দ্বিতীয় দফায় ৬০ পৌরসভা নির্বাচনে কয়েকটি স্থানে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ শেষে বিজয়ীদের নাম আসতে শুরু করেছে। অধিকাংশ পৌরসভায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা জয়লাভ করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
দেশের সবচেয়ে আলোচিত নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবদুল কাদের মির্জা বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন। তিনি মোট ভোট পেয়েছেন ১০ হাজার ৭৩৮টি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী (ধানের শীষ) কামাল উদ্দিন চৌধুরী পেয়েছেন এক হাজার ৭৭৮ ভোট।
খাগড়াছড়িতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নির্মলেন্দু চৌধুরী বেসরকারিভাবে মেয়র পদে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ৯০৩২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র রফিকুল আলম পেয়েছেন ৮৭৪৯ ভোট।
মোংলা পোর্ট পৌরসভায় আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আব্দুর রহমান বিজয়ী হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ১২ হাজার ১২৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের জুলফিকার আলী। তিনি পেয়েছেন ৫৯২ ভোট।
শরীয়তপুরে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শরীয়তপুর জজ কোর্টের এপিপি এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী পারভেজ রহমান জন বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন।
ঢাকার সাভারে আবারও নৌকার মাঝি হয়েছেন বর্তমান মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী আবদুল গণি। তিনি ৫৬ হাজার ৮০৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি মনোনীত আলহাজ মো. রেফাত উল্লাহ ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ৫ হাজার ৩০৩ ভোট।
টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী (স্বতন্ত্র) মনিরুজ্জামান বকল ১ হাজার ১৫৯ ভোট বেশি পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন।
সুনামগঞ্জের তিনটি পৌরসভার মধ্যে দুটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও একটিতে বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা জয়লাভ করেছেন। সুনামগঞ্জ পৌরসভায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী নাদের বখত নৌকা প্রতীকে ২১ হাজার ৬৮৬ ভোট পেয়েছেন। ছাতকে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আবুল কালাম নৌকা প্রতীকে ১২ হাজার ৮২৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। এছাড়া জগন্নাথপুর পৌরসভায় বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আক্তারুজ্জামান আক্তার হোসেন চামচ প্রতীকে ৮ হাজার ৩৭৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন।
গাইবান্ধা পৌরসভায় আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী মতলুবর রহমান ১২ হাজার ৩৯৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। অপরদিকে জেলার সুন্দরগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে লাঙল প্রতীক নিয়ে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আব্দুর রশিদ রেজা সরকার দুই হাজার ৭০৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন।
গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত আনিছুর রহমান নৌকা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২৩ হাজার ৪৮৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী অ্যাডভোকেট কাজী খান পেয়েছেন ১০ হাজার ৯৬টি ভোট।
নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর পৌরসভা নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে রেজাউল কবির চৌধুরী ৭ হাজার ৬৮৫ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন।
পাবনা জেলার চার পৌরসভায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা জয়লাভ করেছেন। সাঁথিয়ায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নৌকা প্রতীকের মাহবুবুল আলম বাচ্চু ১৬ হাজার ৩৮৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। ঈশ্বরদীতে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকে ইছাহক আলী মালিথা ২৮ হাজার ৫৮২ ভোট পেয়েছেন। পাবনার ফরিদপুর পৌরসভায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী খ ম কামরুজ্জামান মাজেদ নৌকা প্রতীকে ৫ হাজার ২৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। অপরদিকে ভাঙ্গুড়া পৌর নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন গোলাম হাসনাইন রাসেল।
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী পৌরসভায় স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ হোসেন ফাকু নারকেল গাছ প্রতীক নিয়ে ১১ হাজার ৯৭৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
বগুড়ায় তিনটি পৌরসভায় ঘোষিত ফলে একটিতে আওয়ামী লীগ, একটিতে বিএনপি ও অপরটি বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। সারিয়াকান্দি পৌরসভায় আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মতিউর রহমান মতি ৬ হাজার ৫৭৪ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। সান্তাহার পৌরসভা নির্বাচনে তৃতীয়বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন বিএনপি প্রার্থী (ধানের শীষ) তোফাজ্জল হোসেন ভুট্টু। তিনি পেয়েছেন ৭ হাজার ৭৮৮ ভোট। শেরপুর পৌরসভায় স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপির বিদ্রোহী ও দল থেকে বহিষ্কৃত সাবেক মেয়র জানে আলম খোকা বিজয়ী হয়েছেন।
সিরাজগঞ্জের চারটি পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে তিনটিতে আওয়ামী লীগ ও একটিতে স্বতন্ত্র (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) প্রার্থী বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। সিরাজগঞ্জ সদরে সৈয়দ আব্দুর রউফ মুক্তা, উল্লাপাড়ায় এস এম নজরুল ইসলাম ও রায়গঞ্জে আব্দুল্লাহ আল পাঠান দ্বিতীয়বারের মতো বিজয়ী হয়েছেন। তারা সবাই নৌকার দলীয় প্রার্থী। শুধু বেলকুচিতে প্রথমবারের মতো আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সাজ্জাদুল হক রেজা নির্বাচিত হয়েছেন।
চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোক্তাদির মাওলা সেলিম ১৭ হাজার ৭১৬ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন।
নাটোরের গোপালপুর ও গুরুদাসপুর পৌরসভায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। গোপালপুর পৌরসভায় রোকসানা মোর্ত্তজা লিলি নৌকা প্রতীকে ৬ হাজার ৭৭৮ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। গুরুদাসপুর পৌরসভায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহনেওয়াজ আলী মোল্লা নৌকা প্রতীকে ৭ হাজার ৬৪০ ভোট পেয়ে তৃতীয় বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। নাটোরের নলডাংগা পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন।
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া ও কমলগঞ্জ পৌরসভায় আওয়ামী লীগ মনোনীত উভয় প্রার্থীই বিজয়ী হয়েছেন। চার হাজার ৮৩৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে কুলাউড়া পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন অধ্যক্ষ সিপার উদ্দিন আহমদ। অপরদিকে পাঁচ হাজার ২৫৭ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে কমলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন জুয়েল আহমেদ।
ঝিনাইদহের শৈলকুপা পৌরসভা নির্বাচনে কাজী আশরাফুল আজম (আ. লীগ প্রার্থী) ১০৮৮৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
নেত্রকোনার কেন্দুয়া পৌর নির্বাচনে আসাদুল হক ভূইয়া (আ. লীগ মনোনীত) ৯১৭৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। নরসিংদীর মনোহরদী পৌরসভা নির্বাচনে মোহাম্মদ আমিনুর রশিদ সুজন (আ.লীগ মনোনীত) ৮৮৮২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ পৌরসভায় অ্যাডভোকেট লতিফুর রহমান রতন (আ.লীগ মনোনীত) ৯৪৫৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। বান্দরবানের লামা পৌরসভা নির্বাচনে মো. জহিরুল ইসলাম (আ.লীগ মনোনীত) ৯ হাজার ৪০৫ ভোট পেয়েছেন।
ফরিদপুরের বোয়ালমারী পৌর নির্বাচনে সাংবাদিক সেলিম রেজা লিপন (আ.লীগ মনোনীত) ৯২৩৯ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
দিনাজপুরের বিরামপুর পৌর নির্বাচনে সাবেক পৌর চেয়ারম্যান আক্কাস আলী (আ. লীগ) ১৫৩৮৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা পৌরসভায় বিল্লাল হোসেন সরকার (আ. লীগ) ১৭ ৩২০ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। ফুলবাড়িয়া পৌরসভায় গোলাম কিবরিয়া (আ. লীগ) ৫৬৩৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
কুষ্টিয়া পৌরসভায় আনোয়ার আলী (আ. লীগ) ৬৬ হাজার ৫২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। জেলার মিরপুর পৌরসভায় এনামুল হক (আ.লীগ) ১০ হাজার ৪৬৮ ভোট, কুমারখালী পৌরসভায় শামসুজ্জামান অরুন (আ. লীগ) ১০ হাজার ১২০ ভোট এবং ভেড়ামারা পৌরসভায় আনোয়ারুল কবির টুটুল (জাসদ প্রার্থী) ৮ হাজার ৮৩০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
কুমিল্লার চান্দিনা পৌরসভায় মো. শওকত হোসেন ভূঁইয়া (আ. লীগ) নির্বাচিত হয়েছেন ৯৪৫১ ভোট পেয়ে।