মোহাম্মদ কামাল হোসেন,
দেশ শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক ও হাজীগঞ্জ পাইলট হাইস্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক কাজী মাহবুবুল আলম, ০৪ ডিসেম্বর ২০২২ খ্রিস্টাব্দ তারিখ জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট,গোপালগঞ্জ হিসেবে যোগদান করেন। এই পদে যোগদানের পূর্বে তিনি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে উপসচিব হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
কাজী মাহবুবুল আলম ২০০৫ সালে বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের ২৪তম ব্যাচে কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। এরপর তিনি কুষ্টিয়া ও নোয়াখলীর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সহকারী কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১০ সালে তিনি সিনিয়র সহকারী কমিশনার হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে নোয়াখালী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নেজারত ডেপুটি কালেক্টর এর দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি ২০১১-১৭ সাল পর্যন্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে যথাক্রমে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার নানিয়ারচর উপজেলায়, লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলায় এবং চট্টগ্রাম জেলার বোয়ালখালী উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০১১ সালে ‘‘একটি বাড়ী একটি খামার (বর্তমানে আমার বাড়ী আমার খামার)’’ কর্মসূচিতে রাঙ্গমাটি পার্বত্য জেলার শ্রেষ্ঠ উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে নির্বাচিত হন।
২০১৭ সালে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে নোয়াখালী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি নোয়াখালীতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ২০১৮ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের উন্নয়ন মেলার অংশ হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ১০টি উদ্যোগের বিষয়ে থিমসং রচনা করেন।
২০১৮ সালে উপসচিব হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণলয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগে যোগদান করেন। ২০২০ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটিতে দায়িত্ব পালন করেন। উক্ত দায়িত্ব পালনকালে তিনি বঙ্গবন্ধুর উপর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক সম্পাদিত বাংলা ও ইংরেজিতে প্রকাশিত দু’টি স্মারক গ্রন্থের সহকারী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। কাজী মাহবুবুল আলম চাকুরী জীবনে দায়িত্ব পালনকালে কার্য উপলক্ষে ভারত, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, চীন, জাপান, স্পেন, ফ্রান্স ও ইতালি সফর করেন।
কাজী মাহবুবুল আলম ০২ ডিসেম্বর ১৯৭৫ সালে চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৯০ সালে এসএসসি পরীক্ষায় কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে সম্মিলিত মেধা তালিকায় ৪র্থ স্থান লাভ করেন। ১৯৯২ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে মানবিক বিভাগে সম্মিলিত মেধা তালিকায় ৮২৪ নম্বর পেয়ে ১ম স্থান প্রাপ্তির পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন তাঁর প্রিয় ব্যক্তিত্ব বঙ্গবন্ধু (দৈনিক খবর, ১০ অক্টোবর ১৯৯২) যা তার বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চেতনার প্রতি আস্থার অবিচল প্রতীক।
কাজী মাহবুবুল আলম পিতা কাজী বজলুল হক আমৃত্যু হাজীগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। তিনি চাঁদপুর জেলার একজন বরেণ্য নিবেদিত প্রাণ শিক্ষাবিদ হিসেবে সর্বমহলে সমাদৃত ছিলেন। শিক্ষকতায় তাঁর নিষ্ঠা, সততা ও অবদানের জন্য ১৯৯৮ সালে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক হিসেবে পুরস্কৃত হয়ে তৎকালীন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট হতে স্বর্ণপদক ও সনদপত্র গ্রহণ করেন। তার মাতা বেগম তফুরুন নেছা একজন আদর্শ গৃহিনী ছিলেন। তার বড় ভাই কাজী আনোয়ারুল হক হেলাল চাঁদপুর জেলার (হাজীগঞ্জ- শারাস্তি) থানা ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে ১৯৭৯ – ৮৪ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।
এছাড়া তিনি উপজেলা যুবলীগের সভাপতি হিসেবে ১৯৮৫ – ৮৮ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার মেঝ ভাই ডা: কাজী মোস্তফা সারোয়ার পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষে চাকুরী থেকে অবসরে যান। তারপর তিনি স্বাধীনতা চিকিৎসা পরিষদের চাঁদপুর জেলার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য ছিলেন। তার একমাত্র বোন তানজিয়া ফেরদৌস সরকারি বিজ্ঞান কলেজ, ঢাকা এর ভাইস প্রিন্সিপাল হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
কাজী মাহবুবুল আলম ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত। তিনি এক কন্যা সন্তানের জনক। তার স্ত্রী কানিজ ফাতিমা মিতু একটি অন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত।