কচুয়া প্রতিনিধিঃ
কচুয়া উপজেলার জগতপুর এলাকায় সরকার নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন তৈরির কারখানার সন্ধান পাওয়া গেছে। ২০০২সালে সরকার পরিবেশ ও জন স্বাস্থ্যের ক্ষতিকারক দিক বিবেচনা করে রপ্তানিমুখী শিল্প ব্যতীত সকল ধরণের পলিথিন ব্যাগ উৎপাদনকারী শিল্পের উৎপাদন, বাজারজাতকরণ ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করে।
সরকারের এ নিষেধাজ্ঞাকে উপেক্ষা করে কচুয়া উপজেলার খাজুরিয়া পেট্টোল পাম্পের বিপরীতে চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক সড়কের পাশেই জনৈক জসিম উদ্দিন ও লিয়াকত মিয়ার যৌথ মালিকানায় গড়ে উঠে অবৈধ এ পলিথিন কারখানা। এ কারখানায় উৎপাদিত বিভিন্ন সাইজের পলিথিন কচুয়া, রহিমানগর, সাচারসহ আশপাশের উপজেলার বিভিন্ন বাজারে বাজারজাত করণও হচ্ছে বেশ জমজমাট ভাবে।
স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পলিথিন কারখানাটির সামনের দিক দিয়ে তালা ঝুলানো। কিছুটা ঘুরে পেছনের দরজা দিয়ে গিয়ে দেখা যায়, পলিথিন উৎপাদনের মেশিনটি চলছে। স্থানীয় বেশক’জন সংবাদকর্মী পরিচয় দিয়ে কারখানায় প্রবেশ করে অবৈধ এ পলিথিন কারখানা কীভাবে চলছে জানতে চাইলে, কারখানার ম্যানেজার জসিম উদ্দিন জানান, আমাদের কাজ মাল উৎপাদন করা। প্রশাসন ম্যানেজ করেন মালিকরা নিজেই। অবৈধ কাজ করতে ভয় লাগে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ম্যানেজার বলেন, থানার ওসি নিজে একবার এসছেন! ডিবি পুলিশ এসেছে, এমনকি পরিবেশ অধিদপ্তরের লোকজনও এসেছে। তারপরেও কারখানাতো বন্ধ হয়নি। আপনাদের কিছু জানার থাকলে মালিকের সাথে কথা বলেন বলে মুঠোফোনে ধরিয়ে দেয় মালিক পক্ষের একজন লিয়াকত মিয়াকে। সাংবাদিক পরিচয় জানতে পেরেই অপর প্রান্ত থেকে লিয়াকত মিয়া বলেন, ‘কারখানা থেকে বেরিয়ে আসুন কথা বলছি।’ কারখানা থেকে চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক সড়কে আসতেই দেখা হয় লিয়াকত মিয়ার সাথে। নিজের পরিচয় দিয়ে তিনি বলেন, ‘ভাই তেমন একটা ব্যবসা হয় না। পাশের স’মেইল থেকে বিদ্যুতের সাইড লাইন এনেছি। বিদ্যুতের ঘন ঘন লোড শেডিং, থানার ওসিকে মাসোহারা, পরিবেশ অধিদপ্তরের লোকজনকে ম্যানেজ করা, সব মিলিয়ে মাস শেষে লোকসান গুণতে হয়। নিউজ করার দরকার নাই! আপনারা যখন এসেছেন গাড়িভাড়াটা অন্তত নিয়ে যান’ বলে তিনি বেশকিছু টাকা দেয়ার চেষ্টা করেন সাংবাদিকদের। পরিবেশ অধিদপ্তরের লোকজন এসে কি বলেছিলো জানতে চাইলে, লিয়াকত মিয়া বলেন, ‘ভাই বহু কষ্টে ম্যানেজ করেছি।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে কচুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ ইবরাহিম খলিল বলেন, পলিথিন কারখানা থেকে মাসোহারা নেয়ার কথা সম্পূর্ণ মিথ্যা, জগতপুর এলাকায় পলিথিন কারখানা গড়ে উঠা বিষয়টি আমার জানা নেই। এ ধরনের কারখানার সন্ধান দিলে অবশ্যই আমরা ব্যবস্থা নিবো। অপরদিকে কচুয়া, রহিমানগর, সাচার জগতপুর সহ বেশ কিছু বাজারে নিষিদ্ধ পলিথিন বিক্রি চলছে দেদারছে। এসব পলিথিন বিক্রি বন্ধের দাবী জানিয়ে সচেতন এলাকাবাসী।
কচুয়া ঃ কচুয়ার খাজুরিয়ায় গড়ে উঠা অবৈধ পলিথিন কারখানা।