গ্রাহকের প্রায় ১০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ
কচুয়া প্রতিনিধি ঃ
কচুয়ায় জনকল্যাণ সংস্থা নামে একটি হায় হায় কোম্পানী গ্রাহকদের সাথে প্রতারণা করা প্রায় ১০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার সাচার দক্ষিণ বাজারস্থ কাঁচারী দিঘীর দক্ষিণ পাড় আর্শ্বাদ মিয়ার বিল্ডিংয়ে কতিথ অফিস ভাড়া নিয়ে জনকল্যাণ সংস্থার নামে এনজিও কর্মীরা গ্রাহকদের সাথে প্রতারণা করা এ অর্থ হাতিয়ে নেয় বলে অভিযোগ উঠে। এ ঘটনায় জনকল্যাণ সংস্থার জনৈক কর্মকর্তাদের না পেয়ে গত মঙ্গলবার ভূক্তভূগী পাথৈর গ্রামের মৃত গণি মিয়ার মেয়ে শাহিদা বেগম বাদী হয়ে বিল্ডিংয়ের মালিকসহ ৩জনের নাম উল্লেখ ও ১০/১৫ জনকে আসামী করে কচুয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযোগে আর্শ্বাদের পুত্র বধূ শারমিন বেগম (৩০), স্ত্রী- সফুরা বেগম ওরফে সুফিয়া (৫০), গৃহ মালিক আলী আর্শ্বাদ (৫৫)কে আসামী করা হয়।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ৮ মার্চ পাথৈর গ্রামে এসে জনকল্যাণ সংস্থার নাম করে ঋণ দেয়ার কথা বলে ৩১জন গ্রাহকের কাছ থেকে ৫ হাজার ১০ হাজার কারো কারো কাছ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়ের নাম করে হাতিয়ে নেয়। এছাড়া একই ভাবে নয়াকান্দি, রাজারামপুর, চৌধুরী দিঘীর পাড় গ্রামসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে গ্রাহকদের কাছ থেকে ঋণ দেয়ার নামে কয়েক হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় ওই এনজিও প্রতিষ্ঠানটি। ভূক্তভূগী পরিবারগুলোর মধ্যে কয়েক জন হচ্ছে- নয়কান্দি গ্রামের তাজুল ইসলামের স্ত্রী হোসনেয়ারা বেগম, ৫ হাজার ২শ’ টাকা, একই গ্রামের আঃ বারেকের স্ত্রী শাহনাজ বেগমের ২০ হাজার ৪শ’ টাকা, কুটু মিয়ার স্ত্রী স্বরুবান বেগমের ৫ হাজার ২শ’ টাকা, সফিকুল ইসলামের স্ত্রী বানু বেগমের ৫ হাজার ২শ’ টাকা, মিজানুর রহমানের স্ত্রী মনোয়ারা বেগমের ৮ হাজার ৪শ’ টাকা, রাজারামপুর গ্রামের আঃ মালেকের স্ত্রী নিফুলা বেগমের ১০ হাজার ২শ’ টাকা, দ্বীন ইসলামের স্ত্রী ফাতেমা বেগমের ৭ হাজার ২শ’ টাকা, ইসমাইল মিয়ার মেয়ে হাজেরা বেগমের ৭ হাজার ২শ’ টাকা ও চৌধুরী দিঘীর পাড় গ্রামের আবু তাহেরের স্ত্রী হাফেজা বেগমের ১০ হাজার ২শ’ টাকাসহ বেশ কিছু গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় বলে অভিযোগ উঠে।
এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার দিন ব্যাপী সাচার বাজারস্থ কাচারী দিঘীর পাড়া সংলগ্ন আলী আর্শ্বাদ মিয়ার বাড়ী ঘেরাও করে ভূক্তভূগী ও সাধারণ লোকজন। তারা জানায় গত ১ মাস ধরে জনকল্যাণ সংস্থার নামে একটি হায় হায় কোম্পানী তাদের কাছ থেকে ঋণ দেয়ার কথা বলে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। গত কয়েকদিন আর্শ্বাদ মিয়ার বাড়ীতে জনকল্যাণ সংস্থার নামে সাইন বোর্ড সাটিয়ে ও অফিসিয়াল কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। কিন্তু গত দুদিন ধরে হঠাৎ করে জনকল্যাণ সংস্থার সাইন বোর্ড সরিয়ে জনৈক কর্মকর্তারা পালিয়ে যায়। বিষয়টি টের পেয়ে ভূক্তভূগী গ্রাহকরা আলী আর্শ্বাদ মিয়ার বাড়ী ঘেরাও করে রাখে। ভূক্তভূগী নয়াকান্দি গ্রামের হোসনেয়ারা বেগম জানান, প্রথমে আমরা এ এনজিও সংস্থায় টাকা জমা রাখতে চাই না। আলী আর্শ্বাদ মিয়ার পুত্রবধূ শারমিন আক্তার এনজিওটি ভূয়া নয় এবং কোন সমস্যা হলে আমি আপনাদের সাথে আছি, আমাদের এমন নিশ্চয়তা প্রদান করলে আমরা অনেকে এ সংস্থায় সঞ্চয়ের টাকা জমা রাখি। সাবেক ইউপি সদস্য ইউনুছ মিয়া জানান ১ হাজার টাকা জমা রাখলে ১০ হাজার টাকা ও ১০ হাজার টাকা জমা রাখলে ১ লক্ষ টাকা পাব বলে আমাদের প্রলোভন দেখিয়ে আমাদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়।
এ ব্যাপারী আলী আর্শ্বাদ মিয়ার পুত্রবধূ শারমিন আক্তার তার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, গত দুদিন পূর্বে আমাদের গৃহে জনকল্যাণ নামে একটি সংস্থা ভাড়া নেয়। তবে কে বা কারা এ সংস্থা মাসিক কত টাকা ভাড়া ও কি উদ্দেশ্যে ভাড়া নিয়েছে তা কিছুই বলতে পারেননি সে। কচুয়া থানায় অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল বলেন, জনকল্যাণ সংস্থার নামক একটি সংস্থার জনৈক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি সাচার পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মোবারক হোসেনকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানায়।