দুপুরে রাজধানীর মহাখালী রেলক্রসিং এলাকায় পুলিশ চেকপোস্টে এ ঘটনা ঘটে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, এ ঘটনায় অভিযোগ দেয়া হলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রাজধানীতে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে পুলিশের হাতে হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন অনলাইন নিউজ পোর্টাল সারাবাংলা ডটনেটের সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট এমদাদুল হক তুহিন। তার দাবি, সড়কে লকডাউন পরিস্থিতি নিয়ে সরেজমিনে ছবি তোলার সময় দুই পুলিশ সদস্য তার কলার চেপে ধরেন এবং মোবাইল কেড়ে নেন। পরে ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা এসে তুহিনকে তার মোবাইল ফোন ফেরত দেন।
এমদাদুল হক তুহিন বলেন, ‘মহাখালী রেলগেটে চেকপোস্ট বসিয়ে তৎপরতা চালাচ্ছিল পুলিশ। চালকের সঙ্গে আরোহী থাকলেই থামানো হচ্ছিল মোটরসাইকেল। এ সময় কিছু মোটরসাইকেল পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে চেকপোস্ট পেরিয়ে যাচ্ছিল। সেই বাহনগুলোকে থামাতে আনোয়ার নামের এক কনস্টেবল লাঠি দিয়ে অমানবিকভাবে আঘাত করছিলেন। এতে অনেক আরোহীকে পড়ে যেতেও দেখা গেছে।’
‘স্বাভাবিকভাবেই সাংবাদিক হিসেবে হাতে থাকা মোবাইল ফোন দিয়ে সেই ছবি তুলতে থাকি। এতে কনস্টেবল আনোয়ার ক্ষিপ্ত হয়ে আমার দিকে তেড়ে আসেন। পেছন দিক থেকে আমার কলার চেপে ধরেন তেজগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শরিফুল ইসলাম। সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর শরিফুল কলার থেকে সঙ্গে সঙ্গে হাত নামিয়ে ফেলেন। কিন্তু আনোয়ার আমার ওপর চড়াও হন এবং আমাকে দেখে নেয়ার হুমকি দেন।’
তুহিন বলেন, ‘পরে জোর করে আমার হাত থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়া হয়। এতে হাতে ব্যথা পাই ও মোবাইলের স্ক্রিন ফেটে যায়। প্রায় ১৫ মিনিট আমাকে আটকে রাখার পর ঘটনাস্থলে তেজগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শাহ আলম এসে উপস্থিত হন। তিনি ঘটনা শুনে মোবাইল ফোন ফেরত দেন।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তেজগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শাহ আলম জাগো নিউজকে বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি উপস্থিত ছিলাম না। পরে সেখানে গিয়ে জানতে পারি, একজন সাংবাদিক পরিচয় দেয়া ব্যক্তি মোবাইলে ছবি ও ভিডিও করছিলেন। এ সময় ওই সাংবাদিকের মাস্ক মুখ থেকে নামানো ছিল। সাংবাদিক পরিচয় দিলেও ছবি তোলার সময় তার গলায় কার্ড ছিল না।’
তিনি বলেন, ‘একজন পুলিশ সদস্যের দায় সবার ওপর বর্তায় না। কেউ অন্যায় করে থাকলে থানায় অভিযোগ দিলে আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’
এদিকে, পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিক এমদাদুল হক তুহিনকে হয়রানির প্রতিবাদ জানিয়েছে বৃহত্তর ময়মনসিংহ রিপোর্টার্স ফোরাম (জিএমআরএফ)। সংগঠনটির তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক তুহিনকে হয়রানির সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি দাবিও করেছে সংগঠনটি।
জিএমআরএফের সভাপতি কবির আহমেদ খান ও সাধারণ সম্পাদক রুকনুজ্জামান অঞ্জনের পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘লকডাউন চলাকালে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী গণমাধ্যমকর্মীসহ বিভিন্ন পেশাজীবী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে আরও দায়িত্বশীল আচরণ করবে, যেন কোনোভাবেই কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণের কারণে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন না হয়।’