মো. খুরশিদ আলম।।
হাইমচর উপজেলার আলগী উত্তর ইউনিয়নের বাংলাবাজার সংলগ্ম ভিঙ্গুলিয়ায় গনি গাজির পরিবারে একমাত্র উপার্জনকারী মোবারক গাজিকে হারিয়ে মহুর্তেই নিঃস্ব হয়ে গেল তার পরিবার। মোবারকের পরিবারে তার দাদা প্যারালাইজড চাঁন মিয়া গাজি, দাদু মাহফুজা বেগম, অপারেশন হওয়া বাবা গনি গাজি, মা তাসলিমা বেগম, ছোট বোন তানজিলা, আমেনা ও ভাই আবু তাহের এর পরিবারে একমাত্র উপার্জনকারী হিসেবে পরিবারের দায়িত্ব পালন করছিলেন। মোবারক পরিবারকে সহায়তার জন্য নারায়নগঞ্জে ব্যক্তিমালিকানাধীন চাকুরি করতেন।
স্থানীয় মিজান খাঁনের পুত্র রাজন খাঁন ও শাহজান ভ’ইয়ার পুত্র মহিন ভ’ইয়ার পূর্ব থেকে দ্বন্দের জেরে গত ১৯ মার্চ শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজনের ভাই মহন খাঁন ধারালো চুরি দিয়ে মোবারককে গলা কেটে হত্যা করে, এসময় মহিন খাঁন ও মহিন ভ’ইয়া গুরুতর জখম হয়। মোবারকের হত্যার পর মহুর্তেই তার পরিবারটি নিঃস্ব হয়ে পড়ে। তদের আর্তনাদে আকাশ বাতাশ ভারি হয়ে উঠে। হাজারো মানুষের কোন শান্তনাই মোবরকের পরিবারকে শান্ত করতে পারছে না।
গতকাল শনিবার সরজমিনে গেলে দেখা যায় নিহত মোবারকের পরিবারের সদস্যদের আত্ম চিৎকার ও আহযারিতে আকাশ বাতাশ ভারি হয়ে উঠছে। কয়েকশত নারী পুরুষ পরিবারটিকে শান্তনা দিতে গিয়ে নিজেরাই অঝড় দাড়ায় চোঁখের জল ছড়াচ্ছেন।
মোবারকের মা’ তাসলিমা বেগম আর্তনাধ করে বলেন, আমার বাবাকে যারা হত্যা করেছে আমি তাদেরকে ফাঁসির কাষ্টে দেখতে চাই। তাদের মা’ বাবাও বুঝক সন্তান হারানোর যন্ত্রনা কতটুকু। আমার বাবাটি এলাকায় কারো সাথে কোন বিবাদে লিপ্ত ছিলনা। আমার ছেলে মোবারক তার বাবার জন্য ঔষধ আনতে গেলে খুনিরা তাকে গলা কেটে হত্যা করে বলেই মোবারকে মা’ তাসলিমা বলেন, আমি একাধিক অপারেশনের রোগী। সন্তানের জন্য চিৎকার করে কান্নাও করতে পারি না। আমার সংসারটা কে দেখবে। মোবারক তার মালিকের কাছ থেকে ৩লাখ টাকা ধার নিয়ে বড় ছেলে আবু তাহেরকে কয়েকমাস পূর্বে কুয়েতে পাঠায়। করোনার জন্য ছেলেটি সেখানে বিপদে আছে। আমার সংসারটা চালাতো মোবারক। এখন কে চালাবে আমারতে আর কোন উপায় নাই। ধার করা তিন লাখ টাকা কে পরিশোধ করবে। আমার ছোট ছোট মেয়ে সন্তানগুলো ভবিষ্যৎ কি হবে? খুনিদের ফাঁসি হবে তো? খুনিরা কেন গলা কাটলো। হাত পায়ে কোপ দিলেও তো আমার ছেলেটাকে নিয়ে বেঁচে থাকতে পারতাম। এখন আমার সবই শেষ।
নিহত মোবারকের পিতা ও একাধিক অপারেশন হওয়া গনি গাজি আহজারি করে বলেন, আমার ছেলেটি সহ এক সাথে দুপুরের খাবার খেয়েছি। আমি অসুস্থ্য আমার চিকিৎসার জন্য সবকিছু ছেলেই করতো। আমাকে কোন কাজ করতে দিত না। শুক্রবার একসাথে দাওয়াত খেয়ে ফেরার সময় ছেলে আমার ঔষদের জন্য বাংলাবাজার যাওয়ার পথে খুনি মহন খান ও রাজন খানরা রাস্তার উপর গলাকেটে হত্যা করলো। এখন আমি কি নিয়ে বাঁচবো। খুনের বিচার পাবো তো।
নিহত মোবারকের দাদী মাহফুজা বেগম জানান, আমার ভাইকে কেন মারলো। আমার ভাইটি ছিল আমাদের সম্বল। ঘরে অসুস্থ্য তার দাদা, তার মা’ বাবা, আমি সহ তার ভাই বোন গুলোর এখণ কি হবে। কে ঔষদ আনবে। কে আমাদের দায়িত্ব নেবে। আমি আমার ভাইটিকে কিভাবে ভুলবো। মানুষ এত নিষ্ঠুর হয় কি ভাবে। কেন আমার ভাইকে গলা কেটে হত্যা করলো।
মোবারকের অবুঝ দুটি বোন তানজিলা ও আমিনা নির্বাক তাকিয়ে কোন কথাই বলছে না।