মোঃ কামাল হোসেন
হাজীগঞ্জ উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীদের কে বরণ করার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সাজানো হয়েছে সুন্দর ভাবে। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মুল ফটোকে ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্যেশ্য সু-স্বাগতম লেখা পেষ্টুন টানানো হয়েছে। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হল রুম ছিল পরিস্কার পরিচ্ছন্ন। এ যেন অন্যরকম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
করোনা মহামারিতে দীর্ঘ ৫৪৪ দিন স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসা বন্ধ থাকার পর আজ সরকারের নির্দেশে হাজীগঞ্জ উপজেলার সকল স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীদের উৎসবমুখর পরিবেশে বরণ করলেন শিক্ষক করা। দুই সিফটে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষকরা ছা-ছাত্রীদের জন্য শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করেছেন। সকাল ৯.৩০ মিনিট থেকে ১১.৩০ মিনিট এবং ১১.৩০ থেকে ১ টা পর্যন্ত ২য় সিফট পর্যন্ত প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাশ শুরু হয়। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ক্লাশ শুরু হয় সকাল ১০ টা থেকে ১২ টা ১ম সিফট এবং ১২ থেকে ২ টা পর্যন্ত ২য় সিফট।
সরেজমিনে হাজীগঞ্জ পাইলট মডেল হাইস্কুল এন্ড কলেজ, হাজীগঞ্জ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, হাজীগঞ্জ পাইলট মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সকাল ৮ টার দিকে গিয়ে দেখা যায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এসে উপস্থিত হয়ে সরকারের বিভিন্ন নিয়ম প্রতিপালনের জন্য কাজ শুরু করেন। শিক্ষকরা ছাত্র-ছাত্রীদেরকে বরণ করার জন্য যতধরণের প্রস্তুতির দরকার তা অক্ষরে অক্ষরে করেন। ছাত্র-ছাত্রীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ডুকার সাথে সাথে শিক্ষকরা ছাত্র-ছাত্রীদের কে সু-স্বগতম জানিয়ে হাত দোয়ার ব্যবস্থা করে দেন এবং সকল ছাত্র-ছাত্রীদেরকে হ্যান্ড স্যানেটারি দিয়ে দুহাত মুছে দেন। শুরু হয় পাঠদান।
ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে কথা হলে তারা বলেন আমরা করোনা মহামারির জন্য গত প্রায় দুবছর শিক্ষা অর্জন করতে পারিনি। তার পরেও করোনা নিয়ন্ত্রনে আশায় সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ায় আমরা আনন্দিত। আমরা আমাদের শিক্ষা জীবন আবারো শুরু করতে পেরেছি। আমাদের শিক্ষাদের সাথে আমাদের আগের মতো কুশল বিনিময় হয়েছে এবং আমাদের সহপাঠিদের সাথে একে অপরের সাথে দেখা সাক্ষত হয়েছে। আমাদের শিক্ষকরা আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে অত্যান্ত সুন্দর ভাবে পরিচ্ছন্ন করে রাখায় আমরা ক্লাশ করতে সুবিধা হয়েছে।
এদিকে হাজীগঞ্জ উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার গত একসপ্তাহ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সাথে মতবিনিময় এবং নিজে সরেজমিনে ঘুরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ক্লাশ রুম পরিদর্শন করে শিক্ষকদের দিক নির্দেশনা দেন। সে মোতাবেক শিক্ষকরা কাজ করেন। আজ সকাল থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার সকাল থেকে এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আরেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে মনিটর করেন। কোথায়ও কোন সমস্যা আছে কি না। সকল কিছু ঠিকঠাক থাকায় শিক্ষকদের প্রতিষ্ঠ সন্তষ্টি প্রকাশ করেন।
হাজীগঞ্জ মডেল পাইলট হাইস্কুল এন্ড কলেজে অধ্যক্ষ আবু সাঈদের সাথে কথা হলে তিনি বলেন আমরা সরকারের সকল নিদের্শ মেনে এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তারে পরামর্শে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য সকল কিছু করেছি। ছাত্র-ছাত্রীদেরকে আমরা আনন্দের সাথে বরণ করেছি এবং আমরা আবারো ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে শিক্ষাদান শুরু করতে পেরেছি এতেই আমরা সন্তুষ্ট।
হাজীগঞ্জ পাইলট বাকিলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ দেলোয়ার হোসেন এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন আমরা দীর্ঘ দিন পর আমাদের সন্তানদের কে কাছে পেয়েছি তাতে আমরা অনেক খুশি। এখন থেকে আমরা পুরোধমে আবারো পাঠদান করে ছাত্রীদেরকে উচ্চ শিখরে নিয়ে যাবো।
হাজীগঞ্জ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাবেয়া সুলতানা বলেন আমরা আমাদের সন্তানদের কে দীর্ঘ ৫৪৪ দিন পর দেখতে পেরে মনে মাঝে আনন্দ বিরাজ করছে। আমরা আমাদের সন্তানদের কে বরণ করার জন্য সরকার যে নির্দেশনা দিয়েছে তা পালন করেছি। এখন থেকে আমরা আমাদের সন্তানদেরকে নিয়মিত শিক্ষাদান করে যাবো।
কয়েকজন অভিভাবকের সাথে কথা হলে তারা বলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ দেখে আমরা খুশি। শিক্ষকরা তাদের ছাত্র-ছাত্রীদের কে এতো সুন্দর ভাবে বরণ করবে তা আমরা চিন্তাও করিনি। তাই সরকার এবং শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞ।