মো. সাইফুল ইসলাম
দেশব্যাপী বিএনপি-জামাত তথা ২০ দলীয় জোটের টানা অবরোধ ও হরতালে হাজীগঞ্জ উপজেলায় বিভিন্ন সময়ে মহাসড়কে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এতে হাজীগঞ্জ থানা প্রশাসন নাশকতারীদের ধরার জন্য প্রতিনিয়তই অভিযান অব্যাহত রাখে। গত কয়েকমাস আগে চাঁদপুর জেলা বিএনপির কমিটি ভেঙ্গে দেয়ার পর চাঁদপুর জেলা বিএনপির আন্দোলনের জান্ডা ভেঙ্গে যায়। এতে দেখা যায়, জেলার মধ্যে আন্দোলনের নামে কয়েকটি গাড়ীতে পেট্রোল বোমা মেরে আগুন দেয়, রাতের আধাঁরে চলে ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগের মতো ঘটনা। এতে কয়েকটি স্থানে আন্দলনের নামে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ হলেও অবরোধ ও হরতালে যানবাহনের চলাচল ছিলো স্বাভাবিক। চাঁদপুর কমিল্লা মহাসড়কে দেখা যায়, চাঁদপুর, কুমিল্লা, ঢাকা, চট্রগ্রাম, সিলেটসহ সারা দেশের যাত্রিপরিবহন বাস চলাচল করছে।
গত ৫ জানুয়ারী নির্বাচনীয় সহিংশতায় সারা দেশের মধ্যে চাঁদপুর জেলা ছিলো আন্দোলনের টার্নিং পয়েন্ট। তখন জেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন হাজীগঞ্জের কৃতি সন্তান ইঞ্জিনিয়ার মমিনুল হক। তার পর গত কয়েক মাস পূর্বে চাঁদপুর জেলা বিএনপির কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে শেখ ফরিদ আহম্মেদ মানিককে আহবায়ক করে জেলা আহবায়ক কমিটি দেয়া হয়। তার পর থেকে চাঁদপুরে বিএনপি তথা ২০ দলীয় জোটের আন্দোলনের হাতও ভেঙ্গে যায়। এর পর পর হাজীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি ও শহর বিএনপির কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে বিএনপির নাম মাত্র সদস্য হাইব্রিড নেতা অধ্যক্ষ আলমগীর কবির পাটওয়ারীকে আহবায়ক করে কমিটি দেয়ায় হাজীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আন্দলন আরো নিস্তব্ধ হয়ে পড়ে। অধ্যক্ষ আলমগীর কবির পাটওয়ারী আহবায়ক হওয়ার পর অর্থ যোগান দিয়ে কয়েকটি স্থানে নাশকতা ও আন্দলন চালায়। এতে কয়েকটি ঘটনায় হাজীগঞ্জ থানায় ১০টি মামলা হয়। এ মামলাগুলোতে প্রায় ১ হাজার নামীয় আসামী ও অজ্ঞাত প্রায় ১৫শ আসামী রয়েছে। প্রকৃত পক্ষে যারা গত বছর বিএনপির ডাকে অন্দোলন করেছিলো, তাদের কমিটি ভেঙ্গে দেয়ার পর গত ৫ জানুয়ারী থেকে টানা অবরোধ ও হরতালের কোনো পিকেটিং ও আন্দোলনে দেখা যায়নি সাবেক জেলা বিএনপির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মমিনুল হকের সর্মথকদের। তারা গাঁ ঢাকা দিয়ে থাকলেও সহিংশতার মামলাগুলোতে তারাই আসামী। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে সাবেক এমপি এম.এ মতিন সমর্থীত নেতা কর্মীরা মাঠে থাকে আন্দোলন ও নাশকতাসহ যানবাহন ভাংচুর এবং বিভিন্ন স্থানে মিছিল মিটিং করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা না হয়ে আন্দোলন থেকে নিস্কৃয় নেতাকর্মীরা আটক ও হয়রানী হচ্ছে।
গত ১ মার্চ রবিবার সকাল ১১টায় পৌরসভাধীন টোরাগড় পৌর ছাত্রদলের নেতা ইয়াছিন আরাফাত অনিক এর নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল হয়। সে মিছিল থেকে কয়েকজন কর্মী কায়েকটি যানবাহন ভাংচুর করে। সে ঘটনায় হাজীগঞ্জ থানায় কোনো মামলা হয়নি। এমনকি ইয়াছির আরাফাত অনিক তার ফেইজবুক আন্দোলনরত ছবি ও একটি স্ট্যাটাস দেয়া। স্ট্যাটসের লেখাটি হুবাহু ১লা মার্চ ২০১৫ এই সৈরাচারী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধচারী জনগণের ভোটাধীকার আদায়ের লক্ষে এবং বেগম খালেদা জিয়ার ডাকে হরতালের সমর্থনে জনাব এম এ মতিন স্যারের পক্ষে রাজপথে এক বিশাল বিক্ষোভ মিছিল করেন হাজীগঞ্জ পৌর ছাত্রদল…শ্লোগানটি, রাজপথ ছারিনাই খালেদা জিয়ার ভয়নাই, রাজপথ ছারিনাই মতিন স্যারের ভয়নাই, রাজপথ ছারিনাই তারেক জিয়ার ভয়নাই।
কিন্তু দেখা যায় গত সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় সাবেক পৌর যুবদলের যুগ্ম-আহবায়ক মো. মিজানুর রহমান সেলিমকে আটক করে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ।
হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শাহ আলম জানান, মিজানুর রহমান সেলিমকে আটক করা হয় রবিবার টোরাগড়ে তার নেতৃত্বে কয়েকটি যানবাহন ভাংচুর করা হয়। সে ঘটনায় তাকে আটক করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
মিজানুর রহমান সেলিম আটক হওয়ার পর থেকে ইঞ্জিনিয়ার মমিনুল হকের সর্মথিত নেতা কর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে গ্রেপ্তার আতংক। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এমন কয়েকজন নেতা কর্মীরা জানান, আমরা বিএনপির আন্দোলনে না থেকেও আমরা এখন গ্রেপ্তার ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। আর যারা আন্দোলনের নামে নাশকতা করছে তারা এখন প্রকাশ্যে গুরছে।