হারারে টেস্টের প্রথম ইনিংসে ব্যাট হেসেছে তাসকিনের। ১৩৪ বলে করেছেন ৭৫ রান। এমন দুর্দান্ত পারফরমেন্সের পর দ্বিতীয় দিন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন তিনি।
‘বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিং অনুশীলন করা হয়। আজ মাথায় ছিল দলের জন্য আমার কিছু করতে হবে। যেহেতু রিয়াদ ভাই ছিল। সেহেতু একজন টেল এন্ডার হিসেবে আমার মূল লক্ষ্যই ছিল তাকে সমর্থন দেওয়া। তিনি সবসময় আমাকে কথা বলে বলে খেলাচ্ছিল। মূল লক্ষ্য ছিল যেন স্টাম্পের বলটা দেখে খেলা হয়। রিয়াদ ভাই বার বার এটাই মনে করিয়ে দিচ্ছিল। আমি আমার জায়গায় যখন বল পেয়েছি, তখন মারার চেষ্টা করেছি। সেগুলো বাউন্ডারি হয়েছে। মূলত দলের জন্য খেলার চেষ্টা করেছি।’ বলছিলেন তাসকিন।’
ইনিংসে ১১টি চার হাঁকিয়েছেন তিনি। প্রয়োজন অনুযায়ী খেলেছেন শট। সাবলীল ভঙ্গিতে ব্যাট করে জিম্বাবুয়ের বোলারদের বারবার হতাশও করেছেন তিনি। তবে এক পর্যায়ে পেসার ব্লেসিং মুজারাবানির সঙ্গে মুখোমুখি হয়ে দ্বন্দ্বে জড়াতে দেখা যায় তাকে। কিছু ঘটেছিল ক্রিজে?
তাসকিনের ভাষ্য, ‘তারা আমাকে আক্রমণ করার চেষ্টা করছিল। বাউন্সার মারছিল। ভালো জায়গায় বল করছিল। আমি ভালো সামলাচ্ছিলামও। বিরক্ত হয়ে বেশ কয়েকবার গালিও দিয়েছে। তৃতীয়বার যখন গালি দেয়, তখন আমিও তেড়ে গিয়েছিলাম। বলছিলাম, “আমাকে কেন গালি দিচ্ছো, বল দিয়ে পারলে কিছু করো?’’ এটাই। আর কিছু না।’
প্রথম ইনিংসে ৪৬৮ রানের তুলেছে টাইগাররা। জবাবে ১ উইকেট হারিয়ে স্বাগতিকদের সংগ্রহ ১১৪ রান। ৩৫৪ রানে পিছিয়ে থেকে তৃতীয় দিন শুরু করবে জিম্বাবুয়ে।
‘উইকেট বেশ ভালো। ভালো জায়গায় ধৈর্য ধরে বল করতে হবে। এখন ব্যাটিংয়ের জন্য খুব সহজ। এখন জায়গা মতো ভালো জায়গা বোলিং করা, ফিল্ডিং অনুযায়ী বোলিং করা ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই। আক্রমণ অবশ্যই করতে হবে, তবে সেটা ফিল্ডিং অনুযায়ী। কারণ বাজে খুব সহজেই মারা যাচ্ছে। ধৈর্য ধরে ভালো জায়গায় ধারাবাহিক হয়ে বোলিং করতে হবে।’
মাত্র চার রানের জন্য করা হলো না বিশ্ব রেকর্ড। তাসকিনকে সঙ্গে নিয়ে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ১৯১ রান তুলেছেন। ১৯৯৮ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মার্ক বাউচার ও প্যাট সিমকক্স ১৯৪ রান তুলেছেন। যা টেস্ট ম্যাচে নবম উইকেটে সর্বোচ্চ জুটি।
‘আর কিছু রান হলে বিশ্ব রেকর্ড হতো এসব মাথায় ছিল না। তবে ১৫০ রান হওয়ার পর ভালো লাগছিল। মনে হচ্ছিল, ওয়াও। তাছাড়া রিয়াদ ভাই কয়েকটা টেস্টে দলে ছিল না। তিনি এসেই দারুণ একটা ইনিংস খেলল। আমার খুব ভালো লাগছিল যে আমি তাকে সাপোর্ট করতে পেরেছি। এখন বোলিংয়ে দলগত ভাবে ভালো কিছু করতে পারলে অবশ্যই ফলটা ভালো হবে।’
নিজের অষ্টম টেস্টে এসে ক্যারিয়ার সেরা ৭৫ রান তুলেছেন। এজন্য বাংলাদেশের ফিল্ডিং কোচ রায়ান কুকের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তাসকিন।
‘ব্যাটিং কোচ এই সিরিজে এসেছে। তার সঙ্গে তেমন কাজ হয়নি তবে কথা হয়েছে। তবে আমাদের বোলারদের ব্যাটিংয়ের জন্য উৎসাহ দেন আমাদের ফিল্ডিং কোচ রায়ান কুক। শেষ সিরিজে তিনি বলেছিলেন এবার যেন আমি আসার সময় ব্যাটিং স্পাইক কিনে নিয়ে আসি। সাধারণত বোলাররা বোলিং বুট পরেই ব্যাটিং করি। ব্যাটিং বুট পরেই এবার নেমেছি। কোচ খুশিও হয়েছিল। আজ আসার সময় তিনি বলছিলেন, দেখেছে, ব্যাটিংয়ে নামার সময় তুমি ব্যাটসম্যানই। তাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাকে ব্যাটিংয়ের জন্য পুশ করার জন্য।’