যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা আয়োজিত স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জের শীর্ষ ২৫ প্রকল্পে জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ। দুটি ক্যাটাগরিতে বিশ্বের ৭৯টি দেশের ২ হাজার ৭২৯টি দলের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে এমন পর্যায়ে উঠে এসেছে বাংলাদেশের প্রকল্প।
শনিবার সকালে ছয় ক্যাটাগরিতে শীর্ষ ২৫ দলের নাম ঘোষণা করেছে নাসা। এর মধ্যে দুটি ক্যাটাগরির সেরা চারে রয়েছে দেশের প্রকল্প। বেস্ট ইউজ অব ডেটা ক্যাটাগরিতে ক্যালিফোর্নিয়া, কুয়ালালামপুর আর জাপানের সঙ্গে শীর্ষে উঠেছে সিলেট থেকে চ্যাম্পিয়ন হিসেবে মনোনয়ন পাওয়া দল ‘টিম অলিক’।
টিম অলিকের ‘লুনার ভিআর’ প্রজেক্টটি মূলত একটি ভার্চুয়াল রিয়েলিটি অ্যাপ্লিকেশন যার মাধ্যমে ব্যবহারকারী চাঁদে ভ্রমণের একটি অভিজ্ঞতা পাবেন।
টিম অলিক নাসা প্রদত্ত বিভিন্ন রিসোর্স থেকে থ্রিডি মডেল ও তথ্য সংগ্রহ করে, নাসা অ্যাপোলো ১১ মিশনের ল্যান্ডিং এরিয়া ভ্রমণ, চাঁদ থেকে সূর্যগ্রহণ দেখা এবং চাঁদকে একটি স্যাটেলাইটের মাধ্যমে আবর্তন করা এ তিনটি ভিন্ন পরিবেশকে ভার্চুয়ালভাবে তৈরি করেছে।
অন্যদিকে ‘বেস্ট ইউজ অব হার্ডওয়্যার’ ক্যাটাগরিতে আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া আর তাইপের সঙ্গে শীর্ষ চারে উঠে এসেছে ঢাকা থেকে রানারআপ হিসেবে মনোনয়ন পাওয়া টিম প্ল্যানেট কিট।
প্ল্যানেট কিটের তৈরি প্রকল্প যা মঙ্গল গ্রহে বেঁচে থাকার জন্য সহায়তা করবে। প্ল্যানেট কিট পরিবেশের ডেটা প্রদান, প্রাথমিক স্তরের রাসায়নিক পরীক্ষা, জরুরি সতর্কতা এবং বিপত্তি থেকে সহায়তা, মাটির গঠন মূল্যায়ন এবং ক্ষুদ্র পরিসীমায় চাষ, পানযোগ্য পানি সংগ্রহ, পথ পরিকল্পনা, থ্রিডি ভার্চুয়ালাইজেশন ইত্যাদি কাজে সাহায্য করবে।
এ ডিভাইসটি নিকট ভবিষ্যতে ঘন ঘন মহাকাশ যাত্রা, স্থান ভ্রমণের খরচ হ্রাস, মূল্যবান গবেষণা তথ্য সংরক্ষণ, এমনকি পৃথিবীতে বিভিন্ন গবেষণা কাজে সাহায্য করবে।
অলিক দলের সদস্য সাব্বির হাসান শুভ বলেন, শীর্ষে থাকতে পেরে সত্যি অনেক ভালো লাগছে। এবার অপেক্ষায় আছি পরের রাউন্ডে যেন যেতে পারি। আমাদের এই অ্যাপে ভিআরের মাধ্যমে শিক্ষার্থী চন্দ্র অভিযানের ধারণা নিতে পারবেন।
বেসিসের সাবেক পরিচালক এবং নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জের যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল হাসান অপু টেকশহরডটকমকে বলেন, আমাদের প্রকল্প নাসার টপ ২৪-এ স্থান করে নিয়েছে মানে আমাদের আইডিয়া ইন্টারন্যাশনাল স্টান্ডার্ড হচ্ছে। এটা সরাসরি নাসার কর্মকর্তারাই বিচার করেন। ফলে আমরা ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, প্রথমবারের মতো এমন অর্জন সত্যির গর্বের। আমরা প্রত্যাশা করছি আগামী ফেব্রুয়ারিতে যে চূড়ান্ত ফলাফল হবে সেখানে বাংলাদেশের এ প্রকল্পগুলো শীর্ষস্থানে জায়গা করে নেবে।
বাংলাদেশ থেকে ২ হাজারেরও বেশি প্রকল্প থেকে ৪০টি প্রকল্প জাতীয় পর্যায়ে হ্যাকাথনে অংশ নেয় অক্টোবরে। সেখান থেকে আটটি দলকে চূড়ান্ত পর্যায়ের জন্য মনোনয়ন দেয়া হয় যারা চূড়ান্ত পর্বে অংশ নেয়।