বাড়িতে চলছিল সাজসজ্জা, তোরণ নির্মাণ, অতিথিদের খাওয়ার জন্য বাহারি রান্নাসহ বিয়ের সব আয়োজন। সবাই বরের জন্য অপেক্ষায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই বর আর আসলেন না। ফলে বিয়ের আনন্দ পরিণত হয় বিষাদে।
গত রোববার শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার বিলাশপুর ইউনিয়নে এই ঘটনা ঘটে।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২৩ বছর বয়সী তরুণীর সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইমোর মাধ্যমে গত বছর সোহাগ নামের এক যুবকের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই সম্পর্কের সূত্র ধরে বিয়ের আয়োজন করে মেয়েটির পরিবার। রোববার তাঁদের বিয়ের আয়োজন করা হয়। শেষ পর্যন্ত বর সোহাগ আর বিয়ে করতে আসেননি। প্রতারণার শিকার ওই তরুণী হতাশায় মুষড়ে পড়েছেন।
গ্রাম পুলিশ সদস্য তরুণীর বাবা বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ। পরিবারের কেউ লেখাপড়া জানি না। সহায়–সম্পত্তি তেমন কিছুই নাই। মেয়েটি এমন করে প্রতারণার শিকার হইলো, মানতে পারতেছি না। এখন তো আমার মেয়েকে কেউ বিয়ে করতে চাইবো না।’
ওই তরুণী বলেন, সোহাগ তাঁকে জানিয়েছেন তাঁর বাড়ি রাজশাহী শহরে। তিনি নড়িয়া থানায় পুলিশের চাকরি করেন। ইমোর মাধ্যমে তাঁদের প্রেমের সম্পর্ক হওয়ার পর তাঁরা দুই দফায় নড়িয়ায় দেখাও করেছেন। সোহাগ তাঁকে জানিয়েছেন, বিয়ের আগের দিন তিনি আইডি কার্ড হারিয়ে ফেলেছেন। তাই বেতন তুলতে পারছেন না। ফলে তাঁর কাছে সোহাগ এক লাখ টাকা চেয়েছেন বিয়ের খরচের জন্য। সেই কথামতো সোহাগকে ৭২ হাজার টাকা পাঠিয়েছেন তিনি।
এরপর থেকে তাঁর মুঠোফোন বন্ধ, তাঁর সঙ্গে আর যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। এভাবে তিনি প্রতারণার শিকার হবেন ভাবতেও পারেননি।
ওই যুবক ছেলেটি আমার ইউনিয়নের কেউ না, তাঁর কোনো সঠিক ঠিকানা জানা নেই বলে মন্তব্য করেন বিলাসপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু তাহের সরদার।
তিনি বলেন, মেয়েটির পরিবার আরেকটু সচেতনভাবে বিয়ের আয়োজন করতে পারত। এখন পুলিশকে জানানো হবে, তারা যদি কিছু করতে পারে।
বিয়ে করতে আসার কথা বলে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার খবর শুনেছেন বলে জানান জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজহারুল ইসলাম। তিনি বলেন, ভুক্তভোগী পরিবারের কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।