শাহরাস্তি সংবাদদাতা ॥ জনসম্মুখে পঁচা ইলিশ জব্দ করে পুঁতে ফেলার নাটক সাজিয়ে সেই মাছ আবার বিক্রি করেছে শাহরাস্তিউপজেলা স্যানিটারী কর্মকর্তা মোঃ ফায়দুল্যাহ মিয়া। ঘটনাটি ঘটে গত ১৮ অক্টোবর শনিবার বিকাল ৫ টায় শাহরাস্তি উপজেলা গেইট দোয়াভাঙ্গা এলাকায়।
জানা যায়, ঐ দিন বিকেলে উপজেলার সেনগাঁও গ্রামের মৎস্য ব্যবসায়ী মফিজের কাছ থেকে ২ মন পঁচা ইলিশ জব্দ করেন উপজেলা স্যানিটারী কর্মকর্তা মোঃ ফায়দুল্যাহ মিয়া। মাছগুলো খাওয়ার অনুপযোগী হওয়ায় ওই বাজারের চিটাগাং বেকারীর পেছনে পুঁতে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়। এ সময় স্থানীয় সংবাদকর্মীরা এ ঘটনার প্রয়োজনীয় তথ্য ও ছবি সংগ্রহ করেন। যা পরদিন স্থানীয় বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। সংবাদকর্মীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করার পর স্যানিটারী কর্মকর্তা স্থানীয়দের সহযোগিতায় মোটাঅংকের উৎকোচ গ্রহণ করে জব্দকৃত ইলিশ ওই বিক্রেতাকে ফেরত দেন। যা পরদিন রবিবার বিকেল পর্যন্ত বিক্রয় করা হয়। মাছ বিক্রেতা মফিজ জানান, স্যানিটারী কর্মকর্তা তার প্রতিনিধির মাধ্যমে আমার নিকট থেকে তার নিজের, পুলিশ ও সাংবাদিকদের নাম ভাঙ্গিয়ে ৪ হাজার ৫ শত টাকা নিয়ে জব্দকৃত মাছ ফেরত দেন।
১৯ অক্টোবর রবিবার খবরটি স্থানীয় বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হলে এলাকাবাসীর মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এ ব্যাপারে মাছ বাজার সংলগ্ন ঔষধ বিক্রেতা ডা. এম রহমান জানান, শুনেছি ফরমালিন দিয়ে মাছের পঁচন রোধ করা হয়। আর এখন দেখছি, কর্মকর্তাদের উৎকোচ দিলে পঁচা মাছ তাজা হয়ে যায়!
স্থানীয় অটোরিক্সা চালক কবির হোসেন বলেন, মাছ নিয়ে টানা হেচঁড়া করতে দেখেছি। পরবর্তীতে টাকার বিনিময়ে মাছ ছেড়ে দিয়েছে। কোথাও গর্ত করে মাছ পুঁতে ফেলা হয়নি।
ওই বাজারের ব্যবসায়ী সোহেল জানান, একটি মাছও মাটির নীচে পুঁতেনি। বরং টাকার বিনিময়ে পুরো ২ মন মাছই ছেড়ে দিয়েছে ওই স্যানিটারী কর্মকর্তা। রবিবারও সারাদিন ওই পঁচা মাছগুলো বিক্রি করে।
বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহেদ মোর্শেদ বলেন, আমি ঘটনার সময় ছিলাম না। তবে পঁচা ইলিশ জব্দ করে মাটিতে পুঁতে ফেলাই ছিল স্যানিটারী কর্মকর্তার কর্তব্য। তা না করে উৎকোচের বিনিময়ে মাছ ছেড়ে দিয়ে এবং সাংবাদিকদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে তিনি জনগণের সাথে প্রতারণা করেছেন।
এ ব্যাপারে স্যানিটারী কর্মকর্তা মোঃ ফায়েদুল্যাহ মিয়ার ০১৭২৫-৮৯৪৭৪১ মুঠোফোনে আলাপকালে তিনি পঁচা ইলিশ জব্দের ঘটনাটি স্বীকার করেন। মাছ কোথায় মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে, জানতে চাইলে তিনি জানান, গর্ত করা হয়েছিল – পরে বাজার কমিটির কাছে সোপর্দ করে আমি চলে আসি। এরপর কি হয়েছে আমি জানিনা। আমি একটা তদন্তে আছি পরে কথা বলবো বলে তিনি লাইনটি কেটে দেন।