ফেডারেল আদালতের নির্দেশনার পরও পরিবারকে খুঁজে পায়নি যুক্তরাষ্ট্রের ৫৪৫ শিশু। মেক্সিকো থেকে অভিবাসনের প্রত্যাশায় যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সময় এসব শিশু তাদের পরিবার থেকে আলাদা হয়ে যায়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ‘নো টলারেন্স’ নীতির কারণে এসব শিশুকে আলাদা করা হয়।
আদালতের নির্দেশের পরও যুক্তরাষ্ট্রের মেক্সিকো সীমান্তে ২০১৮ সাল থেকে প্রায় এক হাজার অভিবাসী শিশুকে তাদের মা-বাবার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনকে এ প্রক্রিয়া বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। সে নির্দেশনার পর দুই বছর কেটে গেলেও এখনো ৫৪৫ শিশুকে তাদের পরিবার ফিরে পায়নি। তাদের কোনো খোঁজও দিতে পারেনি সরকার।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) মার্কিন আদালত এবং সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন (এসিএলইউ) করা একটি মামলার নথি অনুসারে, ওই শিশুদের ১ জুলাই ২০১৭ থেকে ২৬ জুন ২০১৮ সময়ের মধ্যে বাবা-মা’র কাছ থেকে আলাদা করা হয়। পরে ওই শিশুদের তাদের পিতামাতার কাছে ফিরিয়ে দিতে সরকারকে নির্দেশ দেন আদালত।
তিন বছরের কন্যা শিশুকে তার পিতার কাছ থেকে আলাদা করা হয়। কারণ তিনি প্রমাণ করতে পারেননি যে তিনি মেয়েটির পিতা। পরে পরিবার ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিত করে। এর মধ্যে আটক অবস্থায় শিশুটিকে যৌন নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এসিএলইউর এক অ্যাটর্নি লী জিল্যার্ন্ট বলেন, এটা দুঃখজনক যে ট্রাম্প প্রশাসন শিশুদের তাদের পিতামাতার কাছ থেকে আলাদাকরণ অব্যাহত রেখেছে। জিল্যার্ন্ট আরও বলেন, এই নিষ্ঠুর ও অবৈধ নীতিমালার শিকার হাজার হাজার পরিবারের সঙ্গে আরও ৯ শতাধিক পরিবার যোগ হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন এ বিষয়ে আদালতের আদেশও অগ্রাহ্য করছে।
ট্রাম্প প্রশাসন সব ধরনের অবৈধ অভিবাসন প্রত্যাশীর বিরুদ্ধে আইনগত ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করার প্রথম ৬ সপ্তাহেই প্রায় ২ হাজার শিশু পরিবার-বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। অতীতে এমন নজির দেখা যায়নি। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিওত শিশুদের পরিবারের কাছে ফেরার আকুতি স্পষ্ট হয়ে পড়ে। তাদের কান্নার ছবি দেখে নড়েচড়ে বসে যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে রাজনীতিবিদরা।
সবার চাপে ট্রাম্প তার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন। চাপের মুখে শিশুদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্নকরণ ঠেকাতে নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করলেও অভিবাসী প্রশ্নে এখনও পূর্বের জিরো টলারেন্স নীতিতে অটল থাকেন ট্রাম্প।