চৌধুরী ইয়াসিন ইকরাম ঃ টানা অবরোধ আর হরতালে চাঁদপুর-শরিয়তপুর রুটে ফেরী চলাচলে মারাত্মক প্রভাব পড়েছে। চাঁদপুরের হরিনা ও শরিয়তপুরের নরসিংহপুর ফেরি সেবা নিতে ঘাটে আসছে না যানবাহন। তাই ফেরি ঘাট এখন খেলার মাঠের মতো খাঁ খাঁ করছে। প্রতিদিন এ নৌ পথে ২শতাধিক গাড়ি পারাপর হলেও তা বর্তমানে কমে ২০-৩০টি গাড়ি পারাপার হচ্ছে। বছরের অন্যান্য সময়ে ফেরি সার্ভিসে প্রতিদিন ১২ট্রিপের পরিবর্তে এখন চলছে মাত্র দুইটি ট্রিপ। হরতাল অবরোধের জানুয়ারী মাসে এ ঘাটের রাজস্ব আয় কমেছে অন্তত ৫ কোটি টাকা।
বুধবার বিকেলে সরেজমিনে হরিনা ফেরিঘাট ঘুরে দেখা যায়, এক দেড় ঘন্টা পর পর একটি ট্রাক আসছে মাঠে। যা পুরো শুণ্য মাঠে দেখাই যায় না। এছাড়া ঘাটে কামিনী ফেরি অবস্থান করছে। যানবাহন না থাকায় তা ছেড়ে যেতে পারছে না। এদিকে ঘাট সম্পৃক্ত কর্মক্ষম মানুষগুলো অলস সময় কাটাচ্ছেন। অনেকেই বললেছন, ভাই কাজের মানুষ এমনে বইসা থাকতে পারে? আর ভালো লাগে না। কবে বন্ধ হইবো এ হরতাল অবরোধ?
গাড়ি চালক দেলোয়ার হোসেন, রুবেল মিয়া ও সিরাজুল ইসলাম জানান, ঘাটে যে দুই একটা যানবাহন আসছে, তাও অনেক আতঙ্কের মধ্য দিয়ে আসা হচ্ছে। চাঁদপুর লক্ষ্মিপুর সড়ক অনেক ঝুকি পূর্ণ তাই এ ফেরি ঘাটে গাড়ি আসছে অনেক কম। কোনো ড্রাইভার-ই ঝুঁকি নিয়ে এ ঘাটে আসতে চায় না।
হরিনা ফেরি ঘাট ইজারাদার মোজাম্মেল হোসেন টিটু জানান, বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ থেকে এক বছরের জন্য ৪১ লাখ ৪১ হাজার ৪২ টাকায় ঘাট ইজারা নিয়েছি। অন্যান্য সময় ফেরি পাওয়া যেত না। গাড়ি সিরিয়াল ধরে বসে থাকতো। অথচ এখন ফেরি ঘাটে বসে থাকে যানবাহন নেই। এ বছর অনেক লোকসানের সঙ্কায় সরকারি সহায়তা চেয়েছেন এ ঘাট ইজারাদার।
হারিনা ফেরিঘাটের ম্যানেজার এম এমরান হোসেন জানান, এ ঘাটে ৩টি ফেরি প্রতিদিন ১২-১৩টি ট্রিপ দিতো। যার মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব আয় হতো প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা। অথচ হরতাল অবরোধে আয় দাঁিড়য়েছে মাত্র ৪০-৫০ লাখ টাকায়।
বন্দরনগরী চট্টগ্রাম থেকে খুলনাসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের পণ্যবাহী ও যাত্রীবাহী যানবাহন চলাচলে নিরাপদ এ ফেরি ঘাট। এ ঘাটে সরকারের রাজস্ব আয়ও হয় অন্যান্য ঘাটের চেয়ে অনেক বেশি হয়। তাই দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে হরতাল অবরোধ প্রত্যাহার করার দাবি ঘাট সম্পৃক্ত সবার।