এক সময় নেশা হিসাবে খেতো গাঁজা। এ গাঁজা তখনকার সময় রিক্সা চালকরা বেশি খেতো এবং যুবকরাও পিছিয়ে ছিল না। এর পর আসলো ভারতীয় ফেনসিডিল। যদিও ভারতে এ ফেনসিডিল কাশিঁর ওষুধ হিসাবে খাওয়া হচ্ছে। আর সেই ফেনসিডিল এ দেশে নেশা হিসাবে খাওয়া হচ্ছে। আগে যারা গাঁজার ব্যবসা করতো পরবর্তীতে তারা ফেনসিডিলের ব্যবসা শুরু করে। ফেনসিডিল খাওয়া যখন সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে তখন প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান শুরু হলে ফেনসিডিল বিক্রেতারা কৌশলে নিরব হয়ে পড়ে। যদিও তখনকার সময় ফেনসিডিল উদ্ধার করা হতো বস্তায় বস্তায়। কিন্তু সেবন করার সংখ্যা কমেনি। ফেনসিডিল বন্ধের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান শুরু হলে ফেসিডিলের পরিবর্তে নতুন নামে শুরু হলো ‘ইয়াবা’। ইয়াবা দেখতে টেবলয়েটের মতো। যা চোখে দৃশ্য মান। ফেনসিডিল সেবনকারীরা এখন সেবন করা শুরু করেন ইয়াবা। এ ইয়াবা বর্তমানে স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, ব্যবসায়ী, ব্যবসায়ীর সন্তান ও মেয়েরা এ মরণ নেশায় লিপ্ত হয়ে পড়ে। যা এমন অবস্থায় দাড়িঁয়েছে উপজেলার প্রতিটি ঘরে ঘরে এর বিস্তার ঢুকে গেছে। এ সর্বনাশা ইয়াবা খেয়ে প্রতিটি সংসারের মধ্যে জলছে তুসের আগুন।
হাজীগঞ্জ উপজেলা প্রত্যন্ত অঞ্চলে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলেই প্রতিটি পাড়া মহল্লার অলিতে, গলিতে উঠতি বয়সি যুবকদের আনা গনা লক্ষ্য করা যায়। প্রতিনিয়ত তাদের মাঝে ইয়াবার আগুন তাড়া করে বেড়াচ্ছে। বর্তমানে হাজীগঞ্জ উপজেলার ছাত্র, যুবক, রাজনীতিক কর্মী এবং ব্যবসায়িসহ এক শ্রেণীর যুবক-যুবতীরা নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে ইয়াবার জ্বরে লিপ্ত হচ্ছে। গোপন তথ্য থেকে জানা যায়, এসব উঠতি বয়সের ছাত্র, যুবক, রাজনীতিক কর্মী এবং ব্যবসায়িসহ যুবতি, তরুণ-তরুনীরা মরণ নেশা ইয়াবা পেয়ে থাকে পাড়া- মহল্লার বড় ভাইদের কাছ থেকে। এখন প্রায় প্রতিটি অঞ্চলে যুব সমাজের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে মরণ আগুন ইয়াবা। এই মরণ নেশার টাকা জোগাতে যুবকরা লিপ্ত হচ্ছে বিভিন্ন অপরাধের সাথে। অতি সহজলভ্য এ মাদক সেবনের অর্থ যোগাতে তারা যে কোন অপরাধ করতে দ্বিধাবোধ করেনা। যে কারণে মরণ আগুনে ঝাপিয়ে পড়ছে যুবকরা। অভিভবকরা তাদেরকে শত বাধ্যবাধকতার মধ্যে রেখেও ফেরাতে পারেনি মরণ নেশা ইয়াবা নামক ভাইরাস থেকে। মহামারি এই ভাইরাস ঠেকাতে সচেতন লোকজন জেলা পুলিশ সুপারের সহযোগিতা কামনা করছেন। যাতে করে যুব সমাজ ইয়াবার আগুন থেকে রেহাই পায়। বর্তমানে বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা ইয়াবা সেবনে অভ্যস্থ হয়ে পড়ছে। প্রতিনিয়ত এ মহামারি বড় আকার ধারন করছে। এক শ্রেণীর নেতারা এসব নেশা দ্রব্য সেবন ও বিক্রির নেপথ্যে সক্রিয়ভাবে কাজ করে আসছে। এছাড়াও ইয়াবা চালানে রিক্সাওয়ালা, অটোবাইক, সিএনজি চালক, বিভিন্ন পাড়া মহল্লার ছোট দোকানিদের মাধ্যমে ইয়াবার কার্যকলাপ চলছে। বিভিন্ন মহলের সাথে যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছে তাদের ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম সিন্ডিকেট চক্র অত্যন্ত শক্তিশালী করতে। যেসকল স্থানে প্রতিনিয়তই ইয়াবা বিক্রি হচ্ছে এসব স্থানে দিনের বেলায় ইয়াবা সেবিদের আনাগোনা কম থাকলেও সন্ধ্যার পর থেকেই দেখা যায় যুবদের আনাগোনা। ইয়াবা সেবন করার জন্য যে কোন উপায়ে এটি পাওয়ার জন্য ইয়াবা সেবিরা পাগল হয়ে উঠে।
হাজীগঞ্জ উপজেলা ও পৌর এলাকার প্রত্যেক গ্রামে গ্রামে মাদক পাওয়া যায়। কম সংখ্যক পরিবারে সদস্য আছে মাদকের ছোবল থেকে রক্ষা পেতে। এর মধ্যে উচচ্বিত্ত পরিবারের সদস্য এবং নিন্ম পরিবারে সদস্যরা এ মাদকের সাথে জড়িত। যারা মরণ নেশা ইয়াবাসহ মদক ব্যবসা করছে তারা থেকে যাচ্ছে অন্তরালে। তাদেরকে চিন্নিত করা হলে মাদকের প্রসার নির্মূল করা যাবে। হাজীগঞ্জ উপজেলা ও পৌরসভার মধ্যে টোরাগড় দক্ষিন পাড়া, উত্তর পাড়া, আলীগঞ্জ, মেইল গেট, এনায়েতপুর, বাজারের হকার্স মার্কেট, ষ্টেশন রোড়, ট্রাক রোড়, পশ্চিম বাজার বিশ্বরোড়, বাস ট্রামিনাল, ধেররা বাজার, বলাখাল বাজার, বাকিলা বাজারসহ আশপাশে এলাকা, রাজারগাঁও বাজার বাংলা বাজার, সেন্দ্রা বাজার, বেলচোঁ বাজার, ধড্ডা বাজার পাতানিশ বাজার, সুহিলপুর বাজার আহম্মদপুর বাজার, দেশগাঁও বাজার, কাশিমপুর বাজারসহ ছোট খাটো বাজার গুলোতেও মাদকের ব্যবসা রয়েছে। ক্রেতা- বিক্রেতারা সুকৌশলে এসব মাদক আনা নেয়া করে থাকে। এ ছাড়াও অনেকে নিজ বাসা বাড়ীতে বসে বসে মাদক বিক্রি করে থাকে বলেও অভিযোগ রয়েছে।