বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি এবং তাঁর পিতা বঙ্গবন্ধু ও হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ঘনিষ্ঠ সহচর ভাষাবীর এমএ ওয়াদুদকে নিয়ে আবারো কট‚ক্তি করেছেন একই দলের সংসদ সদস্য মুহম্মদ শফিকুর রহমান।
ফরিদগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান ২৩ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদানকালে সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক একটি বিষয় উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি ও তাঁর পিতা মরহুম এমএ ওয়াদুদকে নিয়ে কটূক্তি করেছেন।
ফরিদগঞ্জের ২নং বালিথুবা পূর্ব ইউনিয়নের চররনবলিয়া এবং সদর উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের ছোটসুন্দর গ্রামের বগার গুদাড়া হচ্ছে ডাকাতিয়া নদীর এপার-ওপার। এই অংশে ডাকাতিয়ার উপর নির্মিত দীর্ঘ সেতুটি ভাষাবীর এমএ ওয়াদুদের নামে নামকরণ করা হয়। এমপি শফিকুর রহমান মঙ্গলবার ফরিদগঞ্জে ওই অনুষ্ঠানে এই সেতুর প্রসঙ্গ এনে শিক্ষামন্ত্রীর সমালোচনা করেছেন এবং এমএ ওয়াদুদকে নিয়ে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেছেন। এমপি শফিকুর রহমানের এমন বক্তব্যকে কাণ্ডজ্ঞানহীন আখ্যা দিয়ে বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দসহ দলের সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। অন্যথায় এমপি শফিকুর রহমানকে ফরিদগঞ্জে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হবে বলে নেতৃবৃন্দ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নব-নির্বাচিত পৌর মেয়র আবুল খায়ের পাটওয়ারীর বলেন, ওনার কথাবার্তা এ রকমই। দলের শীর্ষ নেতা শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এবং ছাত্রলীগের প্রথম নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ভাষাসৈনিক এমএ ওয়াদুদ সাহেবের ব্যাপারে এমপি শফিকুর রহমান যে বক্তব্য রেখেছেন তা খুবই দুঃখজনক এবং ঔদ্ধত্যপূর্ণ। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডঃ জাহিদুল ইসলাম রোমান বলেন, দলের এমপি হয়ে নিজ দলের শীর্ষ নেতা এবং একজন ভাষাবীর ও ছাত্রলীগের প্রথম নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদককে নিয়ে এমন বক্তব্য দিতে পারেন না। এটা দলের আদর্শ এবং শৃঙ্খলা পরিপন্থী। এমপি শফিকুর রহমানের এই বক্তব্যের দ্বারা বুঝা যায় তিনি দলের আদর্শ এবং শৃঙ্খলাকে কতটুকু মানেন। এমন বক্তব্যের দ্বারা তিনি দলের প্রতিটি নেতা-কর্মীর মনে চরম কষ্ট দিয়েছেন। আমি তাঁর এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং তাঁকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার জন্যে অনুরোধ করছি।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সাহেদ সরকার বলেন, এটা উনি চরম ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন। ডাঃ দীপু মনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তিনবারের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক সফল পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বর্তমান সরকারের শিক্ষামন্ত্রী। তাঁর পিতা এমএ ওয়াদুদ ছিলেন ছাত্রলীগের প্রথম নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক এবং একজন ভাষাসৈনিক। তাঁদের নিয়ে আওয়ামী লীগের এমপির ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্য দলের আদর্শের পরিপন্থী। আমি তাঁর এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
তিনি আরও বলেন, আমাদের মধ্যে মতের বিরোধ থাকতেই পারে। সেজন্যে দলের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে প্রকাশ্যে এভাবে বলাটা দলের শৃঙ্খলা পরিপন্থী এবং শিষ্টাচারবহির্ভূত।
এমপি শফিকুর রহমানের এমন কাণ্ডজ্ঞানহীন বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন ফরিদগঞ্জের আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা।
প্রসঙ্গত,এমপি শফিকুর রহমান গত বছর চাঁদপুর প্রেসক্লাবের এক অনুষ্ঠানে একইভাবে শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এবং তাঁর পিতা এমএ ওয়াদুদকে নিয়ে সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিকভাবে অশালীন মন্তব্য করেন। যার প্রতিবাদে প্রেসক্লাবের কার্যকরী কমিটির সভায় নিন্দা জানানো হয় এবং ভবিষ্যতে প্রেসক্লাবের কোনো অনুষ্ঠানে এমপি শফিকুর রহমানকে আমন্ত্রণ না জানানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।