মোট প্রার্থী ১২৩॥ ভোটার এক লক্ষ ১ হাজার ১২২॥ কেন্দ্র ৪৯॥ ভোট কক্ষ ৩৪৫
চাঁদপুর প্রতিনিধি
বিপুল উৎসাহ, উদ্দীপনা ও উৎসব মুখর পরিবেশে চাঁদপুর পৌরসভার নির্বাচন আয়োজনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন। আজ২৯ মার্চ রোববার চাঁদপুর জেলা শহরের বিশেষ শ্রেণীর চাঁদপুর পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনকে ঘিরে সর্বত্র উৎসবের আমেজ বইছে।
দীর্ঘ ৯ বছর পর চাঁদপুর পৌরসভার এ নির্বাচন এখন অনেকটা মর্যাদার লড়াই হিসেবে প্রতিফলিত হয়েছে। মেয়র পদে বর্তমান মেয়র নাছির উদ্দিন আহমেদ লড়ছেন মোবাইল প্রতীক নিয়ে। অপরদিকে পৌরসভা সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ শফিকুর রহমান ভূঁইয়া এ নির্বাচনে অন্যতম মেয়র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন জগ প্রতিক নিয়ে। চাঁদপুর পৌরসভা নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সকল রাজনৈতিক দল এবং চাঁদপুরস্থ সকল পেশাজীবি সংগঠন, ব্যবসায়ী সংগঠন, চিকিৎসকদের সংগঠন, শিক্ষক সংগঠন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ অগণিত সংগঠনের পক্ষ থেকে মেয়র প্রার্থী নাছির উদ্দিন আহমেদকে সমর্থন জানিয়ে তার প্রতীক ‘মোবাইল’ মার্কার পক্ষে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। যা স্বাধীনতাত্তোর চাঁদপুর পৌরসভার ইতিহাসে এই প্রথম বিপুল সংখ্যক পেশাজীবি সংগঠনের পক্ষ থেকে একজন ভালো প্রার্থী হিসেবে নাছির উদ্দিন আহমেদকে সমর্থন জানিয়েছেন। অপর মেয়র প্রার্থী মোঃ শফিকুর রহমান ভূঁইয়া রাজনৈতিকভাবে বিএনপি’র সমর্থিত প্রার্থী হলেও এ নির্বাচনে বিএনপি ও তার অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করায় তিনি বনে গেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী।
শুধু তাই নয় প্রকাশ্যে মোঃ শফিকুর রহমান ভূঁইয়ার পক্ষে প্রচার-প্রচারনায় উল্লেখযোগ্য কোনো নেতা-কর্মীকে দেখা না গেলেও নিরবে ওই সকল নেতা-কর্মী বা সমর্থকরা যে বসে আছে, এমনটি ভাবাও ঠিক নয়। হয়তোবা প্রকাশ্যে তারা সমর্থন বা সহযোগিতা না করলেও গোপনে অথবা নিরবে শফিকুর রহমান ভূঁইয়া’র ভোটের ঝুঁড়িতে ভোট দিতে পারে। আর দেয়াটাই স্বাভাবিক। বিগত ক’দিনের প্রচার-প্রচারণা বা জল্পনা-কল্পনা থেকে এমন আভাসই পাওয়া গেছে।
অন্যদিকে মেয়র প্রার্থী নাছির উদ্দিন আহমেদ সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি হিসেবে ইতিমধ্যে স্বীকৃতি পেয়েছেন। দীর্ঘ ৯ বছরে চাঁদপুর পৌর পরিষদের নেতৃত্ব দেয়ার সুবাদে তিনি কখনো কোনো অন্যায়, দুর্নীতি বা স্বজনপ্রীতি কর্মকান্ডের সাথে জড়িত ছিলেন না। এমনকি, পুরো পৌর পরিষদ তথা পৌরসভাকে দুর্নীতি থেকে মুক্ত করেছেন। দায়-দেনার বোঝা থেকে চাঁদপুর পৌরবাসীকে মুক্ত করে একটি লাভজনক পৌরসভায় রূপান্তরিত করেছেন। উন্নয়নের ক্ষেত্রে অনন্য রেকর্ড গড়ে বাংলাদেশে তথা বর্হিঃবিশ্বে চাঁদপুর পৌরসভাকে একটি মর্যাদার আসনে অলঙ্কৃত করেছেন। ব্যক্তি নাছির উদ্দিন আহমেদ তার সততা, নিষ্ঠা, ও দক্ষতার কারণে চাঁদপুর পৌরবাসী তাকে পুনরায় মেয়র হিসেবে পেতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নেমেছেন।
চাঁদপুর পৌরসভার ভোটাররা অত্যন্ত সচেতন। সে কারণে, বর্তমান মেয়র ও মেয়র প্রার্থী নাছির উদ্দিন আহমেদ পৌরবাসীর ভালোবাসায় পুনরায় মেয়র হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন। চাঁদপুর পৌরসভার ১৫টি ওয়ার্ডে আসন্ন পৌর নির্বাচনে একাধিক প্রার্থী এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছেন। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগ-বিএনপি প্রার্থীদের মধ্যে কোথাও দ্বিমূখী আবার কোথাও ত্রিমূখী লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পুরানো কাউন্সিলরদের পাশাপাশি নতুন কাউন্সিলর প্রার্থীরাও এবার সরব অবস্থায় রয়েছে। কয়েকটি ওয়ার্ডে নবীন ও প্রবীণ কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবার সম্ভাবনা রয়েছে।
আজ চাঁদপুর পৌরসভা নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু, সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন হয় সে জন্যে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশ প্রশাসনসহ নির্বাচনের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তৎপর রয়েছেন। চাঁদপুর পৌরসভার নির্বাচনী এলাকায় র্যাব, বিজিবি, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যরা প্রতিটি ভোট কেন্দ্রসহ পৌর এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে ভোট কেন্দ্র ও তার আশপাশে অবস্থান রয়েছে।
চাঁদপুর পৌরসভা নির্বাচনে দায়িত্বে থাকা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা নির্বাচন অফিসার আতাউর রহমান আমার কণ্ঠকে জানান, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করার লক্ষে নির্বাচন কমিশনের নির্র্দেশনা অনুযায়ী সকল ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসারদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।
এ নির্বাচনে পৌর এলাকায় মোট ১ লাখ ১ হাজার ১২২জন। এর মধ্যে পুরুষ ৫১হাজার ৩শ ৪০জন, মহিলা ভোটার ৪৯হাজার ৭শ’৮২জন। তাই নির্বাচন শেষে শেষ হাসি কে হাসবেন তা আমাদের অপেক্ষা করতে হবে আজ রাত পর্যন্ত।