যাদের বয়স ১৮ বছরের নিচে তাদের পাঁচ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট দেওয়া হবে। আর ১৮ বছরের বেশি বয়সী নাগরিকরা পাবেন ১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
এত দিন যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্ট পাওয়া যাচ্ছিল, যা মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট নামে পরিচিত। আগামী ১ জুলাই থেকে আরো আধুনিক ই-পাসপোর্ট ইস্যু করা হচ্ছে। এ পাসপোর্টের ডাটা থাকবে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের ডাটা বেইসেও। এ উদ্যোগ ২০১৭ সালে নেওয়া হলেও বিভিন্ন কারণে তা কার্যকর করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। কয়েক দফা পেছানোর পর অবশেষে ই-পাসপোর্টের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে ১ জুলাই থেকে নাগরিকদের ই-পাসপোর্ট সরবরাহ করা হবে।
ই-পাসপোর্ট প্রকল্পের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৫৬৯ কোটি টাকা। জার্মানির সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে অনেক আগেই। পৃথিবীতে ১১৯টি দেশ ই-পাসপোর্ট ব্যবহার হয়। বাংলাদেশও সেই দেশগুলোর সঙ্গে যুক্ত হতে যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নতুন পাঁচ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্টের জন্য ফি নির্ধারণ করা হয়েছে সাধারণ (২১ দিনে সরবরাহ করা হবে) ৩ হাজার ৫০০ টাকা। জরুরি ৫ হাজার ৫০০ টাকা (মিলবে সাত দিনে) আর অতি জরুরি ই-পাসপোর্টের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ হাজার ৫০০ টাকা (মিলবে এক দিনে)।
১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্টের জন্য ফি ৫ হাজার (২১ দিনের মধ্যে পাওয়া যাবে)। ৭ হাজার ফি (সাত দিনের মধ্যে মিলবে) ও অতি জরুরি ভিত্তিতে এক দিনের মধ্যেও ই-পাসপোর্ট মিলবে। আর এ জন্য ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ হাজার টাকা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব মুনিম হাসান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ই-পাসপোর্ট চালুর বিষয়ে প্রয়োজনীয় সব কাজ এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ই-পাসপোর্টের ফি নির্ধারণের জন্য কয়েক মাস আগে একটি ফি নির্ধারণ কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটি কয়েক দফা বৈঠক করে ফি চূড়ান্ত করেছে। তবে গতকাল পর্যন্ত তা চূড়ান্ত অনুমোদন হয়নি। দু-এক দিনের মধ্যেই চূড়ান্ত অনুমোদন হওয়ার কথা রয়েছে।
পাসপোর্ট অধিদপ্তর সূত্র জানায়, শুরুতে ২০ লাখ ই-পাসপোর্ট জার্মানি থেকে প্রিন্ট করিয়ে সরবরাহ করা হবে। এরপর আরো দুই কোটি ৮০ লাখ পাসপোর্ট বাংলাদেশে প্রিন্ট করা হবে। সে জন্য উত্তরায় কারখানা স্থাপন করা হবে। পরে ওই কারখানা থেকেই পাসপোর্ট ছাপানো অব্যাহত রাখা হবে।
বর্তমানে বই আকারে যে পাসপোর্ট আছে, ই-পাসপোর্টেও একই ধরনের বই থাকবে। তবে বর্তমানে পাসপোর্টের বইয়ের শুরুতে ব্যক্তির তথ্যসংবলিত যে দুটি পাতা আছে, ই-পাসপোর্টে তা থাকবে না। সেখানে থাকবে পালিমারের তৈরি একটি কার্ড। এই কার্ডের মধ্যে থাকবে একটি চিপ। সেই চিপে পাসপোর্টের বাহকের তথ্য সংরক্ষিত থাকবে।
পাসপোর্ট অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ই-পাসপোর্টে ৩৮ ধরনের নিরাপত্তা ফিচার থাকবে। বর্তমানে এমআরপি ডাটা বেইসে যেসব তথ্য আছে, তা ই-পাসপোর্টে স্থানান্তর করা হবে। ই-পাসপোর্ট চালু হলেই এমআরপি পাসপোর্ট বাতিল হবে না। তবে নতুন করে কাউকে এমআরপি পাসপোর্ট দেওয়া হবে না। যাদের এমআরপির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে তারা রিনিউ করতে গেলে ই-পাসপোর্ট নিতে হবে। এভাবে পর্যায়ক্রমে দেশ থেকে এমআরপি পাসপোর্টও বিলুপ্ত হয়ে যাবে।