জিসান আহমেদ নান্নু-
কচুয়া উপজেলার ২৭ নং আশারকোটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের নির্মান কাজ চলছে কচ্ছপ গতিতে। এছাড়া নির্মানকাজে নিন্মমানের সামগ্রী ব্যবহার করছে বলে স্থানীয় অধিবাসীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এলাকাবাসী দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারকে কাজের মানের বিষয়ে বার বার তাগিদ দিয়েও কোন ফল পাচ্ছে না বলেও এলাকাবাসী জানায়।
সরে জমিনে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর কচুয়া আসনের সাংসদ, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর এলজিইডি অধিদপ্তরের অর্থায়নে ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে প্রায় ৯৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে আধুনিক দ্বিতল ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর কাজের শুভ উদ্বোধন করেন। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার কাজ পাওয়ার পর বিদ্যালয়ের ভবনের কাজ শুরুর প্রায় ১৪ মাস অতিবাহিত হলেও কাজের উল্লেখযোগ্য কোন অগ্রগতি নেই। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ সফিকুল ইসলাম পাঠান জানান, ঠিকাধারী প্রতিষ্ঠান কাজের শুরুতে নিয়মানুসারে প্রতিষ্ঠানকে কাজের একটি স্টীমিট (সিডিউল) দেয়ার কথা থাকলেও ঠিকাদার আজ ও আমাদের তা দেয়নি। তিনি আরো জানান, ফাউন্ডেশনের ঢালাই একদিনে হওয়ার কথা থাকলেও তারা গাফিলতির মাধ্যমে কয়েকদিন ধরে নিজ ইচ্ছামাফিক তা সম্পন্ন করে। এছাড়া সিলিকন বালি দিয়ে কাজ করার কথা থাকলেও নিন্মমানের সিমেন্ট ও পরিত্যক্ত ময়লাযুক্ত ইটাবালি দিয়ে ঠিকাদার কাজ করে আসছে। এ নিয়েও এলাকাবাসী ও আমরা ঠিকাদারকে কয়েকবার বলা সত্ত্বেও ঠিকাদার বিষয়টি আমলে নিচ্ছে না। বিশেষ করে গত কোরবানীর ঈদের আগে ঠিকাদার কাজ ফেলে চলে যাওয়ার পর অদ্যবধি পর্যন্ত কাজে কোন শ্রমিক ও ঠিকাদার আসেনি।
বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক ও প্রাক্তন সভাপতি মোঃ ফজলুর রহমান মাস্টার জানান, ঠিকাদারের গাফিলতির ফলে বর্তমানে শিক্ষার্থীদের পাঠদান দারুণভাবে ব্যহত হচ্ছে। বাধ্যহয়ে শিক্ষার্থীদের অফিসকক্ষসহ খোলা আকাশের নিচে পাঠদান করা হচ্ছে। এছাড়া পাশের টিনসেড ভবনে ঠিকাদারের লোকজন ২টি কক্ষ দখল করে নেয়া, পানির কাজের ব্যবহার করা একমাত্র টিউবওয়েলটি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় অধিবাসী আব্দুল আউয়াল, ডা. মোশারফ হোসেন, মাহফুজুর রহমান, মোজাফ্ফর হোসেন, আব্দুল কাদের, আব্দুস সামাদ, আব্দুল মবিন ও হারুন অর রশিদসহ আরো অনেকে জানান, কাজের মান নিয়ে বেশ ক’বার আপত্তি তুলে কোন অগ্রগতি হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিশ্চুক এক ব্যাক্তি জানান, কাজের বিষয়ে আপত্তি তোলার কারনে আগামী ৫বছরে ও এ কাজ শেষ হবে না ঠিকাদারের লোকজন জানিয়েছে বলে তিনি দাবী করেন। এ ব্যাপারে কচুয়া উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয়ে তথ্য জানতে গেলে উপজেলা প্রকৌশলী না থাকায় উপসহকারী প্রকৌশলী মোঃ শাহজাহান মিয়া এ ব্যাপারে কোন রকম তথ্য না দিয়ে সাংবাদিকদের পরে আসতে বলে টাল বাহানা করে। কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার মোঃ আসাদুর রহমান জানান, এলাকাবাসীর অসহযোগীতা ও অর্থের অভাবে সঠিকভাবে কাজ শেষ করা যাচ্ছে না বলে জানান।