চাঁদপুর প্রতিনিধি ॥ তদ্বিরের চাপে চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মোঃ আমির জাফর গত দু’দিন ধরে সরকার প্রদত্ত মোবাইল নম্বর এবং ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর বন্ধ রেখেছেন। টিএন্ডটির ফোনেও তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। এ অবস্থায় জরুরি প্রয়োজনে কোন নাগরিক শনিবার থেকে পুলিশ সুপারের সাথে কথা বলতে পারছে না।
জানা যায়, শনিবার ছিল চাঁদপুর পুলিশ লাইনসে পুলিশে কনষ্টেবল পদে লোক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষার তারিখ। এতে মোট ১শ’৮১ টি পদের জন্য আবেদন করেছিল তিন হাজারের মত প্রার্থী। এর মধ্যে শনিবার সকালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহনের জন্য নির্বাচিত হয় ৮শ’ জন। এদের লিখিত পরীক্ষাও শনিবারই অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ফলাফল প্রকাশ ও এর পর দু/এক দিনের মধ্যে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। শনিবারের পরীক্ষার বহু আগে খেকেই নিজ নিজ প্রার্থীদের নির্বাচিত করে দেয়ার জন্য পুলিশ সুপারের কাছে তদ্বির এবং চাপ আসতে থাকে। ১শ’ ৮১ টি পদের বিপরীতে মন্ত্রী, এমপি, রাজনৈতিক নেতা, সরকারি উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন পর্যায় থেকে প্রায় এক হাজার প্রার্থীর জন্য লিখিত সুপারিশ সম্বলিত আবেদন আসে। এর বাইরে টেলিফোন তদ্বির এবং চাপ, প্রয়োজনে হয়রাণীমূলক বদলি, জামাত-বিএনপি’র ক্যাডার হিসেবে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে চিহ্নিত করার ভয়, হুমকি ও ধমকি আসতে থাকে। এর পাশাপাশি একটি কনষ্টেবল পদে নিয়োগের জন্য কেউ কেউ ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ডাক হাঁকেন বলে শোনা যায়। এ অবস্থায় বিরক্ত হয়ে শনিবার নিয়োগ পরীক্ষা শুরু হবার আগ থেকে পুলিশ সুপার মোঃ আমির জাফর তার সরকারি এবং ব্যক্তিগত দু’টি নম্বরই বন্ধ করে দেন। তার নম্বরগুলো রোববার রাত ৮ টায় এ রিপোর্ট তৈরি করার আগ পর্যন্ত বন্ধ পাওয়া গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, এছাড়া আর কোন উপায় তো নেই! পদ ১শ’৮১ টা, আর সুপারিশ দেড় হাজার। তার উপর ধমকি-হুমকি, গালাগালি তো রয়েছেই। ফলে বাধ্য হয়ে তিনি ফোন বন্ধ রেখেছেন।