ঐতিহ্যবাহী কচুয়া বঙ্গবন্ধু সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ শাহ্ মো. জালাল উদ্দিন চৌধুরী প্রায় ৩৪ বছরের শিক্ষকতা জীবন শেষে ২৪ এপ্রিল শনিবার সফলতা ও দক্ষতার সাথে চাকুরী থেকে অবসর গ্রহণ করেছেন।
তিনি কচুয়া বঙ্গবন্ধু সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে ২৪ এপ্রিল শেষ কর্ম-দিবস পালন করেছেন। অত্যান্ত দু:খজনক হলেও সত্য শেষ কর্মদিবসে অসুস্থ্যতার কারনে তিনি কলেজে উপস্থিত হতে পারেন নি।
অধ্যক্ষ জালাল চৌধুরী দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় থেকে বাংলা অনার্স মাস্টার্স শেষ করে ১৯৮৭ সালে বলাখাল মকবুল আহমেদ ডিগ্রি কলেজের প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পেয়ে শিক্ষকতা জীবন শুরু করেন।
পরবর্তীতে ওই কলেজ থেকে তিনি সহকারী অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি পান এবং সর্বশেষ ২০১২ সালে তিনি অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দেন কচুয়া বঙ্গবন্ধু ডিগ্রি কলেজে। দীর্ঘ ৯ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি কলেজের সুনামের সহিত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। শাহ মো.জালাল উদ্দিন চৌধুরীর আমলেই বিগত দু’বছর আগে সরকারি করণ করা হয় কচুয়া বঙ্গবন্ধু ডিগ্রি কলেজটি। নয়া সরকারি কলেজটির প্রথম অধ্যক্ষ হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি এ কলেজের হাল ধরার পর কলেজের শিক্ষা-দ্বীক্ষায় পরিবর্তন-সাফল্য অর্জনসহ কলেজের ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে।
তাঁর জন্ম চাঁদপুর সদর উপজেলার ৬নং মৈশাদী ইউনিয়নের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে।
অধ্যক্ষ শাহ মো.জালাল চৌধুরী পেশায় শিক্ষক হলেও তিনি তার সুদীর্ঘ কর্ম-জীবনে সাংবাদিকতার সাথে জড়িত হন। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে তাঁর এক প্রিয় বন্ধুর সাপ্তাহিক একটি কাগজ দিয়ে লেখালেখি শুরু করেন তিনি। পরে চাঁদপুরে আসার পর ১৯৯১ সালে থেকে তিনি দৈনিক জনকন্ঠের প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে চাঁদপুর জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ শুরু করেন, আজ পর্যন্ত তিনি কাগজটিতে চাঁদপুর জেলা প্রতিনিধি হিসেবে লিখছেন। সর্বোপরী তিনি চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছিলেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, অনেকদিন ধরেই জালাল চৌধুরী খুবই অসুস্থ। বিছানা ছেড়ে দাঁড়াতেও তাঁর কষ্ট হচ্ছে। তবে আগের চেয়ে এখন কিছুটা ভালো রয়েছেন। তার স্ত্রী খাদিজা পারভীন শিমন শিক্ষকতায় পেশায় জড়িত। পুরান বাজার ডিগ্রি কলেজে ইসলামি ইতিহাস বিভাগের সিনিয়র প্রভাষক হিসেবে কর্মরত। তিন ছেলে সন্তানের জনক এই দম্পতি।
ফেসবুকে এক স্ট্যাস্টার্সে তিনি তার অবসরকালীন অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, আমার নিজের অজান্তে কিংবা জেনে শুনেও যদি আমার ২টি প্রতিষ্ঠানের সহকর্মীরা আমার ব্যবহারে ব্যথা পান, তাহলে আমায় ক্ষমা করবেন।
তিনি আরো বলেন, শিক্ষকতা একটি মহান পেশা। এখানের কাজ একটি টিম ওয়ার্ক। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে,নিজ সহকর্মীর কাজ থেকে সন্মান শ্রদ্ধা পাওয়া যায়, সেটি অন্য পেশায় মিলে না। আছে তৃপ্তি,আছে গর্ব করার জায়গা। আর সেটি হচ্ছে নিজের ছাত্ররা যখন দেশে-বিদেশে সুনাম কুড়ায়।
তিনি আরো বলেন, মহান শিক্ষকতার পেশায় কাজ করতে গিয়ে সকল শ্রের্নী পেশার মানুষের সহযোগিতা পেয়েছি। বিশেষ কচুয়ার জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা,ব্যবসায়ী ও সাংবাদিকদের সার্বিক সহযোহিতা মনে রাখার মতো। আমি সকলের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান জানাই।
অবসরকানীন জীবনে তিনি মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে সালাত আদায়সহ আরো বেশি ভালো কাজ করতে তিনি সকলের দোয়া চেয়েছেন।