কচুয়া প্রতিনিধি-
কচুয়ায় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক যুবতীকে ধর্ষন চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। হতভাগ্য ওই যুবতী বর্তমানে চাঁদপুরের ২৫০ শয্যা সরকারি মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। মঙ্গলবার মধ্য রাতে উপজেলার লইয়ামেহের পাঁচধারা গ্রামে লোমহর্ষক ঘটনা ঘটে।
সরেজমিনে জানা গেছে, উপজেলার বিতারা ইউনিয়নের লইয়ামেহের পাঁচধারা গ্রামের নিরীহ খোকন মিয়ার যুবতী কন্যা (২০) কে একই গ্রামে প্রায় ৩/৪ বছর পূর্বে বিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ের পর স্বামীর সাথে মনোমালিন্য হওয়ায় তাদের ঘর ভেঙ্গে যায়। পরবর্তীতে খোকন মিয়া তার যুবতী মেয়েকে নিয়ে চট্টগ্রামে আগ্রাবাদ এলাকায় একটি বাসা ভাড়া করে বসবাস করে। সেখানে একই এলাকার চারু মিয়ার পুত্র আমির হোসেন (২০) তাকে দেখে বিভিন্ন ভাবে প্রেম প্রস্তাব দিয়ে উত্ত্যপ্ত করে আসছে। বাসায় যাওয়া আসার এক পর্যায়ে আমির হোসেন যুবতী ওই মেয়েটির সাথে আপত্তিকর ঘটনায় জড়িয়ে পড়ে বলে মেয়েটি দাবী করে। বিষয়টি তার বাবা-মা ও আশ-পাশের এলাকার লোকজন জানতে পেরে তাদের চাপ সৃষ্টি করলে আমির হোসেন মেয়েটিকে বিয়ে করার কথা বলে চট্টগ্রাম থেকে গত সোমবার সন্ধ্যায় তার গ্রামের বাড়ী কচুয়ার লইয়ামেহের গ্রামে নিয়ে আসে। এদিকে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে জানাজানি হলে স্থানীয় ইউপি মেম্বার মোঃ তাজুল ইসলাম, আওয়ামীলীগ নেতা মিজান সরকার, তবদীল হোসেন, পার্শ্ববর্তী চান্দিনা উপজেলার গল্লাই গ্রামের ইউপি মেম্বার আঃ খালেকসহ গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ মেয়েটিকে আমির হোসেনের পিতা চারু মিয়ার জিম্মায় তাদের বাড়ীতে নিয়ে যায়। পরদিন এ নিয়ে শালিশ বৈঠকের কথা থাকলেও আমির হোসেনের পরিবারের লোকজন মেয়েটিকে মারধর করে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম এলাকায় নিয়ে যায় বলে মেয়ের মা নাছিমা বেগম দাবী করে। এ নিয়ে মেয়েটি ও আমির হোসেনের পরিবার কচুয়া থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দায়ের করে। এদিকে মঙ্গলবার রাতে যুবতী মেয়েটিকে বখাটে আমির হোসেন ও তার নেতৃত্বে লইয়ামেহের গ্রামের ইয়াছিন (২৫), খোকন (৩০), জাহাঙ্গীর (২৮), সুজন (৩০), খলিলুর রহমান (২৮) ও গল্লাই গ্রামের জহির (২৭) বখাটে যুবক ধর্ষনের চেষ্টা করে তাকে শ্লীলতাহানি করে আমির হোসেনের ঘরের কাছে অচেতন অবস্থায় রেখে চলে যায় বলে মেয়ের ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার দাবী করে। ক্ষতিগ্রস্থ ওই যুবতীর মা নাছিমা বেগম ও বাবা খোকন মিয়া জানান- আমির হোসেন আমার মেয়েকে বিভিন্ন সময় উত্ত্যক্ত করায় প্রথম স্বামীর ঘর ভেঙ্গেছে এবং পরবর্তীতে আমার মেয়েকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা করছে।
এ সংবাদ সংগ্রহ করতে গতকাল বুধবার সকালে লইয়ামেহের গ্রামে গেলে স্থানীয় সাংবাদিক ও এলাকাবাসীর সামনেই ওই মেয়েটিকে বখাটে আমির হোসেনের বোন দেলোয়ারা দেলু, মনি বেগম ও ভাই ইমরান হোসেন সহ বেশ কয়েকজন তাকে মারধর করে গুরুতর আহত করে। পরে স্থানীয়রা যুবতী মেয়েটিকে উদ্ধার করে প্রথমে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরবর্তীতে তার অবস্থা বেগতিক দেখে চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এদিকে স্থানীয় লোকজন মেয়েটিকে শারীরিক নির্যাতন ও হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী। এ ব্যাপারে কচুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আলমগীর হোসেন মজুমদার জানায়- ধর্ষন চেষ্টার বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কচুয়া ঃ লইমেহের গ্রামে যুবতীকে মারধরের পর এভাবেই অচেতন অবস্থায় পড়ে রয়েছে। পাশে বখাটে আমির হোসেনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ।