আমার কণ্ঠ রিপোর্ট
অতি উৎসাহি হয়ে এবং অতি লাভের আশায় ব্যাংক থেকে টাকা ঋন নিয়ে বাড়ী বানিয়ে বেকায়দা রয়েছেন বাড়ীর মালিকরা। ১০ বছর আগে ভাড়াটিয়ার তুলনায় বাড়ী কম থাকায় বাড়ীর মালিকদের ছিল কদর বেশি। এ কদর দেখে জায়গার মালিকরা ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে বাড়ী বানিয়ে এখন ভাড়াটিয়ার অভাবে এবং ব্যাংকের টাকার জন্য বাড়ী এখন গলার কাটা হয়ে দাড়িয়েছে। টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হলে বাড়ী নিলাম হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
হাজীগঞ্জে বাড়ীর মালিকদের ভাড়াটিয়ার অভাব দেখা দিয়েছে। ভাড়াটিয়ার অভাবে অনেক বাড়ির মালিকারা দিশেহারা হয়ে পড়ছে। এভাবে কয়েক মাস চলার পর অনেক বাড়ীর মালিক বাড়ী বিক্রি করে দেয়ার জন্য মানুষ খোঁজছেন। বাড়ির মালিকরা নিজের জমানো টাকা এবং ব্যাংক থেকে ঋন নিয়ে বাড়ি বানিয়েছেন। এখন বাড়াটিয়ার অভাবের কারণে ব্যাংকের টাকা দিতে না পারায় এবং প্রতি মাসের বিদ্যুৎ ও গ্যাস বিল দেয়ার কারণে অসহায় হয়ে পড়েছেন।
অনুসন্ধান করে এবং গত এক সপ্তাহ গুরে বিভিন্ন মালিকের সাথে কথা বলেন জানাযায়, ২০০০ সালের আগে মানুষ নিজ গ্রামে বসবাস করার মনমানসিকতা ছিল। সে মোতাবেক তারা অর্থ জোগার করে নিজ গ্রামে চোকাট করে করে থাকতে এবং অবশিষ্ট টাকা দিয়ে গ্রামের কৃষি জমি কিনতেন বা কন্ডিশন নিতেন। পাশাপাশি ছেলে মেয়েদেরকে লেখা পড়া অথবা ছেলেদেরকে বিদেশ পাঠিয়ে দিতেন। এটাই ছিল তাদের তখনকার নিয়ম। এ নিয়মের মধ্যেই তারা বসবাস করে আসছেন। এর মধ্যে গ্রামের প্রতিটি ঘরে কেউ না কেউ বিদেশ বা উচ্চ শিতি হয়ে যাওয়ার কারণে দিন দিন গ্রামের মানুষের মধ্যে একটি বিলাসিতার মনোভাব সৃষ্টি হয়। ধীরে ধীরে কৃষি জমি ক্রয় থেকে বিরত এবং ছেলে মেয়ে দেরেকে উচ্চ শিতি বা বিদেশ পাঠানোই তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হয়। এভাবে কয়েক দশকের মধ্যে পাল্টে যায় জীবন মান এবং ভবিষৎ পরিকল্পনা ও চলে আশে অধনিকতার ছোঁয়া। এ আধুনিকতা এবং ভবিষৎ প্রজন্মকে আরো উচ্চ শিতি এবং শহর মুখখী করার জন্য আরো একধাপ এগিয়ে যায়। এরই মধ্যে গ্রামের মানুষের অর্থনৈতিক ভাবে প্রায় অনেকে সাবলম্বি হয়ে যায়।
