গোলাম মোস্তফা-
দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত উন্নয়নে দায়িত্বরত প্রতিষ্ঠানটি হচ্ছে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর। জেলার শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজ করা হয়। সেই প্রেক্ষিতেই চাঁদপুর জেলার ৫টি সংসদীয় নির্বাচনী এলাকায় বিগত মহাজোট সরকার ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ৬ বছর যাবৎ জেলার ৮টি উপজেলায় ১৫৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যথাক্রমে সরকারি ও বেসরকারি কলেজ, সরকারি ও বেসরকারি উচ্চ মাধ্যমিক বালক ও বালিকা বিদ্যালয় এবং মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন কাজ সমাপ্ত করা হয়েছে। এতে ৭৪ কোটি ৯১ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়েছে। এছাড়াও জেলার উপজেলাগুলোতে বর্তমানে ৬৬টি সরকারি, বেসরকারি কলেজ, উচ্চ বিদ্যালয় এবং মাদ্রাসার অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ চলছে। এর সাথে একটি পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট রয়েছে। বর্তমান চলমান কাজে ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৩২ কোটি ৪৪ লাখ ২ হাজার টাকা। যা চলতি অর্থ বছরেই সমাপ্ত করা হবে। তবে আরো বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর অবকাঠামো উন্নয়ন শিক্ষকদের বাসস্থানসহ বিভিন্ন প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। যেগুলো অতি শীঘ্রই প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ পেলেই টেন্ডার করে কাজ চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবকাঠামোগত উন্নয়ন বিষয়ক প্রতিষ্ঠান জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর।
জানা যায়, ২০০৯ সাল থেকে চলতি বছরের অর্থাৎ ২০১৪ সালের জুন মাস পর্যন্ত জেলার সংসদীয় ৫টি নির্বাচনী এলাকায় বিগত ৬ বছরে ১৫৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একাডেমিক ভবন বা অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজ এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর অফিস ভবন ও বিভিন্ন ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। এতে ব্যয় হয়েছে ৭৪ কোটি ৯১ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। আর চলতি অর্থ বছরে আরো ৬৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একইভাবে উন্নয়নমূলক কাজ চলছে। যা চলতি অর্থ বছরে শেষ করা হবে। এতে ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৩২ কোটি ৪৪ লাখ ২ হাজার টাকা। এছাড়াও একটি পলিটেকনিক্যাল অবকাঠামো উন্নয়নকাজও সমাপ্ত করা হয়েছে। আরেকটি চলমান রয়েছে।
সংসদীয় আসন ভিত্তিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংখ্যায় দেখা যায় সমাপ্তকৃত কাজের মধ্যে চাঁদপুর-১ কচুয়া উপজেলায় ৩টি কলেজ, ১৩টি সরকাারি ও বেসরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, ৫টি মাদ্রাসা এবং একটি পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট। চাঁদপুর-২ (মতলব উত্তর ও দক্ষিণ উপজেলা) মধ্যে ৬টি কলেজ, ২৬টি উচ্চ বিদ্যালয় ও ২টি মাদ্রাসার কাজ সমাপ্ত করা হয়েছে। চাঁদপুর-৩ (চাঁদপুর সদর ও হাইমচর উপজেলা) সরকারি ও বেসরকারি ৭টি কলেজ, ২৮টি উচ্চ বিদ্যালয়, ৮টি মাদ্রাসা এছাড়াও ৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অফিস ভবন কাজ সমাপ্ত করা হয়েছে। চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ উপজেলা) একটি কলেজ, ১৩টি উচ্চ বিদ্যালয়, ৩টি মাদ্রাসা। চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ ও শাহরাস্তি) উপজেলায় ৩টি কলেজ, ২৬টি উচ্চ বিদ্যালয়, ৬টি মাদ্রাসা কাজ শেষ করা হয়েছে। আর সংসদীয় আসনভিত্তিক চলমান অবস্থায় রয়েছে চাঁদপুর-১ কচুয়া উপজেলায় ২টি কলেজ, ১০টি উচ্চ বিদ্যালয়, ৪টি মাদ্রাসা, ১টি পলিটেকনিক্যাল। চাঁদপুর-২ মতলব উত্তর ও দক্ষিণ উপজেলার ৫টি কলেজ, ৭টি উচ্চ বিদ্যালয়, ১টি মাদ্রাসা। চাঁদপুর-৩ চাঁদপুর সদর ও হাইমচর উপজেলায় ৬টি কলেজ, ৬টি উচ্চ বিদ্যালয়, ৫টি মাদ্রাসা। চাঁদপুর-৪ ফরিদগঞ্জ উপজেলায় ২টি কলেজ, ২টি উচ্চ বিদ্যালয়, ৪টি মাদ্রাসা। চাঁদপুর-৫ হাজীগঞ্জ শাহরাস্তি উপজেলায় ২টি কলেজ, ৮টি উচ্চ বিদ্যালয় ও ১টি মাদ্রাসার অবকাঠামোগত উন্নয়নমূলক কাজ চলমান অবস্থায় রয়েছে। এছাড়াও কচুয়া উপজেলায় পলিটেকনিক্যাল ইন্সটিটিউটের একটি নব নির্মিত ভবনের কাজ চলছে।
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রাপ্ত তথ্যমতে, উপজেলা ভিত্তিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ভাগ করলে দেখা যায় জেলার ৮টি উপজেলায় যথাক্রমে চাঁদপুর সদর উপজেলার ৩৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন কাজ সমাপ্ত করা হয়েছে। ১৩টি প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত কাজ চলছে। ফরিদগঞ্জ উপজেলায় ১৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাজ শেষ করা হয়েছে এবং ৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাজ চলমান রয়েছে। হাইমচর উপজেলায় ৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাজ শেষ করা হয়েছে, ৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাজ চলমান রয়েছে। কচুয়া উপজেলায় ২২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাজ সমাপ্ত করা হয়েছে। ১৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাজ চলমান রয়েছে। হাজীগঞ্জ উপজেলায় ১৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাজ সমাপ্ত করা হয়েছে। ৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাজ চলমান রয়েছে। শাহরাস্তি উপজেলায় ১৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাজ শেষ হয়েছে, ৬টি চলমান রয়েছে। মতলব উত্তর উপজেলায় ১৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাজ শেষ হয়েছে, ৪টি চলমান রয়েছে। মতলব দক্ষিণ উপজেলায় ১৯টি কাজ শেষ করা হয়েছে, ৯৮টি চলমান রয়েছে। এক কথায় চাঁদপুর জেলার সরকারি বেসরকারি ১৫৪টি কলেজ, উচ্চ বিদ্যালয় (বালক বালিকা) ও ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মাদ্রাসার অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজ সমাপ্ত করা হয়েছে। ৬৬ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাজ চলমান রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট বিভাগের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বর্তমান সরকার শিক্ষা ব্যবস্থাকে গুরত্ব দিয়ে শিক্ষার্থীদেরকে আগামীতে দেশ গড়ার যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে যেমনিভাবে শিক্ষার কারিগর শিক্ষকদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করেছেন তেমনি সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোরও সকল ধরণের অবকাঠামোগত উন্নয়নে বেশ কিছু নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। জেলার সচেতন নাগরিকরা মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বিগত মহাজোট সরকার ও বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার যে হারে এ জেলায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজ করেছেন সেটি সত্যিই অতি বিরল ঘটনা।