স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী এক ধরনের নেতিবাচক প্রচারনা চলেছিল। কিন্তু গত ৫০ বছরে বাংলাদেশ সেসব প্রচারনা বা প্রক্ষেপণকে মিথ্যা প্রমাণ করে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে অপ্রত্যাশিত সাফল্য পেয়েছে। এ সাফল্য অনেক কিছুর সমন্বয়ে এসেছে। এর পেছনে ক্ষুদ্র ও বড় চাষী, প্রবাসী শ্রমিক,সরকারের নানামুখী নীতি সহায়তা ও উদ্যোগী ভূমিকা, ক্ষুদ্র ও বড় উদ্যোক্তা, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগি ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার ভূমিকা উল্লেখ করার মত।
রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক অর্থনীতিবিদ ড. কে. এ. এস মুর্শিদের লেখা ‘দ্য অডস রিভাইজড- দ্য পলিটিক্যাল ইকোনমি অব ডেভলপমেন্ট অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথা বলেন।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউট এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড.মসিউর রহমান।
পিআরআই সভাপতি ড.জাহিদী সাত্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড.ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ, ড. হোসেন জিল্লুর রহমান,বিআইডিএস এর সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড.কাজী ইকবাল,বইটির লেখক ড.কে.এ.এস মুর্শিদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। পিআরআই নির্বাহী পরিচালক ড.আহসান এইচ মনসুর অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড.মসিউর রহমান বলেন,গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের শিক্ষার হার বেড়েছে বিশেষ করে নারী শিক্ষার যথেষ্ট বিস্তার ঘটেছে যার সরাসরি প্রভাব অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে পড়ছে। এছাড়া গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে আমরা যথেষ্ট উন্নতি করেছি।
অনুষ্ঠানে ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ বলেন,‘ স্বাধীনতা লাভের পর শুরুর দিকে বাংলাদেশকে নিয়ে নানাবিধ নেতিবাচক প্রচারণা ছিল। আমরা সেগুলো মিথ্যা প্রমাণ করে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে অপ্রত্যাশিত সাফল্য পেয়েছি। কৃষি বিপ্লব ঘটেছে।
এখন পর্যন্ত আমরা আশাতীতভাবে এগিয়েছি। তবে সামনের দিনগুলোতে মানসম্মত শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তোলা জরুরি। একইসাথে প্রশিক্ষিত শ্রমিক তৈরি, মজুরি বৃদ্ধি ও উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। আধুনিক অর্থব্যবস্থা ও অর্থনৈতিক কূটনীতি বাড়ানো জরুরি বলে তিনি মন্তব্য করেন।’
ড.হোসেন জিল্লুর রহমান বাংলাদেশের ৫০ বছরের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় ব্যক্তি উদ্যোগ বা সামষ্টিকের তুলনায় ব্যক্তি পর্যায়ের ভূমিকা বেশি ছিল বলে মনে করেন। আলোচনা শেষে বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। বইটি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস থেকে প্রকাশিত হয়েছে।