ঢাকা: রূপসী বাংলা হোটেল সংস্কার কাজের জন্য কোনো শ্রমিক-কর্মচারী চাকরি হারাবে না বলে আশ্বস্ত করেছেন বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন।
তিনি বলেন,‘হোটেল পুনর্নির্মাণকালে কেউ চাকরি হারাবে না।’ শ্রমিক-কর্মচারীরা যে হারে সার্ভিস চার্জ পেতেন তাও দেয়ার নিশ্চয়তা দেন মন্ত্রী।
মঙ্গলবার বিকেলে হোটেলের শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়ন আয়োজিত ঈদ পুনর্মিলনী ও পর্যটনমন্ত্রীর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে রাশেদ খান মেনন এ কথা বলেন।
সংস্কার প্রক্রিয়ায় হোটেলের শ্রমিক ও কর্মচারীদের চাকরি হারানোর আশঙ্কার পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রী এ আশ্বাস দেন।
এসময় শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন,‘হোটেল সংস্কারের প্রয়োজনে যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রস্তুত থাকবে হবে। তাদের সার্বিক নিরাপত্তার ব্যাপারেও কোনো ছাড় দেয়া হবে না।’ অনুষ্ঠানে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান মন্ত্রী মেনন ও আমুর সঙ্গে একমত পোষণ করে বক্তব্য দেন।
অবশ্য মন্ত্রীদের আশ্বাস সত্ত্বেও সন্তুষ্ট নন শ্রমিক ও কর্মচারীরা। অনুষ্ঠান ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ শফিউদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা গাজী বর্তমান ভবন ভাঙার বিরোধিতা করেন। শফিউদ্দিন বলেন, ‘প্রয়োজনীয় সংস্কার করেই নতুনভাবে হোটেল চালু করা সম্ভব ছিল। অথবা একটি টাওয়ার ভবন নির্মাণ করে সংস্কার করলে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজ অব্যাহত রাখতে পারত।’
প্রসঙ্গত, সংস্কারের জন্য আগামী পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে ১৬ মাসের জন্য বন্ধ হতে যাচ্ছে দেশের স্বনামধন্য এ পাঁচতারকা হোটেলটি। সম্পূর্ণ সংস্কারের পর ঢাকার ইতিহাসের সাক্ষী এই হোটেলের সঙ্গে আবার যুক্ত হবে ইন্টারকন্টিনেন্টালের নাম।
হোটেল সূত্র জানায়, হোটেলটিতে বর্তমানে প্রায় ৬৫০ কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। সংস্কারকালে এদের ২৮৮ জন কর্মীকে বঙ্গবন্ধু ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টারে (বিআইসিসি) স্থানান্তর করা হবে। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ‘বলাকা’ রেস্টুরেন্টে ৬০ জনকে স্থানান্তর, ৬০ জনকে ইন্টারকন্টিনেন্টালের কাজে উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য বিদেশে পাঠানো হবে এবং ১০০ জনকে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সংস্কার কাজে নিয়োজিত করা হবে। সংস্কার শেষে সাময়িকভাবে স্থানান্তর হওয়া কর্মীরা ইন্টারকন্টিনেন্টালে নিয়োগ পাবেন।
আগামী ৩০ বছরের জন্য এটির দায়িত্ব পেয়েছে আন্তর্জাতিক হোটেল পরিচালন গ্রুপ ইন্টারকন্টিনেন্টাল। ২০১২ সালের চুক্তি অনুযায়ী সংস্কার শেষে ২০১৪ সালের শুরুতে ইন্টারকন্টিনেন্টাল নামে চালু হওয়ার কথা থাকলেও টি-২০ বিশ্বকাপ ক্রিকেটের কারণে এ কাজ পিছিয়ে যায়।
জানা গেছে, চালুর পর থেকে দীর্ঘদিন দেশের প্রথম পাঁচতারকা এ হোটেলটি পরিচালনার দায়িত্বে ছিল ইন্টারকন্টিনেন্টাল গ্রুপ। ১৯৮৩ সালে ইন্টারকন্টিনেন্টালের পর আসে আরেক চেইন হোটেল শেরাটন। দীর্ঘ ২৭ বছর পরিচালনার পর চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় ২০১১ সালে চলে যায় শেরাটন। তারপর থেকে সরকারের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় রূপসী বাংলা নামে বাংলাদেশ সার্ভিসেস লিমিটেড (বিএসএল) হোটেলটি পরিচালনা করে। ২০১২ সালে বিএসএল ও ইন্টারকন্টিনেন্টালের মধ্যে চুক্তি হয়। এর মধ্য দিয়ে ফের ৩০ বছরের জন্য এ হোটেল পরিচালনার দায়িত্ব পায় ইন্টারকন্টিনেন্টাল।