অনলাইন ডেস্ক :
তিন আসনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রার্থিতা নিয়ে রিটের শুনানি আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত মুলতবি করেছেন হাইকোর্ট।
আদালতের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার বিচারপতি জেবিএম হাসানের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ মামলাটি মঙ্গলবার পর্যন্ত মুলতবির আদেশ দেন।
খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আদালতকে জানান, এই আদালতের ওপর অনাস্থার আবেদনপত্রটি অ্যাফিডেভিট করা সম্ভব হয়নি।তাই অ্যাফিডেভিট করতে আদালতে তারা সময় প্রার্থনা করেন।
পরে শুনানি মঙ্গলবার পর্যন্ত মুলতবির আদেশ দেন। আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল ও মীর হেলাল।
সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট ফারুক হোসেন, ব্যারিস্টার একেএম এহসানুর রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।
হাইকোর্টের বিচারপতি জেবিএম হাসানের নেতৃত্বাধীন একক বেঞ্চে এ শুনানি সোমবার সকালে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আদালতের প্রতি অনাস্থা জানান। পরে দুপুর ২টা পর্যন্ত আদালত মুলতবি ঘোষণা করা হয়।
দুপুরে শুনানি করতে গেলে আদালতের প্রতি অনাস্থা জানান খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল। এরপর আদালত প্রধান বিচারপতি বরাবর লিখিত আবেদন করার জন্য নির্দেশ দেন। পাশাপাশি আদালত আগামীকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত (নট টুডে) মুলতবি ঘোষণা করা হয়।
এর আগে গত বৃহস্পতিবারও একক বেঞ্চের প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপন করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। তারা আদালত থেকে বেরিয়ে যান।
ওই দিন আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী ও বদরুদ্দোজা বাদল।
এ বিষয়ে আইনজীবী বদরুদ্দোজা বাদল জানিয়েছিলেন-আমাদের এই আদালতের প্রতি কোনো আস্থা নেই। সৈয়দ রেফাত আহমেদ ছিলেন জ্যেষ্ঠ বিচারপতি। সুপ্রিমকোর্টের বিধান হল-একজন জ্যেষ্ঠ বিচারপতি যদি কোনো মামলার শুনানি করেন, তবে জুনিয়র কোনো বিচারপতি ওই মামলায় আর শুনানি করতে পারবেন না। সেজন্য এই আদালতের প্রতি অনাস্থা জানিয়েছি।
এর আগে বুধবার প্রধান বিচারপতি খালেদা জিয়ার তিনটি রিট শুনানির জন্য হাইকোর্ট বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি জেবিএম হাসানের নেতৃত্বে একক বেঞ্চ গঠন করে দেন।
মামলার সব নথি বুধবার বিকালেই ওই বেঞ্চে পাঠানো হয়। শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় সময় নির্ধারণ করেন হাইকোর্টের ওই বেঞ্চ।
খালেদা জিয়া ফেনী-১, বগুড়া-৬ ও বগুড়া-৭ আসনে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। যাচাই-বাছাই শেষে তিনটি আসনের মনোনয়নপত্রই বাতিল করেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা।
৮ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনে আপিলের শুনানির পর সংখ্যাগরিষ্ঠের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে খালেদা জিয়ার তিনটি আসনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদার নেতৃত্বে চার সদস্যের নির্বাচন কমিশন এ সিদ্ধান্ত দেন। শুনানিতে প্রার্থিতা বহালের পক্ষে মত দেন কমিশনার মাহবুব তালুকদার।
এর বিপক্ষে মত দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ চারজন। রিটার্নিং অফিসারের এ সিদ্ধান্ত ও নির্বাচন কমিশনের আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে খালেদা জিয়ার পক্ষে রোববার তিনটি রিট করা হয়।
সোমবার শুনানি শেষে আদেশের জন্য মঙ্গলবার দিন ধার্য করেন বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ।
মঙ্গলবার খালেদা জিয়ার পৃথক তিনটি রিটের ওপর বিভক্ত আদেশ হয়। বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ইসিকে খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়ে রুল জারি করেন।
খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিলের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয় রুলে। বেঞ্চের ওপর বিচারপতি মো. ইকবাল কবির এতে দ্বিমত পোষণ করেন। আদালত পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য বিষয়টি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানোর আদেশ দেন।
প্রসঙ্গত দুই মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড নিয়ে ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে আছেন খালেদা জিয়া।