মোঃ জামাল হোসেন ॥
শাহরাস্তি উপজেলার আয়নাতলী বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ১৪টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এ ঘটনায় প্রায় দেড় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীরা জানায়। গত ২৬ নভেম্বর রাত ১২ টায় ওয়াজেদ আলীর মুদি দোকানের মিটার থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। মুহুর্তের মধ্যেই আগুন ভয়াবহ আকার ধারণ করে। আগুনের দৃশ্য দেখতে পেয়ে পার্শ্ববর্তী এলাকার লোকজন ছুটে আসে। স্থানীয়রা আগুন নিভাতে চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। তারা জানান, মধ্যরাতে দোকানগুলো বন্ধ ছিল। তাই সঠিকভাবে পনি দেওয়া সম্ভব হয়নি। আগুন লাগার পর শাহরাস্তি ফায়ার সার্ভিসে সংবাদ দেওয়া হলে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। এরপর তাদের সাথে যোগ দেয় হাজিগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। প্রায় ২ ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে রাত প্রায় ২ টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। এরই মধ্যে ১৪টি দোকান সম্পূর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে যায়। পুড়ে যাওয়া দোকানগুলোর মধ্যে মোঃ আবুল বাশারের খাবার হোটেলে প্রায় ৪ লক্ষ, মোঃ ইউনুছ মিয়ার মুদি দোকানে সাড়ে ৩ লক্ষ, মোঃ ওয়াজেদ আলীর মুদি দোকানে ৩ লক্ষ, ডা. মোকবুল হোসেনের ফার্মেসীতে দেড় লক্ষ, ফারুক হোসেনের মোবাইলের দোকানে ৩ লক্ষ, মোঃ রিপনের কাপড় ও ট্রেইলার্সের দোকানে ৫ লক্ষ, ইমাম হোসেনের কাপড়ের দোকানে ৭ লক্ষ, ডা. মোফাজ্জল হোসেন রিপনের (গোডাউন সহ) ফার্মেসীতে ৪০ লক্ষ, মোঃ জসিম-মেহেদির (ক্যাবলস্ নেটওয়ার্ক) ডিসের দোকানে ৮ লক্ষ, সুমনের হার্ডওয়্যারের দোকানে ২০ লক্ষ, জাহাঙ্গীর আলমের ফলের দোকানে দেড় লক্ষ ও রুহুল আমিনের ওয়ার্কসপে ৫০ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। এছাড়াও মার্কেট মালিক আব্দুর রহমানের ৪০ লক্ষ টাকা ও রুস্তম আলী সরকারের ৮ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানান।
সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ দেলোয়ার হোসেন মিয়াজী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম কাউছার হোসেন, সংসদ সদস্য প্রতিনিধি ও উপজেলা উন্নয়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক হাজী আব্দুল লতিফ, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুল হোসেন, শাহরাস্তি মডেল থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ মোজাম্মেল হক মামুন, ইউপি চেয়ারম্যান জোবায়ের কবির বাহাদুর, শাহরাস্তি প্রেস ক্লাব সভাপতি কাজী হুমায়ুন কবির, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর মোঃ আদেল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জেড.এম আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তা করার লক্ষে ইতিমধ্যে সংসদ সদস্য মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম আশ্বাস দিয়েছেন।
এদিকে ব্যবসায়ীরা সব হারিয়ে পথে বসেছেন। অনেকেই কিস্তির টাকা পরিশোধ করার চিন্তায় কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। ব্যবসায়ীদের অনেকেই জানান, বিভিন্ন এনজিও থেকে তারা টাকা এনে ব্যবসা করেন। হঠাৎ করে এ অগ্নিকান্ডে তারা নিঃস্ব হয়ে পড়ছেন। তাই সরকারের প্রতি সহযোগিতার আকুল আবেদন জানিয়েছেন অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীরা।