৪র্থ শ্রেনীর কর্মচারীসহ নার্সরাও দালাল এবং বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানি প্রতিনিধিদের মোটর সাইকেল পার্কিং এবং রোগীদের প্রেসক্রিপশন টানা টানিতে যেন দখলে রয়েছে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল । প্রতিদিন সকাল থেকে শুরু করে বিকেল পর্যন্ত তাদের এমন আনাগোনা ও অনিয়ম লক্ষ্য করা গেছে।
জেলার এই সরকারি হাসপাতালটিতে প্রতিদিন চিকিৎসেবা নিতে এসে তাদের এমন আচরণে হয়রানির শিকার হচ্ছেন রোগীরা। তাদের এমন অনিয়ম দেখার যেনো কেউ নেই। যদিও আইনগত নিয়ম রয়েছে হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগীদের প্রেসক্রিপশনের কোন প্রকার ছবি তোলা যাবেনা এবং রোগীদের কাছ থেকে টাকা পয়সা নেওয়া যাবে না সে ক্ষেত্রে কোনো নিয়মনিতি মানা হচ্ছে না । নার্সরা বা ৪র্থ শ্রেনীর কর্মচারীরা রোগীদের ইনজেকশেন পুশ করলে ১০০ থেকে ২০০টাকা বাধ্যতা মূল্যক দিতে হয়। নার্সরা রোগীদের ঔষধের সিলিপ লিখে দিতে কম পক্ষে ৫০ টাকা দিতে হয়। এছাড়া এমন কোনো পরীক্ষা নিরিক্ষা বিদ্ধমান নাই হাসপাতালটিতে যে কোন পরীক্ষা করাতে হলে বাহিরে করাতে হয় । এর মধ্যে দালাল ৪র্থ শ্রেনীর কর্মকর্তারাই তারা সেবা সহযোগীতা না করে ৬০০টাকার আলটাস্নো ৮০০/১০০০টাকায় করায় লোভনীয় কথা বলে। কিন্তু সে আইন বা নিয়ম যেনো কাগজে কলমেই সীমাবদ্ধ। তা মানছেন না কোন ঔষধ কোম্পানীর প্রতিনিধিরা। অপরাধীরা এমন সুযোগ নিতে পারে শুধু ডিজিটাল যুগে ডিজিটাল পদ্ধতি নাকাতে যদি সিসি ক্যামেরা থাকতো অন্ততপক্ষে কিছুটা কম হতো।
গত কয়েক বছরপূর্বে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সপ্তাহে দুদিন বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিগণ দুপুর ১টার পর তাদের ভিজিট করতে পারবেন এবং হাসপাতাল প্রাঙ্গণে বাউন্ডারির ভেতর কোন মোটরসাইকেল পার্কিং করা যাবে না। কিন্তু সেই নিয়ম মানছে না কোন প্রতিনিধিগণ। তারা তাদের খামখেয়ালি মতোই প্রতিনিয়ত হাসপাতাল অবস্থান করতে দেখা যায়।
প্রতিদিনই চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালের জরুরী বিভাগ, বর্হি বিভাগ এবং আন্তঃবিভাগ সহ বিভিন্ন চিকিৎসকের কক্ষের সামনে এমন অনিয়ম দেখা যায়।
বেশ কয়েক মাস ধরে হাসপাতালের নিচ তলা এবং ২য় তলার বর্হি বিভাগের বিভিন্ন চিকিৎসকের কক্ষের সামনে বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানীর প্রতিনিধিদের দীর্ঘ সময় ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। রোগীরা ডাক্তার দেখিয়ে বের হলেই এসময় তারা বিভিন্ন রোগীদের দাঁড় করিয়ে তাদের প্রেশক্রিপসন টেনে ধরে ছবি তুলতে দেখা যায়। এতে তারা দেখেন যে চিকিৎসক তাদের নিজস্ব কোম্পানীর কোন ঔষধ লিখেছেন কিনা।
যদি লিখে থাকেন,তখন তারা রোগীর কাছের সেই প্রেসক্রিপশনের ছবি তুলে রাখেন এবং তা কোম্পানির নিকট পাঠিয়ে দেন। এরমধ্যে গত কয়েকদিন পূর্বে দেখা গেছে অপসোনী, ইডরাল, স্কয়ার, জিনারেল সহ নাম না জানা আরো বেশ কিছু ঔষধ কোম্পানীর একাদিক প্রতিনিধি হাসপাতালের ভিতরে এবং বাহিরে বিভিন্নস্থানে দাঁড়িয়ে রোগীদের কে অনেক হয়রানি করছেন। তাদের এমন অনিয়ম চোখ পড়ছেনা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।
এছাড়াও এসব ঔষধ কোম্পানী প্রতিনিধিগন প্রতিদিনই হাসপাতাল প্রাঙ্গনের বিভিন্নস্থানে এলোপাতাড়ি ভাবে মোটর সাইকেল পার্কিং করে রাখতে দেখা গেছে। চলাচলের রাস্তা দখল করে মোটর সাইকেল পার্কিং করার কারনে হাসপাতালে আগত রোগীদের চলাচলের বেঘাত সৃষ্টি হয় বলেও অনেকের অভিযোগ।
যদিও কয়েক বছর পূর্বে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হাসপাতালের বাউন্ডারির ভেতরে কোন প্রকার গাড়ি পার্কিং না করার জন্য নিষেধ করেছেন। কিন্তু সে নিষেধ মানছেন না কোন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিগণ। নিষেধ থাকা সত্ত্বেও তারা প্রতিনিয়ত এলোপাতাড়ি ভাবে হাসপাতাল প্রাঙ্গণের বিভিন্ন স্থানে তাদের মোটরসাইকেল পার্কিং করতে দেখা গেছে।
এভাবে হাসপাতাল প্রাঙ্গনে প্রতিনিয়ত মোটর সাইকেল রাখার দৃশ্যই বলে দেয়, কর্তৃপক্ষের সে নিষেধ আর নিয়ম শুধু কাগজ কলম আর মুখেই রয়ে গেছে। তা বাস্তব রূপ দিতে পারেনি।
৯ জানুয়ারি শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত হাসপাতালে বাউন্ডারির ভিতরে এবং বাহিরে বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন ঔষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের ব্যবহৃত প্রায় শতাধিক মোটরসাইকেল পার্কিং করে রাখতে দেখা গেছে। যা অনেকের দৃষ্টিগোচর হয়েছে।
চাঁদপুর জেলার প্রধানতম সরকারি এ হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীরা যাতে এসব ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের হয়রানির শিকার থেকে রক্ষা পান এবং হাসপাতাল প্রাঙ্গনে যেন এভাবে এলোপাতাড়িভাবে প্রতিনিয়ত মোটরসাইকেল পার্কিং না করা হয় তার জন্য স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন বলে মনে করছেন সচেতন মহল।