাস্ক, নেই স্বাস্থ্যবিধি মানার বিন্দুমাত্র প্রবনতা।
এ যেনো করোনার সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত লকডাউন ভাঙা বা না মানার মহাউৎসব। যেনে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিজেদের পায়ে নিজেরাই কুড়ালা মারা প্রবনতা। পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় চাঁদপুর শহরের প্রাণকেন্দ্র এলাকার এমন চিত্র দেখে একাই রাস্তায় নেমে পড়েন চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) স্নিগ্ধা সরকার। তিনি প্রথমেই বিণয়ের সাথে সকলকে আইন এবং স্বাস্থ্যবিধি মানতে অনুরোধ জানান। তবে কোথাও কোথাও তিনি আইন না মানলে কঠোর হবার হুঁশিয়ারি দেন। এসময় তিনি একাই মাত্র পুলিশ সদস্যকে সাথে নিয়ে পুরো শপথচত্বর এলাকা চাষে বেড়ান।
জেলা পুলিশের এই উধ্বর্তন নারী পুলিশ অফিসার বলেন, সরকার লকডাউন কিংবা স্বাস্থ্যবিধির মানার যে নির্দেশনা দিয়েছেন তা জনগণের কল্যানের জন্যেই। জীবন বাঁচলে জীবিকাও বাঁচতে। তাই আগে নিজের জীবন বাঁচতে হবে। আর মাত্র ক’টা দিন সরকারের নির্দেশনা মেনে চলুন, এতে আপনি এবং আপনার পরিবার সুরক্ষিত থাকবে। তিনি সিএনজি, অটোরিক্সা এবং রিক্সা চালকদের বুজাতে সক্ষম হন, এই মহামারির মানবিক বিপর্যয়ে সকলকেই যার যার অবস্থান থেকে সচেতন হতে হবে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) স্নিগ্ধা সরকারের মাত্র ২০ মিনিটেই পরিশ্রমী প্রচেষ্টায় পুরো শপথচত্বর এলাকায় শৃঙ্খলা ফিরে আসে।
এসময় এই নারী পুলিশ কর্মকর্তার একইসাথে দায়িত্বশীলতা, মানবিকতা এবং কঠোরতায় উপস্থিত সকলকেই মুগ্ধতা প্রকাশ করেন। পথচারিদের কেউ কেউ বলে ওঠেন, এমন পুলিশ অফিসার-ই তো আমরা চাই, যিনি কঠোর হবেন কিন্তু মানবিকতাকে বিসর্জন দিয়ে নয়।