মোবাইল ফোনে প্রেমের সম্পর্ক। তারপর আপত্তিকর ছবি তুলে ভুয়া কাবিননামায় অধিক টাকায় বিয়ে সম্পন্ন করা। আর এভাবেই ব্যবসায়ীদের ব্লাকমেইল করে মোটা অংকের টাকা আদায় করছে রাজধানীর একটি প্রতারক চক্র। তবে তাদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি চাকরিজীবী থেকে শুরু করে দেশে আসা প্রবাসীরাও। এমনই এক চক্রের মূল হোতা লিনা মাহমুদসহ তার দুই সহযোগী মনির ও ভুয়া কাজি হাবিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।
বিভিন্ন উপায়ে ব্যবসায়ীদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ, প্রেমের ফাঁদে ফেলে বাসায় ঢেকে নিয়ে জোর পূর্বক বিয়ে করে কাবিন নামার অর্থ আদায়। এটিই ছিলো এই নারীর মূল পেশা। কখনো মিলা, কখনো লিনা মাহমুদ। বিভিন্ন নামে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বাসা ভাড়া নিয়ে সাজিয়েছিলেন প্রতারণার এমন সাম্রাজ্য। তার ফাঁদে পড়ে সবকিছু হারিয়েছেন শতাধিক ব্যবসায়ী।
প্রেমের ফাঁদে পা দেয়া ব্যক্তি প্রতারক মিলার বাসায় গেলে চক্রের বাকী সদস্যদের ডেকে এনে জিম্মি করতেন ভুক্তভোগীদের। দাবি করা হতো মোটা অংকের টাকা। অপারগতা প্রকাশ করলেই ভুয়া স্ট্যাম্প ও ভুয়া কাবিননামায় কাজীর মাধ্যমে বিয়ে পড়িয়ে আদায় করা হয় কাবিনের টাকা। তাকে সহযোগিতা করতো সায়েম, রাজিব, মনির ও কথিত কাজি হাবিবুর রহমান।
এ ঘটনা চক্রের প্রতারক মমিনুল ইসলাম মনির বলেন, আমি বাহিরে থেকে অপেক্ষা করি। তারপর তারা সংকেত দিলে লোক পাঠানো হয়।
সম্প্রতি কাওরান বাজারে এমনই এক ব্যবসায়ীকে টার্গেট করেন তারা। এরপর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে মিরপুরের একটি বাসায় নিয়ে, জোড় পূর্বক বিয়ে পড়িয়ে, দাবি করেন ৭ লাখ টাকা। পরে টাকা দেয়ার শর্তে বেড়িয়ে এসে থানায় অভিযোগ করেন ওই ব্যবসায়ী।
এই ঘটনার ভুক্তভোগী ফয়েজ আহমেদ বলেন, আমার কাছ থেকে দুটি কাগজে সাক্ষ্যর নেন তারা। আর ভুয়া কাবিন নামাতেও সাক্ষ্যর নিয়েছে। আর আমার ভিডিও করা হয়েছিল।
একই সমস্যা নিয়ে তেজগাঁও গোয়েন্দা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, ভুক্তভোগী মামলা দায়ের করার পর আমরা অনুসন্ধান করে তাদের গ্রেপ্তার করি। ২০১৭ সাল থেকে রাজধানীতে অনেক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে এভাবে চক্রটি হাতিয়ে নিয়েছে লাখ লাখ টাকা। এই চক্রের অন্যতম সদস্য রাজিব ও সায়েমসহ বাকিদের ধরতেও অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে গোয়েন্দা পুলিশ।