২০০০ সালের পর হঠাৎ করে গ্রামের মানুষ শহর মুখি হওয়ার জন্য হিড়িক জমে উঠে। যার যার অবস্থান থেকে প্রায় ৯০ ভাগ অর্থশালীরা শহর মুখি হওয়ার জন্য হাজীগঞ্জ বাজারে জায়গা কেনার জন্য জায়গা খোঁজতে থাকে। ২০০৫ সালের পর গ্রামের মানুষ কখন হাজীগঞ্জ পৌর এলাকায় এক খন্ড জমি কিনবে তার জন্য ছুটাছুটি শুরু করে। কে কার আগে কিনবে। এভাবে পৌর এলাকাার মুলজায়গা বিক্রি শেষ এবং অনেকে খাল এবং করস্থানও বিক্রি করে দিয়েছে। মাত্র ১০ বছরের ব্যবধানে হাজীগঞ্জ বাজার একটি পরিপূর্ণ শহর হিসেবে রুপ নিয়েছে। পাশপা পাশি ব্যবসা বানিজ্য এবং জায়গার বিক্রিকারিরা ও দালালরা রাতারাতি ধনি হয়ে যায়। এখন হাজীগঞ্জ বাজারে বা পৌর এলাকায় ঘুরলে কেউ বুঝবে না এটা একটা উপজেলা। মনে করবে এ জেলা শহর। কানায় কানায় ১ থেকে ১২ তলা পর্যন্ত বাসা বাড়ী, বানিজ্যিক ভবন, মার্কেট আরো কত কি। পাশাপাশি স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যাও অনেক বেশি।
ভাড়াটিয়ার অভাবে ব্যাংক ঋন পরিশোধ করা কঠিন।
সব মিলিয়ে বাড়ীর মালিকদের করুন অবস্থা। আগামী ৫ বছরের মধ্যে বাড়ীর মালিকরা বাসা ভাড়া দেয়ার জন্য ভাড়াটিয়া খুজে পাওয়া কঠিন হবে। আর তাই যদি হয় তাহলে বাড়ী মালিক ছাড়া বাসায় বাড়া দেয়ার মতো লোক পাওয়া যাবে না।
এ ব্যপারে নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক কয়েকজন বাড়ীর মালিকের সাথে আমার কণ্ঠের প থেকে কথা হলে তারা বলেন কোন পাপ করছি কোটি কোটি টাকা দিয়ে বাড়ী বানিয়ে। যখন বাড়ী তৈরি করছি তখন দেখি ভাড়াটিয়ার অভাব নেই। এখন দেখি ভাড়া টিয়ার অভাব। ব্যাংক থেকে ঋন নিয়ে বাড়ী বানিয়েছি এখন ব্যাংক ঋন পরিশোধ করতে পারিনা। যে পরিমান ভাড়া আসে তা দিয়ে ব্য্ংাক ঋন এবং আয় কর ও টেক্স দেয়া কঠিন। আগামী ক বছরের মধ্যে ভাড়াটিয়া পাওয়া যাবে না। কি কারণে পাওয়ার যাবেনা জানতে চাইলে তারা বলেন গ্রাম এখন উন্নত এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হয়ে গেছে। বিদেশেী বউ-সন্তানের বদনাম বেশি হয়েছে। গ্রামের স্কুল কলেজ মাদ্রাসার শিা ব্যবস্থা উন্নত এবং হাজীগঞ্জে চাহিদার চেয়ে বেশি বাড়ী বা ভবন হয়েছে। যার কারণে আমাদের অভিষৎ খারাপ। আমরা এখন বাড়ী বিক্রি ছাড়া কোন উপায় নেই। বাড়ী বিক্রি করে ব্যাংক ঋন পরিশোধ করতে পারলেই বাচিঁ।
এ ব্যাপারে হাজীগঞ্জের কয়েকটি ব্যাংক শাখা ম্যানাজারের সাথে কথা হলে তারা বলেন বাড়ী এবং ভাড়াটিয়ার চাহিদার কারণে জায়গার মালিকরা ব্যাংক থেকে ঋন নিয়ে বাড়ী বানিয়েছে। প্রথম কয়েক বছর বাড়ীর মালিকরা ঠিক মতো ব্যাংক ঋন পরিশোধ করলেও বর্তমানে ব্যাংক ঋন দিতে পারছেন না ঠিক মতো। বাড়ী অনুপাতে ভাড়াটিয়ার অভাব রয়েছে। যার কারণে ভাড়াটিয়ার অভাবে বাড়ীর আয় হচ্ছে না। অনে বাড়ীর মালিক ব্যাংক ঋন পরিশোধ করার জন্য বাড়ি বিক্রি করার জন্য ঘুরছেন। তারা আরো বলেন হাজীগঞ্জের বাড়ীর মালিকদের ভবিষৎত ভালো না। ঋনের পরিমান বেশি হলে ব্যাংকের সাথে থাকা যুক্তি অনুযায়ী বাড়ী নিলাম হয়ে যাবে।