কুচয়া প্রতিনিধি ॥
কচুয়ায় অসহায় কয়েকটি পরিবারের সদস্যদেরকে বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধি ভাতা, ঘর উত্তোলন, মেয়ের বিয়ে ও গরু দেয়ার নাম করে প্রায় ১ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার হারিচাইল গ্রামের প্রতারক মোঃ দুলাল কবিরাজ (৪০) এর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীরা বর্তমানে প্রতারক দুলাল মিয়ার বাড়ী আর নিজ বাড়ীতে যাওয়া আসার মধ্যে দিশেহারা হয়ে সময় কাটাচ্ছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার হারিচাইল গ্রামের মোঃ আব্দুল মালেকের পুত্র দুলাল কবিরাজ প্রায় বছর খানিক পূর্বে একই উপজেলার উজানী দক্ষিণ পাড়া আলী আজগর মিস্ত্রির বাড়ীতে কবিরাজি করতে যায়। ওই বাড়ীর নিরীহ লোকদের কারো বয়স্কভাতা, কারো বিধবা ভাতা, কারো মেয়ের বিয়ে, কারো ঘর উত্তোলন, কাউকে গরু ও প্রতিবন্ধী ভাতা দেয়ার নাম করে ১২-১৩ জন অসহায় লোককে ফুসলিয়ে প্রতিজনের কাছ থেকে ৫-১০ হাজার টাকা করে কৌশলে হাতিয়ে নেয়।
ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো হচ্ছে- উজানী গ্রামের মৃত: দুধ মিয়ার পুত্র- আঃ মমিন (৭৫), তার স্ত্রী শাহানারা বেগম (৪৮), মৃত মাফিকুল ইসলামের স্ত্রী-মনোয়ারা বেগম, মোখলেছুর রহমানের স্ত্রী- হনুফা বেগম (৫৫), লিয়াকত আলীর স্ত্রী- বিউটি বেগম (৩০), ইউসুফ মিয়ার স্ত্রী- ফেরদৌসী বেগম (২৫), আবুল বাসারের স্ত্রী-জাহানারা বেগম (৪৫), আঃ মমিনের প্রতিবন্ধী ছেলে- বাবুল (২৫), আঃ মমিনের মেয়ে- কোহিনুর আক্তার (১৮), আন্দিরপাড় গ্রামের নজরুল ইসলামের স্ত্রী- আফরোজা বেগম (৫০), চান্দিনার জোয়াগ গ্রামের মৃত: আব্দুল আউয়ালের স্ত্রী-আবেদা খাতুন (৫৫), একই গ্রামের আমান উল্লার স্ত্রী- নাসিমা বেগম (২৭), কৈলাইন গ্রামের মৃত: নুরুল ইসলামের স্ত্রী- জোসনা বেগম (৪০)। এরকম ১৩জন ভুক্তভোগী ব্যক্তি দুলাল কবিরাজের প্রতারণা শিকার হয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুর বেড়াচ্ছেন। প্রতারণার শিকার শাহানারা বেগম জানান, দুলাল কবিরাজ নিজেকে উচ্চ পদস্থ জনৈক কর্মকর্তার কাছের লোক পরিচয় দিয়ে ওই ব্যক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন জনের মেয়ের বিয়েতে সহায়তা, চিকিৎসা ভাতা ও ঘর উত্তোলন করে দিবেন বলে আমাদের কাছ থেকে প্রায় এক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। পরবর্তীতে আমাদের নামে ব্যাংকে ভাতা এসেছে স্বাক্ষর দিতে হবে বলে প্রত্যেককে রহিমানগর জনতা ও কৃষি ব্যাংকে কয়েক দফা আনা নেয়া করে বলেও ভুক্তভোগী পরিবারগুলো জানান।
এদিকে দুলাল কবিরাজের প্রতারণার শিকার হয়ে দীর্ঘদিন কোন সহায়তা না পেয়ে ১৩ সদস্যের কাছ থেকে নেয়া অর্থ ফেরত চাইতে গেলে গত শুক্রবার দুলাল কবিরাজের স্ত্রী তাদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে বাড়ী থেকে জোড় পূর্বক বের করে দেয়। পরে ভুক্তভোগী ওই লোকজন নিরুপায় হয়ে হাসিমপুর গ্রামের অধিবাসী উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মোঃ শাহাদাত মিয়ার কাছে দারস্থ হয়ে দুলাল কবিরাজের বিরুদ্ধে নালিশ করেন। এক পর্যায়ে শাহাদাত মিয়ার নেতৃতে দুলাল কবিরাজকে এসব বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে প্রায় লক্ষাধিক টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করে ২০ হাজার টাকা নিয়েছে বলে দুলাল কবিরাজ দাবি করেন। এদিকে এনিয়ে সর্বশেষ গত বুধবার সকালে মিঞার বাজারে শালিশ বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও প্রতারক দুলাল কবিরাজ শালিস বৈঠকে উপস্থিত না হয়ে গা ঢাকা দেয়।
এদিকে দুলাল কবিরাজের হাতে প্রতারণার শিকার হওয়া অসহায় দরিদ্র পরিবারগুলো তাদের দেওয়া অর্থ ফেরত পেতে স্থানীয় প্রশাসন হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। এঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোর পক্ষ থেকে কচুয়া থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে তারা জানায়।
কচুয়াঃ দুলাল কবিরাজ কর্তৃক প্রতারণার শিকার কয়েকজন ব্যক্তি।