মতলব দক্ষিণ উপজেলার নারায়ণপুর আবারো ইউনিয়ন পরিষদ হিসেবে কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। হাইকোর্টের রিটের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে এ কার্যক্রম শুরু হচ্ছে বলে জানা যায়। নারায়ণপুর ইউনিয়ন পরিষদকে ২০১০ সালে পৌরসভা ঘোষণা করা হলেও এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে পরিষদের চেয়ারম্যান ২০১০ সালে হাইকোর্টে মামলা করলে প্রথমবার গত ২ মে পৌরসভার উপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করে হাইকোর্ট। পরবর্তীতে আবার গত ১৪ জুলাই হাইকোর্ট পৌরসভার কার্যক্রমের ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞা জারি করে। ফলে বর্তমানে ইউনিয়ন পরিষদ হিসেবে কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে। কিন্তু পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা থাকায় তিনি পলাতক রয়েছেন। এতে ২৪ গ্রামের ৬০ হাজার মানুষ রয়েছে বিপাকে।
এলাকাবাসী জানায়, উক্ত ইউনিয়ন পরিষদকে পৌরসভা করার জন্য ২০১০ সালে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর। একই বছরের ১৫ জুলাই মন্ত্রণালয় একে পৌরসভায় উন্নীত করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এ বছরের ৩০ এপ্রিল মন্ত্রণালয় পৌরসভার গেজেট প্রকাশ করে। গত ২৭ মে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। পৌরসভার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে চেয়ারম্যান জহিরুল মোস্তফা তালুকদার হাইকোর্টে রিট আবেদন করলে আদালত গত ২ মে দু’ মাসের জন্য এবং পরে গত ১৪ জুলাই অনির্দিষ্টকালের জন্য পৌরসভার কার্যক্রমের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ‘লোক’ হিসেবে পরিচিত পঁয়ালী গ্রামের লোকমান মিজি গত ৮ আগস্ট পরিষদের চেয়ারম্যান ও দু’ সদস্যসহ আটজনের বিরুদ্ধে পৌরসভার ভিত্তিপ্রস্তর ভাঙ্গার অভিযোগে মামলা করলে তখন থেকে চেয়ারম্যান ও দুই সদস্য পলাতক। ফলে ইউনিয়ন পরিষদের কর্যক্রম কার্যত বন্ধ।
ইউনিয়নের বাড়ৈগাঁও গ্রামের বাসিন্দা আবু সায়েম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ-বিএনপির দ্বন্দ্বের খেসারত দিচ্ছে এলাকাবাসী। এলাকার উন্নয়ন হচ্ছে না, ভোগান্তি পোহাচ্ছে মানুষ। আওয়ামী লীগ চায় পৌরসভা, বিএনপি চায় ইউনিয়ন পরিষদ। চেয়ারম্যান নিজেও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি। দু’ দলের দ্বন্দ্বে এটি এখন না পৌরসভা, না ইউনিয়ন পরিষদ।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই এলাকার আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘এলাকার ৮০ শতাংশই কৃষিজমি। এখানে পৌরসভা হয় কীভাবে? এটা হচ্ছে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ‘পৌরসভা’। এটা না হলে জনগণ বেঁচে যাবে।’ বর্তমানে ‘নারায়ণপুর’ কী পৌরসভা? না ইউনিয়ন! এমন বেড়াজালে আবদ্ধ নারায়নপুরবাসী।
ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোস্তফা মজুমদার বলেন, ‘পৌরসভা বাতিল। ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রমও নেই। লোকজন বিভিন্ন কাজে এসে ফিরে যায়। জন্মনিবন্ধন, চারিত্রিক, নাগরিকত্ব, ওয়ারিশ সনদ নিতে পারছে না তাঁরা। টিআর, কাবিখার ৬১ টন চালও ফেরৎ যাওয়ার পথে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং আদালতের আদেশ অনুসারেই সবকিছু চলছে।’