মুন্সীগঞ্জে ৮ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে পালাক্রমে গণধর্ষণ করার পর ভিডিও ধারণ করে ধর্ষক। এ ঘটনায় জড়িত চার জনকে আটক করেছে পুলিশ। তাদেরকে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়ারি) এ ঘটনায় মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া থানায় মামলা দায়েরের পর প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চার জনকে আটক করেছে পুলিশ। এছাড়া শারীরিক পরীক্ষার জন্য ওই ছাত্রীকে শনিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের গাইনী চিকিৎসকের কাছে পাঠানো হবে।
বৃহস্পতবিার (১১ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের নতুন চরচাষী গ্রামের ৮ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে পালাক্রমে গণধর্ষণ করে এর ভিডিও ধারণ করা হয়। এমনকি ধর্ষণের পর গুরুতর আহত অবস্থায় ওই ছাত্রীকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে বাধা দেয় ধর্ষক ও তার সহযোগীরা।
এ সময় হামলায় আহত হয় ওই ছাত্রীর মা, বড় বোন ও দুলাভাই। পরে বাধ্য হয়ে ৯৯৯ এ ফোন দিলে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে।
ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রী জানান, সে স্থানীয় বসুরচর পাঁচগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। বৃহস্পতবিার রাত সাড়ে ৭টার সময় তার বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ফোনে কথা বলার সময় স্থানীয় লিটন মিয়ার ছেলে আকাশ ও পারভেজ হোসেনের ছেলে সালাউদ্দিন তার মুখ চেপে ধরে বাড়ির উঠান থেকে তুলে নিয়ে পার্শ্ববর্তী সিদ্দিকুর রহমানের পরিত্যক্ত বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে এবং ভিডিওচিত্র ধারণ করে। পাশে বিয়ে বাড়িতে উচ্চস্বরে সাউন্ড বাঁজিয়ে একের পর এক ধর্ষণ করে তারা।
এ সময় তাদের কাছ থেকে বাঁচতে চিৎকার করলেও উচ্চস্বরে সাউন্ডের কারণে সেই চিৎকারের শব্দ শুনতে পায়নি কেউ। এই কিশোরী এক পর্যায়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পরে ধর্ষণ শেষে তাকে বাড়িতে ফেলে রাখে ধর্ষকরা। পরবর্তীতে তার জ্ঞান ফিরে আসলে সে কোন রকমে তার বাড়িতে এসে পৌঁছায়।
পারিবারিক সূত্র জানায়, এ ঘটনায় গুরুতর আহত অবস্থায় ধর্ষণের শিকার ওই স্কুলছাত্রীকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে বাধা দেয় ধর্ষক আকাশ ও সালাউদ্দিনসহ তাদের স্বজনরা। এ সময় তাদের মারধরের শিকার হন ওই ছাত্রীর মা, বড় বোন ও দুলাভাই।
ওই ছাত্রীর মা ও মামলার বাদী জানান, গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পর ধর্ষক ও তাদের স্বজনরা তাদের ওপর হামলা চালায়। পরর্বতীতে তার বড় মেয়ে ৯৯৯ এ ফোন দিলে গজারিয়া থানা পুলিশের একটি দল তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
গজারিয়া থানার এসআই মো: মাঈন উদ্দিন জানান, ফোন পেয়ে তারা তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তারা প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন।
এদিকে এ ঘটনায় শুক্রবার ধর্ষণের শিকার ওই স্কুলছাত্রীর মা দুই জনের নাম উল্লেখ করে গজারিয়া থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
গজারয়িা থানার ওসি রইছ উদ্দিন জানান, সঙ্ঘবদ্ধ একটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে এবং এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। তাই সব কিছু মাথায় রেখে সামনে এগুচ্ছে তারা। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ধর্ষকদের স্বজনদেরও আটক করে থানায় নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।