হাসানুজ্জামান ঃ
হাঁস-মুরগী চুরি, ঘরে চুরি-এবার গরু চুরিতে ধরা খেয়ে গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছে পল্টু চোরা। গত বৃহস্পতিবার রাতে চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার রায়শ্রী দক্ষিণ ইউনিয়নের ঘুঘুরচর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনা সূত্রে জানা যায়, ওই গ্রামের মিয়াজী বাড়ীর মৌলভী মোঃ মফিজুর রহমানের পুত্র ফয়েজ আহম্মেদ ওরফে পল্টু চোরা ঘটনার দিন রাতে একই গ্রামের পাটোয়ারী বাড়ির মৃত নুরুল ইসলামের পুত্র ৬নং ওয়ার্ড মেম্বার হাসান আহম্মেদের একটি গরু চুরি করে। পার্শ্ববর্তী কুমিল্লা জেলার মনোহরগঞ্জ উপজেলার ঝলম ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামের লোকজন রাত অনুমান ১টায় সন্দেহজনক ভাবে চোরাই গরুসহ পল্টুকে আটক করে। অসংগতিপূর্ণ কথার কারণে ওই এলাকার জনগণ তাকে গণধোলাই দেয়। এতে সে গুরুতর আহত হয়। এসময় নিজ এলাকায় খবর দিলে স্থানীয় মেম্বার ও পল্টু পরিবারের লোকজন তাদের জিম্বায় গরু ও পল্টু চোরাকে ছাড়িয়ে আনে। এরই মধ্যে গরুর মালিক হাসান মেম্বার তার গোয়ালে গরু দেখতে না পেয়ে ঘটনার সত্যতা প্রকাশ করেন। এ ব্যাপারে হাসান মেম্বার বলেন, আগামী ঈদুল আযহায় কোরবানির জন্য সাড়ে ১৯ হাজার টাকায় একটি ষাড় গরু ক্রয় করি ১ সপ্তাহ আগে। ঘটনার দিন রাতে খবর পেয়ে গোয়াল ঘরে গিয়ে দেখি গরুটি নেই। পরে মির্জাপুরে গিয়ে দেখি আমার গরুটি সহ জনতার হাতে আটক রয়েছে পল্টু। অবস্থা নিয়ন্ত্রনে আনতে স্থানীয় জনগণকে সাদা কাগজে প্রাপ্তি শিকারোক্তি মূলক স্বাক্ষর দিয়ে গরুসহ চোরকে ছাড়িয়ে আনি। এলাকায় আনার পর পল্টুর গায়ে কেউ হাত তোলেনি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, আটকের স্থানে জনগণের গনধোলাইয়ে তার যে শাস্তি হয়েছে তা-ই যথেষ্ট। এছাড়া আমি আমার গরু ফেরৎ পেয়েছি যে কারনে থানা পুলিশের হাতে তুলে দেইনি পল্টুকে। গরু চুরির ঘটনায় গণধোলাইয়ে গুরুতর আহত পল্টুর পিতা মৌলভী মোঃ মফিজুর রহমান বলেন, আমার ছেলের অবস্থা ভালো নয়, পশু-জানোয়ারের মত তাকে পিটিয়েছে। পল্টু যদি এ ঘটনায় জড়িত থাকে তাহলে বলার কিছু নেই। যদি কেউ তাকে ঘটনায় ফাঁসিয়ে এমন বেদম প্রহার করে থাকে তাহলে আল্লাহ তাদের বিচার করবেন। এলাকাবাসী বলেন, পল্টু মূলত একটা চোর। ইতোপূর্বে তার চুরির এহেন ঘটনা অনেক। এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য- “শাহরাস্তি স্কুলের সামনে মোবাইল চুরি” এতে তাকে গণধোলাই, মনোহরগঞ্জ উপজেলার শরিফপুরে গরুচুরির ঘটনায় সেখানেও গণধোলাই, বিজয়পুর গ্রামের ডাঃ মোহাম্মদ হোসাইনের ২টি খাসি চুরির ঘটনা। এছাড়াও এলাকার মানুষের ঘরে চুরি, বিভিন্ন লোকের সাথে প্রতারনা, নারী কেলেংকারী, মিথ্যা মামলায় মানুষকে হয়রানি করা সহ বহু ঘটনার জন্মদাতা এ পল্টু। এলাকায় বহুবার শালিশ দরবার করেও তাকে সুধরাতে পারেনি কেউ। এ পর্যন্ত বহুবার জেল খেটেজে সে। তবুও তার লাজ-লজ্জা হয়নি। এবার তাকে সমাজ বিচ্যুত করার জন্য সমাজবাসীরা একত্রিত হয়ে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা প্রয়োজন বলে মনে করেন।