চাঁদপুর হাজীগঞ্জে পালিয়ে বিয়ে করার পরে স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতন ও ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে থাকা মেহজাবিন তার স্বামীর জিম্মায় দিতে চাদঁপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
স্ত্রী ও সন্তানকে নিজ জিম্মায় নিতে কিশোরীর স্বামীর করা আবেদনের শুনানি নিয়ে ১৪ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
গাজীপুরের শিশু-কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধানে শিশুসন্তানসহ কিশোরীকে আজ সকালে আদালতে হাজির করা হয়।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শেখ আলী আহমেদ খোকন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন।
পরে শেখ আলী আহমেদ খোকন বলেন, মেয়েটির মতামত ও স্বামীর বক্তব্য শুনে আদালত আদেশ দিয়েছেন। শিশুসহ মেয়েটিকে তার স্বামীর জিম্মায় দিতে চাঁদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার প্রতাপপুর গ্রামের মেহজাবিনের পরিবারের অমতে তার প্রেমিককে বিয়ে করে। বিয়ের কাবিনে কনে হিসেবে মেয়েটির বয়স দেখানো হয় ১৮ বছর। অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে একই বছরের ৭ ডিসেম্বর কিশোরীর স্বামীসহ অন্যদের বিরুদ্ধে হাজীগঞ্জ থানায় মামলা করেন মেয়েটির মা। এতে মেয়েটির বয়স দেখানো হয় ১৩ বছর ১১ মাস। যদিও জন্মনিবন্ধন অনুযায়ী মেয়েটির বয়স ১৭ বছর।
২২ ধারার জবানবন্দিতে মেয়েটি তার বয়স ১৬ বলে উল্লেখ করে। মামলার পর গত বছরের ২৬ মে মেয়েটি ও তার স্বামীকে আটক করে পুলিশ।
এরপর কিশোরীর স্বামীকে চাঁদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠান। সেদিন মেয়েটির মা মেয়েকে নিজ জিম্মায় নিতে আবেদন করেন। তবে কিশোরী মায়ের জিম্মায় যেতে অনিচ্ছা প্রকাশ করলে ট্রাইব্যুনাল তাকে সেফ কাস্টডিতে (গাজীপুরের শিশু-কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে) পাঠানোর আদেশ দেন।
কিশোরীর স্বামী হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন। গত বছরের ২০ অক্টোবর হাইকোর্ট তাঁকে ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেন। এ অবস্থায় গত বছরের ২৭ অক্টোবর গাজীপুরের শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে কিশোরী কন্যা সন্তানের মা হয়।
অন্যদিকে জামিনে মুক্তির পর কিশোরীর স্বামী তাঁর স্ত্রী ও সন্তানকে নিজ জিম্মায় পেতে ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন, যা গত বছরের ১০ নভেম্বর নামঞ্জুর হয়। এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন স্বামী।
এর পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর আদালত শিশুসহ কিশোরীকে আদালতে নিয়ে আসতে গাজীপুরের শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের (বালিকা) তত্ত্বাবধায়ককে নির্দেশ দেন। আজ তাদের হাজির করা হয়।