আইনমন্ত্রীর বক্তব্যের জবাবে বিএনপি
খালেদা জিয়ার ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নই আসে না
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া অপরাধই করেননি, ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নই আসে না বলে জানিয়েছে বিএনপি।
নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সংক্রান্ত এক সংবাদ সম্মেলনে দলের দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, যিনি (খালেদা জিয়া) কোনো অপরাধই করেননি, তার ক্ষমা চাওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। আইনমন্ত্রীর বক্তব্যের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী সরকারের হীনরাজনৈতিক উদ্দেশ্যের প্রতিফলন ঘটেছে, যা ভ্রষ্টাচার ছাড়া কিছুই নয়।
বিএনপির এ নেতা বলেন, আমরা সরকারকে ছলচাতুরী ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা পরিহার করে দেশের সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় নেত্রী, তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে তার সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করতে পুনরায় আহ্বান জানাচ্ছি।
সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন,আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন— বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে হলে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের দোষ স্বীকার করে ক্ষমা চাইতে হবে। আইন অনুযায়ী, খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার আর কোনো পথ খোলা নেই। আইনমন্ত্রীর এ বক্তব্যে সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসা এবং খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার ক্ষেত্রে সরকারের ইচ্ছাকৃত প্রতিবন্ধকতার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। যদিও এর আগে পরিবারের পক্ষ থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে যেতে আবেদন করা হলে আইনমন্ত্রী বলেছিলেন— ‘সরকার যে শর্তে তাকে মুক্তি দিয়েছেন, সেই শর্ত শিথিল করলে খালেদা জিয়ার বিদেশে যেতে আইনগত কোনো বাধা থাকে না। কিন্তু এর ২/১ দিন পরই তিনি ইউটার্ন নিয়ে বলেছেন— ‘সম্ভব নয়’ এবং এখন বলছেন— ‘ক্ষমা চাইতে হবে’। এগুলো সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশ এবং রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রিত ও কলূষিত করার ব্যর্থ চেষ্টা ছাড়া কিছুই নয়। যিনি কোনো অপরাধই করেননি, তার ক্ষমা চাওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না।
বিএনপির এ নেতা বলেন, আইনমন্ত্রীর এই বক্তব্যের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী সরকারের হীনরাজনৈতিক উদ্দেশ্যের প্রতিফলন ঘটেছে, যা ভ্রষ্টাচার ছাড়া কিছুই নয়। কর্তৃত্ববাদী সরকার যখন যেটি মনে করে, তখন সেটি জনগণের ওপর চাপিয়ে দেয় এবং একই সঙ্গে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালায়। বেগম খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রেও তাই ঘটছে। আমরা আইনমন্ত্রীর সংসদে প্রদত্ত বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা দূর করার আহ্বান জানাচ্ছি।
সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার কোভিডপরবর্তী জটিলতা নিরসন হলেও বর্তমানে তিনি লিভার, কিডনি ও হার্টের বিভিন্ন জটিলতায় তীব্র অসুস্থ অবস্থায় নিজ বাসভবনে চিকিৎসাধীন। তার চিকিৎসার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দ্বারা গঠিত মেডিকেল বোর্ড উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে আরও উন্নত সেন্টারে চিকিৎসার পরামর্শ দিয়েছেন, যা বাংলাদেশে সম্ভব নয়। এ অবস্থায় সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উন্নত ও সুচিকিৎসা জনগণের প্রাণের দাবি।
বিএনপি এই নেতা বলেন, সরকার খালেদা জিয়াকে ভয় পায়, ভয় পায় তার জনপ্রিয়তা ও নেতৃত্বকে। এ জন্যই তারা ফরমায়েশী রায়ের ওপর ভিত্তি করে বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে আটকে রেখে তাকে রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে এবং তার উন্নত চিকিৎসার পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে তাকে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে চায়। খালেদা জিয়ার কিছু হলে তার সব দায়দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে। ক্ষমতা জবরদখলকারী সরকারের মন্ত্রীরা রাজনৈতিক হীনউদ্দেশ্যে আইনের অপব্যাখ্যা দিয়ে নিজেদের রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলসহ বিরোধী দল ও জনগণকে নেতৃত্বশূন্য করার ষড়যন্ত্র করছে, এটি জনগণ বরদাশত করবে না।