আড়াই’শ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে দীর্ঘ ৯ বছর পর পুনরায় চোখের চিকিৎসাসেবা পেতে শুরু করেছেন রোগীরা। এতে করে স্বস্তি ফিরেছে সাধারণ রোগীদের মনে।
খবর নিয়ে জানা গেছে, ১ জানুয়ারি থেকে হাসপাতালে নিয়মিত রোগীদের চোখের চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন চাঁদপুর মেডিকেল কলেজের অবসর প্রাপ্ত সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ মোঃ গোলাম মোস্তফা মজুমদার। তবে তিনি হাসপাতালের শূন্য পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে নয়, তত্ববধায়কের আবদার, অনুরোধ এবং মানবিক দিক চিন্তা করেই কোন সম্মানী ছাড়াই এই সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। সরকারি ছুটির দিন ব্যধিত নিয়মিত হাসপাতালে এ চক্ষু সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
জানা যায়, ২০১৫ সাল থেকে হাসপাতালের চোখের ডাক্তারের পদটি শূন্য হয়ে পড়ে। গত ৯ বছর আগে ওই পদে দায়িত্বে থাকা ডাঃ মনোজ কান্তি বড়ুয়া চাকরি থেকে অবসর নেয়ার পর থেকে সে পদটি আজো শূন্য হয়ে পড়ে। আর স্বাস্থ্য সেবায় এই গুরুত্বপূর্ন পদটি শূন্য থাকার কারনে গত ৯ বছর ধরে হাসপাতালটিতে চক্ষু চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত ছিলেন সাধারণ রোগীরা।
এর পূর্বে ডাক্তার মনোজ কান্তি বড়ুয়া অবসর নেয়ার পর থেকেই এ পদে চিকিৎসক নিয়োগ দেয়ার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একাধিকবার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদন করেও কোন কাজ হয়নি বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে। যদিও ৩/৪ বছর পূর্বে একজন নারী চক্ষু চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু তিনি ২/৩ মাস দায়িত্ব পালনের পর সেখান থেকে অনত্র বদলী হয়ে যান। সেই থেকে হাসপাতালে এই চক্ষু চিকিৎসক পদগুলো শূন্য পড়ে থাকে। যার কারনে চোখের চিকিৎসাসেবা পায়নি রোগীরা।
প্রতিদিনই চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে সাধারণ রোগীরা চোখের নানা সমস্যা নিয়ে সরকারি এ হাসপাতালটিতে ডাক্তার দেখাতে আসেন। কিন্তু এত বছর ধরে চক্ষু চিকিৎসকের পদ শূন্য থাকায় চিকিৎসা সেবা না পেয়ে ব্যর্থ মনে বাড়ি ফিরেছিলেন রোগীরা।
জেলার এই প্রধানতম সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানটি চক্ষু চিকিৎসক পদটি শূন্য থাকলেও মানবিক দিক বিবেচনা করে গত ১ জানুয়ারি থেকে হাসপাতালে আগত রোগীদের নিয়মিত চক্ষু চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন ডাঃ মোঃ গোলাম মোস্তফা মজুমদার। তবে তিনি হাসপাতালের নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে নন, তত্ববধায়কের আবদার, অনুরোধ এবং নিজের বিবেকের তারনায় মানবিক দিক চিন্তা করে কোন সম্মানী ছাড়াই রোগীদের এই সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
ডাঃ মোঃ গোলাম মোস্তফা মজুমদার ২০২০ সালে চাঁদপুর মেডিকেল কলেজে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। এরপর তিনি ওই পদে থেকেই চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। অবসরে গিয়েও ১ জানুয়ারি থেকে সরকারি হাসপাতালে নিয়মিত রোগীদেরকে চক্ষু চিকিৎসাসেবা প্রদান শুরু করেন।
এ বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার এ কে এম মাহাবুবুর রহমান চাঁদপুর টাইমসকে জানান, চক্ষু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পদটি শূন্য থাকায়, এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আমরা একাধিক বার লিখিত ভাবে আবেদন করেছি। কিন্তু তাতেও কোন কাজ হয়নি। এ পদে বিশেষজ্ঞ না পাওয়ার কারণে উর্ধ্বতন কৃর্তপক্ষও এই পদে কোন চিকিৎসক নিয়োগ দিতে পারছেন না। তাই আমরা ডাক্তার গোলাম মোস্তফা মজুমদারকে হাসপাতালে রোগীদেরকে চক্ষু চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি। তিনি আমাদের আবদার রেখে এখন নিয়মিত রোগীদের এই চোখের চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন।