হাজীগঞ্জ উপজেলার বেলচোঁ-রামচন্দ্রপুর-সমেষপুর প্রায় ৭.৮কি.মি রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন ছাত্র-ছাত্রী, ব্যবসায়ী ও সাধারণ জনগণসহ লক্ষাধিক জনসাধারণ চলাচল করে। উক্ত রাস্তাটি ছিল জনসাধারণের চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপোযোগি। স্বাধীনতার ৪৩ বছরেও রাস্তাটির দৃশ্যমান কোন উন্নয়ন করা হয়নি। কাঁচা রাস্তার কারণে প্রতিনিয়ত কোন না কোন দূর্ঘটনার শিকার হতো সাধারণ জনগণ। বর্ষায় যাতায়াতের একমাত্র বাহন ছিল নৌকা। আওয়ামীলীগ সরকার তথা মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম এমপি হওয়ার কারণেই এ রাস্তাটি প্রায় ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে পাকা করণের জন্য টেন্ডার আহবান করা সম্ভব হয়েছে। এছাড়াও বলাখাল-নাটেহারা ব্রীজ উদ্বোধনের পর থেকে পাল্টে গেছে দক্ষিণ অঞ্চলের চেহারা। এতো টাকার উন্নয়ন কাজ ঐ এলাকার মানুষ আর কখনো দেখেনি।
১৯৯৬সালে মুক্তিযুদ্ধের ১নং সেক্টর কমান্ডার মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম নৌকা প্রতিক নিয়ে সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হন। ১৯৯৬সালে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তিকে উন্নয়নের মডেল হিসেবে রূপান্তরিত করার জন্য একটি মাষ্টার প্লান তৈরী করেন। এই মাষ্টার প্লান অনুযায়ী হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি গ্রাম থেকে গ্রাম শহর থেকে শহর উন্নয়নের কাজ শুরু করেন। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তির কোটি কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করেছেন। এক্ষেত্রে নদীর দক্ষিণ ও উত্তর পাড়ের যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো উন্নত ও সহজ করার জন্য ডাকাতিয়া নদীর উপর ৫টি ব্রীজসহ চোখে পড়ারমতো অসংখ্য উন্নয়ন করেছেন। এ উন্নয়নের ফলে হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি নির্বাচনী এলাকায় নদীর উত্তর ও দক্ষিণ পাড়ের চেহারাই পাল্টে গেছে। সাথে সাথে সাধারণ মানুষের শান্তির লক্ষ্যে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বন্ধ করা এবং সহনশীলতা থাকে সেদিকেও ছিলেন সচেতন। এতে করে হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি এলাকার সাধারণ মানুষের বসবাস ছিল শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ। ২০০৮ সালে মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম আবারও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর পূর্বের মাষ্টার প্লান অনুযায়ী উন্নয়নের বাকী অংশ সমাপ্ত করার জন্য ডাকাতিয়া নদীর উপর আরো ২টি ব্রীজসহ অসংখ্য উন্নয়ন কাজ শুরু করেন। হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি নির্বাচনী এলাকার এমন কোন পাড়া-মহল্লা নেই যেখানে মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীরউত্তমের উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। বিশেষ করে হাজীগঞ্জের নদীর দক্ষিণাঞ্চলে যে পরিমান উন্নয়ন হয়েছে তা বাংলাদেশের ইতিহাসে আর হয়নি। তারই একটি উদাহরণ সম্প্রতি ৬নং বড়কুল ও ৭নং বড়কুল ইউনিয়নের বেলচোঁ বাজার থেকে শুরু করে রামচন্দ্রপুর বাজার হয়ে সমেষপুর নদীর ঘাট পর্যন্ত দীর্ঘ ৭.৮কি.মি রাস্তার উন্নয়ন ও পাকা করণের জন্য ডিসেম্বর ২০১৪ সালের শেষের দিকে টেন্ডার আহবান করা হয়। যার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে এখন অনুমোদনের অপেক্ষায়। এ রাস্তার টেন্ডারের খবর উল্লেখিত এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে জনসাধারণে মাঝে আনন্দের বন্যা বইতে শুরু করে।
গত ২৬ ও ২৭ ফেব্র“য়ারী আমার কন্ঠ এ প্রতিনিধি ঐ এলাকা পরিদর্শন করে সাধারণ মানুষের মতামত জানতে চাইলে তারা বলেন, আমরা কখনো কল্পনা করিনি মেজর অবঃ রফিকুল ইসলাম ১৫ কোটি টাকার নাটেহারা-বলাখাল ব্রীজের পর এতো তাড়াতাড়ি ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে এ রাস্তা পাকা করণের উদ্যেগ নিবেন। তারা আরো বলেন, এ রাস্তা নিয়ে আমাদের দূর্ভোগের সীমা ছিলনা স্বাধীনতার দীর্ঘ ৪৩ বছরেও। কারণ স্বাধীনতার পরে বিএনপি সরকার তিন বার ক্ষমতায় আসলেও আমাদের অঞ্চলে কোন উন্নন করেনি। শুধুমাত্র মুক্তিযুদ্ধের ১নং সেক্টর কমান্ডার মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীরউত্তমের পক্ষ্যেই সম্ভব হয়েছে রাস্তাঘাট তথা যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন সহ সকল ধরণের উন্নয়ন করা। আমরা চাই মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম যত দিন বেঁচে থাকবেন ততদিন আমরা দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ তাকে ভোট দিয়ে এম.পি নির্বাচিত করবো। আমরা আশা করি আমাদের এলাকার উন্নয়নসহ অতিতের ন্যায় ভবিষ্যতেও তিনি আমাদের পাশে থাকবেন।
৮০ বছরের বৃদ্ধ মোজাম্মেল হক বলেন, আমার জীবদ্দশায় এই রাস্তাটি পাকাকরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে যেনে আমি অত্যান্ত আনন্দিত। আমি দোয়া করি এম.পি স্যার যেন সুস্থভাবে বেঁচে থাকেন এবং আমাদের এলাকায় আরো বেশি উন্নয়ন করতে পারেন।
এ ব্যাপারে ৭নং বড়কুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহিউদ্দীনের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, যার কোন সম্পদ নেই তিনি যদি গুপ্তধন পান সেই লোকটি যেভাবে আনন্দিত হন, ঠিক একই ভাবে আমরাও খুশি ও আনন্দিত। আমরা এ অঞ্চলের মানুষ এম.পি মহোদয়ের কাছে চির কৃতজ্ঞ এবং স্যারকে ৭নং ইউনিয়নবাসীর পক্ষ থেকে আন্তরিক অভিনন্দন। তিনি আরো বলেন, বিএনপি সরকারের আমলে এ অঞ্চলে উন্নয়ন না হলেও আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে এবং আমাদের এমপি স্যার আন্তরিক প্রচেষ্টায় এ এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন হচ্ছে। এ উন্নয়নের ফলে এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়াত, ব্যবসায়ী ও অসুস্থ্য রোগীদের দ্রুত চিকিৎসার পথ সুগম হবে। যা এলাকার মানুষ কখনো ভুলবে না। মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম যেন সুস্থভাবে আমাদের মাঝে বেঁচে থাকেন এই দোয়া কামনা করে আমাদের এলাকার উন্নয়নে সবসময় সহযোগিতা করবেন এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
বেলচোঁ-রামচন্দ্রপুর-সমেষপুর রাস্তা পাকা করণের টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পর্কে হাজীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আশরাফ জামিল বলেন, আমাদের এম.পি স্যারের আন্তরিক প্রচেষ্টার কারণে দীর্ঘ ৭.৮কি.মি রাস্তার উন্নয়ন ও পাকা করনে ১০কোটি ৭৬ লক্ষ টাকার টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। স্যার আন্তরিকভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, যত দ্রুত সম্ভব রাস্তার কাজ শুরু করার। তিনি আরো বলেন, স্যারের সহযোগিতা নিয়ে আশা করি আগামী এক মাসের মধ্যে সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে রাস্তার কাজ শুরু করতে পারবো।