মনিরুল ইসলাম মনির
মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর পৌরসভা গঠনের প্রায় ২২ বছর পার হলেও পৌরবাসী নাগরিক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। এ পৌরসভার সড়কপথ জরাজীর্ণ এবং পানি ও গ্যাস নেই। নামেই শুধু প্রথম শ্রেণির পৌরসভা। উপরন্তু বেড়েছে জমি ও বাড়ির কর। এলাকার গুরুত্বপূর্ণ অনেক রাস্তাই এখন চলাচলের অনুপযোগী। গ্রাম-মহল্লার রাস্তাঘাট বেহাল। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদফতরে নির্মিত বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ প্রকল্পটি চালু না হওয়ায় এটি এখন পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। পরিত্যক্ত পানির পাম্পের ঘরেই বসবাস করছেন উপজেলার এক কর্মচারী। ফলে ছেংগারচর পৌরবাসী বিশুদ্ধ পানি থেকে বঞ্চিত রয়েছেন।
সরজমিনে জানা যায়, ছেংগারচর পৌরসভায় দু’টি নলকূপ স্থাপন করা হয়। একটি ঘনিয়ারপাড়, অন্যটি বারআনী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে। এ দু’টি পাম্প হাউসে ৪ ইঞ্চি ব্যাসের ৪.২৫ কিলোমিটার পাইপ লাইন স্থাপন করা হয়েছে। ২০১০ সালের ১৮ আগস্ট ১ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণকৃত পাম্প ও পানির পাইপলাইন পৌরসভার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল। কিন্তু আজ পর্যন্ত পৌরবাসীকে কোনো সংযোগ লাইন প্রদানসহ পাম্প হাউস দু’টি চালু করা হয়নি। এলাকাবাসী নিরাপদ (আর্সেনিকমুক্ত) পানি না পেয়ে বাধ্য হয়ে আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করছেন। ফলে পৌরসভার ৪৫ হাজার সাধারণ জনগণ বিশুদ্ধ পানি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এটি একটি প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হওয়া সত্বেও গ্যাসের কথা স্বপ্নেও ভাবতে পারছেন না এলাকাবাসী।
ছেংগারচর পৌর বাজারের ড্রেন নির্মাণ করা হলেও পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকার কারণে পরিবেশের ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়ছে এবং অস্বাস্থ্যকর রূপ ধারণ করেছে। বাজারসহ পৌর এলাকার প্রধান প্রধান সড়কে ল্যাম্পপোস্ট না থাকায় সন্ধ্যার পরই অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যায়। এসব রাস্তঘাট অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকার কারণে মাদকাসক্তসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক ঘটনা ঘটছে। সব মিলেই যেন অভিভাবকহীন এ পৌরসভা। পৌরসভার ম্যানুয়েল অনুযায়ী পৌরসভা গঠন করতে ওই এলাকায় কল-কারখানা, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানিসহ শিল্পপ্রতিষ্ঠান থাকতে হয়। কিন্তু ম্যানুয়েলের ৩(২) ধারা লংঘন করে ১৯৯৮ সালে ছেংগারচর পৌরসভা গঠন করা হয়। ফলে প্রায় ২২ বছরেও পৌরবাসী কোনো উন্নয়নের সুফল পাননি।
পৌরসভার মেয়র রফিকুল আলম জজ নির্বাচনের পর এলাকা ত্যাগ করে ঢাকায় অবস্থান করেন। সেখান থেকেই পৌরসভার অর্থনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ কাজকর্ম পরিচালনা করেন। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য তার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
ছেংগারচর পৌরসভার প্যানেল মেয়র আবদুল মান্নান বলেন, পৌরসভার উন্নয়নের জন্য আমরা সার্বিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করছি কয়েক বছরের মধ্যেই পৌরবাসীর সেবার মান বৃদ্ধি বাড়বে।