কচুয়ায় সামাজিক অবক্ষয় রোধ ও সমাজ উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে কিশোর-কিশোরী ক্লাব। কচুয়া উপজেলায় কিশোর-কিশোরীদের নিয়ে গঠিত ১৩টি ক্লাবের সদস্যের কাজের ফলে বৈষম্য প্রতিরোধ, বাল্যবিবাহ ইভটিজিং, নারী নির্যাতন, শিশু নির্যাতন ও বখাটেদের দমনে এ ক্লাবের সদস্যরা এক সাথে কাজ করে চলেছেন।
সরকার কিশোর কিশোরীদের জেন্ডার ভিত্তিক বৈষম্য প্রতিরোধ এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে কিশোর কিশোরীদের বৈষম্য দূর করতে এ প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। এটি মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্প।
এ কিশোর কিশোরী ক্লাবের সহযোগিতা করতে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ও সমাজকর্মীসহ ১৩ সদস্যের একটি শিশু সুরক্ষা কমিটি রয়েছে। এলাকার বাল্য বিবাহ বন্ধ, ইভটিজিং রোধ, মাদকাসক্ত নিরাময় ও শিশু শ্রমসহ বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা বন্ধ করে এলাকায় প্রসংশা কুড়িয়েছে। সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি খেলাধুলাসহ শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক উন্নয়নের জন্য কাজ করছে এ ক্লাব। এছাড়াও সরকারি দিবসে বিভিন্ন প্রতিযোগীতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন কিশোর কিশোরী ক্লাবের সদস্যরা।
কিশোর কিশোরী ক্লাবের সদস্য মারুফ হোসেন কিশোর বলেন, এ ক্লাবের সদস্য হয়ে বাল্য বিবাহ, ইভটিজিং, মাদক, শিশু শ্রম, শিশু নির্যাতন, যৌন নির্যাতনসহ ২২টি সামাজিক ব্যাধির কুফল সম্পর্কে জানতে পারি। যার ফলে আমরা এসব থেকে নিজেরা এড়িয়ে থাকি। সঙ্গে অন্য কেউ যদি এসব কাজ করতে যায় আমরা বাঁধা প্রদান করি এবং তাকে বুঝিয়ে এসব কাজ থেকে বিরত রাখি। যার ফলে এলাকায় বাল্য বিবাহ, শিশু শ্রম ও শিশু নির্যাতন অনেকাংশে কমেছে। বৃদ্ধি পেয়েছে সামাজিক ইতিবাচক কাজ।
কচুয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা সমিতির সভাপতি ও দরবেশগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.তাজুল ইসলাম বলেন, আমরা শিশুবান্ধব কিশোর-কিশোরী ক্লাবের সদস্যদের নিয়ে সচেতনতামূলক বিভিন্ন সভা করি। ওই সভার মাধ্যমে ক্লাবের সদস্যরা যেমন উপকৃত হচ্ছে তেমনই এলাকার মানুষও অনেক সচেতন হচ্ছেন। যার ফলে এলাকায় সামাজিক উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে। কমেছে বাল্য বিবাহ, শিশু ও যৌন নির্যাতনের মত সামাজিক ব্যাধি।
এছাড়াও শিশুর প্রতি সংবেদনশীলয়ে শিশু সুরক্ষায় সামাজিক উদ্যোগ গ্রহণ করছেন অনেকে। আমি একজন শিক্ষক হিসেবে মনে করি সারা বাংলাদেশে এ ধরনের কিশোর-কিশোরী ক্লাব গঠন করা উচিত।
কচুয়া উপজেলার উত্তর কচুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী জহিরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর বলেন, কিশোর-কিশোরী ক্লাব গঠনে এলাকার সর্বস্তরে সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ওই ক্লাবের সদস্যদের সহযোগিতার পাশাপাশি উৎসাহ দেয়ার জন্য আমার ইউনিয়ন পরিষদের সকল সদস্যদের বলা রয়েছে। স¤প্রতি আমার এলাকায় একটি ক্লাবে নিয়মিত কাজ পরিচালনার জন্য সোলার স্থাপন করে দিয়েছি। এভাবে যদি আরও সংগঠন এগিয়ে আসে তাহলে দ্রুত সামাজিক অবক্ষয় রোধ করা সম্ভব।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মৃনালিনী কর্মকার বলেন,কিশোর-কিশোরী দেশ ও সমাজ প্রতিষ্ঠান গড়ার লক্ষে কাজ করছে। যারা মাদক, ইভটিজিং, বাল্য বিবাহ, শিশু শ্রম, শিশু নির্যাতন, যৌন নিপিড়ন, ও ধূমপান রোধে কাজ করছে। এর ফলে সমাজের অনেক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে।