বুধবার (১২ এপ্রিল) রাতে ফাঁসি কার্যকর হওয়া জঙ্গি বিপুলের জন্মস্থান চাঁদপুর । ওই দিন সন্ধ্যায় তার গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর সদরের মৈশাদী ইউনিয়নে বকশি পাটওয়ারী বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় নিরব-নিস্তব্দতা বিরাজ করছে।
বাড়িতে লোকজন থাকলেও কেহই সামনে আসতে রাজি হননি। অনেক ডাকা-ডাকির পর বিপুলের সৎ বোন সুমাইয়া(১৪) কথার জবাব দেয়। সে জানায়, ক’দিন আগে পুলিশ এসে তার বাবাকে জিজ্ঞেস করেছিল, ‘ফাঁসি’ হলে লাশ গ্রহণ করবেন কিনা? সে সময় বাবা পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি তার লাশ গ্রহণ করবেন না। এমনকি দেখাও করতে চান না।
সৎ বোন শাহীনুর জানায়, ‘ভাইয়া কোনো সময়ই বাড়িতে আসতেন না। তিনি সিলেটেই থাকতেন। তার স্ত্রী রুমি ও ছেলে হুজাইফা তার সাথে থাকতো।’
বিপুলের পিতা হেমায়েত উদ্দিন মন্টু পাটওয়ারী সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ সার কারখানায় চাকুরি করা অবস্থায় সেখানেই বিপুল জন্মগ্রহণ করে। জঙ্গি বিপুল সিলেট এমসি কলেজ থেকে ডিগ্রি পাস করে মাস্টার্স প্রথম পর্ব পড়াশুনা করে।
১৯৯৯ সনে বিপুলকে চাকুরির জন্যে লিবিয়ায় পাঠানো হয়। কিন্তু তখন সেখান থেকে সে পালিয়ে যায়। এরপর থেকে তার সাথে পরিবারের কোনো যোগাযোগ ছিল না। একপর্যায়ে ক’বছর পর তারা খবর পায় বিপুল কাউকে না জানিয়ে সিলেটে বিয়ে করেছেন। তবে বিপুল জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ত হয়েছে জানতে পেরে তার বাবা হেমায়েত উদ্দিন মন্টু ছেলের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেননি।
এমনকি বুধবার (১২ এপ্রিল) ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পূর্বেও তার বাবা শেষ দেখাও করতে যাননি কারাগারে। ফাঁসি কার্য়করের পর তার লাশ নিতে চায়নি জন্মদাতা বাবা হেমায়েত উদ্দিন পাটওয়ারী। শুধু তা-ই নয়, জানাযায়ও অংশ নিতে চাননি তিনি। জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
মৈশাদী তালতলা বাজারের ব্যবসায়ী মো.মঈনুল ইসলাম জানায়, ‘ বিপুলের মা ফখরুন আক্তার ২০০২ সালের ৩০ অক্টোবর মারা যান। এরপর তার বাবা আরেকটি বিয়ে করেন। তার দু’ঘরে ২ ছেলে ৩ মেয়ে রয়েছে। বিপুল ছেলেদের মধ্যে বড়।’
বিপুলের মামা আলন্দ পাটওয়ারী বলেন, ‘ বিপুলের বাবা অনেক আগেই জানিয়েছেন। তিনি মরদেহ গ্রহণ করবেন না। এমনকি তার জানাযায়ও অংশ নিতে চান না। কিন্তু পরে সব কিছু করতে বাধ্য হয়েছেন।’