করোনার প্রভাবে বদলেছে মানুষের রুচি, বদলেছে খাদ্যাভাস। পুষ্টির কথা বিবেচনা করে, ভাজা পোড়ার বদলে বর্তমানে চাহিদার তুঙ্গে অবস্থান করছে দেশীয় ফল। রমজানে কদর বেড়েছে তরমুজ, কলা, বেলসহ নানা রকমের মৌসুমী ফলের। চাহিদা বাড়লেও ‘লকডাউনে’ সরবরাহ কম থাকাসহ নানা অজুহাতে দেশি-বিদেশি সব ফল কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। এতে, ফল কিনতে গিয়ে বেকায়দায় পড়ছেন, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষেরা।
পবিত্র রমজানে সারাদিনের ক্লান্ত শরীরকে চাঙা করতে, ইফতারে বাহারী ফলের স্বাদ নিতে চান রোজাদাররা । দেশীয় ফলের মৌসুম চলায় তরমুজ, বাঙ্গি, বেল, আনারস, কাঁচা আম’সহ নানান ফলের সমাহার বাজারে। বাজারে এতো এতো ফল থাকলেও তেমন একটা স্বস্তির খবর নেই সীমিত আয়ের মানুষদের জন্য। ফলের ভরা মৌসুমে বাড়তি দাম হাকিয়ে, ক্রেতা সাধারণের পকেট কাটছে বিক্রেতারা।
আজ বুধবার (৫ মে) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, হাতিরপুল বাজার, বাইতুল মোকাররমসহ বিভিন্ন ফলের বাজার ঘুরে প্রায় সব ফলের দামেই উর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা গেছে।
বাজারে সাধারণ মানের তরমুজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬৫ টাকায়। ভালো মানেরগুলো বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়। এতে বড় আকারের (৮ কেজি) একটি তরমুজ কিনতে ৫০০ টাকার মতো লাগছে। মোটামুটি বড় আকৃতির ভালো মানের ডাব কিনতে হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকায়, ছোট আকৃতির বেল ৫০ আর বড়টা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। এছাড়া প্রতি ডজন সবরি কলা বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। এছাড়া ভাঙ্গি, আনারস, মালতা, আপেল, আঙ্গুর, পেয়ারাসহ সব রকম ফলেই আগের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
কারওয়ান বাজারে ফল কিনতে আসা হালিমা বেগম আরটিভি নিউজকে বলেন, বাজারে সব ফলের দাম বেশি। এখন বাজারে মৌসুমী ফল দিয়ে ভরপুর। তারপরও বিক্রেতারা বলেছে বাজারে তেমন ফলের সরবরাহ নেই। লকডাউনের দোহাই দিয়ে আমাদের পকেট কাটা হচ্ছে। সাইফুল ইসলাম নামের এক গার্মেন্টকর্মী বলেন, সব কিছুর দাম বেশি। ছোট মেয়ে আবদার করছে ফল খাবে। কিন্তু বাজারে এসে দাম দেখে ফল কেনার সাহস পাচ্ছি না।
তিনি বলেন, সরকারের উচিত নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের মাধ্যমে দেশি ফলের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা।ক্রেতারা বাড়তি দামের কথা বললেও মানতে নারাজ বিক্রেতারা। তাদের দাবি, লকডাউনের সুযোগে মধ্যসত্বভোগীদের কারসাজিতে বাজারে বেড়েছে ফলের দাম।
খুচরা ফল বিক্রেতা আলামিন আরটিভি নিউজকে বলেন, প্রতি বছর রমজান আসলে আমাদের দেশের প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়ে যায়। বেশি দামে ফল বিক্রির পেছনে আমাদের কোনো হাত নেই। আড়ত থেকেই আমাদের বেশি দামে ফল কিনতে হচ্ছে। কাউছার নামের আরেক ফল বিক্রেতা বলেন, লকডাউনের কারণে গাড়ি ভাড়া বাড়ছে। আগে যে যায়গায় ৫ ট্রাক মাল আসতো এখন সেখানে ৩ ট্রাক মাল আসছে। তাই ফলের দাম বাড়তি।