ফরিদগঞ্জ প্রতিনিধি
গত ২৩ এপ্রিল হাজী মহসীন রোডস্থ বাংলালিংক অফিসের সামনের পাকা রাস্তার উপর থেকে মোঃ তারেকুল হায়দার তৌহিদ পাটওয়ারী (২০), পিতা- মোঃ রফিকুল হায়দার পাটওয়ারী, সাং- পশ্চিম আলোনিয়া, থানা- ফরিদগঞ্জ, জেলা- চাঁদপুর। সে শিবিরের রাজনীতির সাথে যুক্ত। বর্তমানে মার্চেনটাইজার (মতলব উত্তর), ট্রেড মার্কেটিং, বাংলালিংক লিঃ চাঁদপুর শাখা। বাংলালিংক কোম্পানীর শর্ত ভংগ করে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে রেজিস্ট্রেশনকৃত ৫০০ (পাঁচশত) টি সিমকার্ড সহ গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত তৌহিদ জানায়, সে মতলব উত্তর এলাকার বাংলালিংক কোম্পানীর ট্রেড মার্কেটিং এর কাজ করে। তার কাজ হলো বাংলালিংক কোম্পানীর সিমকার্ড চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায় বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে রেজিস্ট্রেশন করে বিক্রয় করা। এ সুবাদে সে ফরিদগঞ্জ থানার প্রত্যাশী, মতলব উত্তর থানার গজরা বাজার সহ বিভিন্ন এলাকায় বাংলালিংক কোম্পানীর সিমকার্ড বিক্রয় করাকালে সু কৌশলে একই ব্যাক্তির তিনটি আংগুলের ছাপ গ্রহণ করে একটি সিমকার্ড উক্ত ব্যাক্তিকে প্রদান করে আর বাকী দু’টি ফিংগার প্রিন্ট ব্যবহার করে আরো দু’টি সিমকার্ড উত্তোলন করে। গ্রাম অঞ্চলের অশিতি ব্যক্তিদেরকে টার্গেট করে এ ধরনের শর্ত ভংগের কাজ করে থাকে বলে তৌহিদ জানায়। তার কৌশল সংক্রান্তে জানা যায়, যখন একজন ব্যক্তির আংগুলের ছাপ গ্রহণ করা হয় তখন তাকে বলা হয় আপনার আংগুলের ছাপ হয়নি বিধায় পুনরায় আংগুলের ছাপ নেয়। এরপরও বলে যে এবারও হয় নাই বিধায় পুনরায় আরো একটি আংগুলের ছাপ নেয়। এভাবে তিনটি ছাপ নিলেও গ্রাহককে দেয়া হয় একটি সিমকার্ড। এভাবে বিভিন্ন এলাকায় মোবাইল সিমকার্ড বিক্রয়ের মেলা বসিয়েও কোম্পানীর শর্ত লংঘন করে আংগুলের ছাপ গ্রহণ করে ঐ ব্যক্তির নামে একাধিক সিমকার্ড উত্তোলন করা হয়। এভাবে উত্তোলন করা সিমকার্ড গুলো একত্রিত করে একবারে ৪/৫ শত সিমকার্ড এক সংগে কুমিল্লা ডাচ বাংলা মোবাইল ব্যাংকিং এ চাকুরীরত একজনের নিকট বিক্রয় করে। সে টাকা পাঠালে তৌহিদ চাঁদপুর-চট্টগ্রামগামী বাসের কন্ট্রাকটার অথবা হেলপারের মাধ্যমে উক্ত ব্যক্তির নির্দেশে চট্টগ্রাম বাংলালিংক অফিসে কর্মরত একজনের মোবাইল নাম্বার বাসের কন্ট্রাকটার কে দিয়ে সিমকার্ড গুলো পার্সেল আকারে পাঠিয়ে দেয়। ওই একজন ব্যক্তি সিমকার্ড গুলো তার অন্য সহযোগীদের সাহায্যে উচ্চ মূল্যে বিভিন্ন প্রতারক চক্র যাহারা বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় প্রতারণার মাধ্যমে বিকাশ কিংবা ডাচবাংলা মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে টাকা গ্রহণ করে তাদের নিকট অপহরণ করে চাঁদাদাবি করে এমন ব্যাক্তিদের নিকট এবং বিভিন্ন শ্রেণির অপরাধীদের নিকট বিক্রয় করে। বাংলালিংক কোম্পানীর শর্ত ভংগ করে সাধারণ মানুষকে ধোকা দিয়ে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে রেজিস্ট্রেশনকৃত সিমকার্ড বিভিন্ন শ্রেণির অপরাধীদের নিকট বিক্রয় করায় অপরাধীরা তা দিয়ে অপরাধ সংঘটন করলেও প্রকৃত অপরাধীর সহজে ধরা না পড়ে যাহার নামে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিমকার্ড গুলো রেজিস্ট্রেশন করা সে সকল সাধারণ মানুষ ফেঁসে যাচ্ছে। যার ফলে বাংলাদেশ সরকারের বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিমকার্ড রেজিস্ট্রেশনের মূল ল্য ও উদ্দেশ্য ভেস্তে যাচ্ছে। এটি একটি সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্র যাহারা দীর্ঘদিন যাবৎ এ ধরনের অন্যায় কর্মকান্ড যথাযথ কর্তৃপরে ও পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে পরিচালনা করে আসছে। তৌহিদ কে আটকের পর ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে এ চক্রের সদস্য একজন ব্যক্তির ঠিকানা সংগ্রহ করতঃ তাকে গ্রেফতারের ল্েয কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। কিন্তু সে পলাতক থাকায় তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয় নাই, আমাদের অভিযান এখনও চলমান আছে। এ ঘটনার সাথে যারাই জড়িত থাকুক তাদের সকলকে আইনের আওতায় নিয়ে এসে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জাকির হোসেন নামক একজন ব্যবসায়ী চাঁদপুর জেলার বাংলালিংক কোম্পানীর সিমকার্ড বিক্রয়ের একজন ডিস্ট্রিবিউটার।